লন্ডন: বয়স মাত্র ১২ বছর। আর এই অল্প বয়সেই বুদ্ধিতে সে টক্কর দিচ্ছে স্টিফেন হকিং, অ্যালবার্ট আইনস্টাইনদের মতো বিশ্বখ্যাত বিজ্ঞানীদের। ভারতীয় বংশোদ্ভূত স্কুলছাত্রী অন্বিতা পাটিল থাকে ইংল্যান্ডের ম্যানচেস্টারে। তার যখন ১১ বছর বয়স, সেই সময় সে একটি আইকিউ পরীক্ষা দিয়েছিলেন। ফল বের হতে দেখা গিয়েছে, সে ১৬২ নম্বর পেয়েছে! অন্বিতার আইকিউ স্টিফেন হকিং এবং অ্যালবার্ট আইনস্টাইনের থেকেও বেশি! বলাই বাহুল্য মেয়েকে নিয়ে গর্বের শেষ নেই তার বাবা-মায়ের। তবে, প্রথমে মেয়ের আইকিউ পরীক্ষার ফল জানতে পেরে তাঁরাও বিস্মিত হয়ে গিয়েছিলেন। তাঁরা বলেছেন, “যখন আমরা প্রথম এটা জানতে পেরেছিলাম, ভেবেছিলাম নিশ্চয়ই আমাদের সঙ্গে রসিকতা করা হচ্ছে।’
আইকিউ পরিমাপের জন্য বিশ্বের সবথেকে বড় এবং পুরোনো সংস্থা হল ইংল্যান্ডের মেনসা ইন্টারন্যাশনাল হাই আইকিউ সোশ্যাইটি। বিশেষ পরীক্ষা দিয়ে তবেই এই সোশ্যাইটির সদস্য হওয়া যায়। পরীক্ষায় ৯৮ শতাংশের বেশি নম্বর পেতে হয়। অন্বিতা ১০০ শতাংশ নম্বর পেয়েছে। পিছনে ফেলেছে আলবার্ট আইনস্টাইন এবং স্টিফেন হকিংককে। এই দুই বিশ্বখ্যাত বিজ্ঞানীর দুজনেরই আইকিউ প্রায় ১৬০ ছিল বলে মনে করা হয়। কাজেই অন্বিতার আইকিউ তাঁদের থেকে আরও ২ বেশি। তাঁর বাবা-মা বলেছেন, “আমরা আশা করেছিলাম যে ও মেনসার সদস্যপদ পাবে। কিন্তু যখন আমরা ইমেলে জানতে পেরেছিলাম যে ও পরীক্ষায় সর্বোচ্চ নম্বর পেয়েছে, তখন আমরা বিস্ময়ে হতবাক হয়ে গিয়েছিলাম। অন্বিতার এই কৃতিত্বে আমরা অত্যন্ত গর্বিত।”
অন্বিতার পরিবারে অবশ্য বরাবরই পড়াশোনাকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। তাঁর বাবা ইংল্যান্ডের জাতীয় স্বাস্থ্য পরিষেবার একজন চিকিৎসক। মা একজন গণিতবিদ। এহেন বাবা-মা দৈনন্দিন জীবনে অন্বিতার স্বাভাবিক বুদ্ধিমত্তা দেখে প্রায়শই অবাক হয়ে থাকেন। গণিতবিদ মা অনু, একেবারে ছোট থেকে অন্বিতাকে একেবারে ছোট থেকে অঙ্কের বিভিন্ন সমস্যা দিতেন। মা মেয়ে একসঙ্গে বসে সেইসব সমস্যার সমাধান করার চেষ্টা করতেন। শীঘ্রই অনু বুঝতে পেরেছিলেন যে তাঁর মেয়ের এই বিষয়ে বিশেষ দক্ষতা আছে।
অন্বিতার বাবা বলেছেন, “প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পর থেকেই, অন্বিতা গাণিতিক সমস্যা সমাধানের এমন কিছু উপায় দেখাতে শুরু করেছিল, যা আমার স্ত্রীও জানেন না।” আর অনু বলেছেন, “আমরা একসঙ্গে অঙ্কের বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের সমাধান করতাম। কিন্তু, মাঝে মাঝে আমি উত্তর পেতাম না এবং অন্বিতা সেগুলো করে দিত। ও সম্পূর্ণ ভিন্নভাবে চিন্তা করে। এই জিনিসগুলি স্কুলে শেখানো হয় না।” তার বাবা-মায়ের আশা, ভবিষ্যতে তাঁর অনন্য ক্ষমতা দিয়ে বিভিন্ন “সামাজিক চ্যালেঞ্জ” সমাধান করতে সক্ষম হবে তাঁদের মেয়ে।