বসিরহাট: এক সময়ে ক্যানিং পূর্বের বিধায়ক শওকত মোল্লাকে ভাঙড়ের ‘অবজার্ভার’ হিসাবে মানতে নারাজ ছিলেন তিনি। এমনকি ডিএ-এর দাবিতে যাঁরা আন্দোলন করছিলেন, তাঁদের প্রচ্ছন্ন হুমকি দিয়েছিলেন, ভাঙড়ের সেই দাপুটে তৃণমূল নেতা কাইজার আহমেদকে এবার পঞ্চায়েত নির্বাচনের টিকিট দিল না দল। ভাঙড় ১ ও ২ নম্বর ব্লকের বেশিরভাগ পঞ্চায়েত সমিতি ও গ্রাম সংসদের দখল নিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সিংহভাগ আসনই জিতে গিয়েছে তারা। যদিও দলের দাপুটে নেতা এবং দীর্ঘদিনের লড়াকু নেতারা টিকিট পাননি বলে খবর। আর তাতেই ক্ষোভ তৈরি হয়েছে দলের অন্দরে। ভাঙড় ১ নম্বর ব্লকের দাপুটে নেতা কাইজার আহমেদ এবার তৃণমূলের টিকিট পেলেন না। যদিও তাঁর স্ত্রী পঞ্চায়েতের প্রার্থী হয়েছেন। এবার পঞ্চায়েত নির্বাচনে শুধু কাইজার নন ভাঙড় ১,২ নম্বর ব্লকের বহু বর্ষীয়ান দাপুটে নেতারা দলের টিকিট না পেয়ে হতাশ।
ভাঙড়ের দাপুটে তৃণমূল নেতা কাইজার আহমেদের আগে ভাঙড় ১ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির ভূমির কর্মাধ্যক্ষ ছিলেন। তাঁর স্ত্রী নাসরিন পারভিন ছিলেন জেলা পরিষদের সদস্য। এবারও কাইজার পঞ্চায়েত সমিতির আসনে মনোনয়ন জমা দিয়েছিলেন। কিন্তু দল তাঁকে দলীয় প্রতীক না দেওয়ায় এবং দলের চাপে শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেন। অন্যদিকে তাঁর স্ত্রী নাসরিন পারভিনকে জেলা পরিষদ থেকে সরিয়ে নিয়ে এসে জাগুলগাছি পঞ্চায়েতের একটি আসনে প্রার্থী করা হয়। কাইজার দলের টিকিট না পাওয়ায় হতাশ তাঁর অনুগামীরা।
তৃণমূল সূত্রের খবর, কাইজার আহমেদের বিভিন্ন কাজকর্মে ক্ষুব্ধ দলের শীর্ষ নেতৃত্ব। গত বিধানসভা নির্বাচনের আগে দলের ব্লক যুব সভাপতি বাদল মোল্লার উপর হামলা, বোমা ছোড়ার অভিযোগ উঠেছিল। গত বিধানসভা নির্বাচনে ভাঙড় কেন্দ্র থেকে টিকিটের দাবিদার ছিলেন কাইজার। কিন্তু দল তাঁকে টিকিট না দেওয়ায়, তিনি আইএসএফের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন বলে দলেরই একাংশের অভিযোগ।
স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশের অভিযোগ, বিধানসভা নির্বাচনের আগে কাইজার এক আইএসএফ নেতাকে ফোন করে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে টিকিট চেয়েছিলেন। সম্প্রতি সেই অডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক তৃণমূল নেতা বলেন, দলের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করায় দল এবার তাঁকে টিকিট দেয়নি।
এ বিষয়ে কাইজার আহমেদের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।