Bakarkhani: ফ্রান্সের বাজারে বাঙালির রুটি-মাখন! পেল হেরিটেজ তকমাও

Bakarkhani: সম্প্রতি একটি ফরাসী ম্যাগাজিন সেই বাখরখানিকে গ্লোবাল হেরিটেজ কুইজিনের স্বীকৃতি দিয়েছে। আর কলকাতার কুইজিন হিসাবেই তা হেরিটেড ফুডের অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।

Bakarkhani: ফ্রান্সের বাজারে বাঙালির রুটি-মাখন! পেল হেরিটেজ তকমাও
Image Credit source: Ahmed Salahuddin/NurPhoto via Getty Images
Follow Us:
| Updated on: Dec 24, 2024 | 10:51 PM

নয়াদিল্লি: বড়দিনের আগেই জোড়া সুখবর। প্রথমটা চায়ে, দ্বিতীয়টা রুটি-মাখনের কম্বিনেশনে, মানে বাখরখানিতে। বাঙালিরা বেশিরভাগই তো চায়ের ভক্ত। আমেরিকার জনস্বাস্থ্য বিষয়ক সংস্থা এফডিএ সূত্রে জানা যাচ্ছে, চায়ে ক্ষতির কোনও সম্ভাবনাই নেই। চা খুবই স্বাস্থ্যকর পানীয়। এর অনেক গুণ। নিয়মিত চা খেলে ভাল হজম হয়। ক্লান্তি কাটে। শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হয়।

এই এফডিএ যেমন তেমন সংস্থা নয়। আমেরিকার জনস্বাস্থ্য বিষয়ক নিয়ন্ত্রণ সংস্থা। এফডিআই অনুমোদন দিলে তবেই আমেরিকায় ওষুধ ও ভ্যাকসিন বিক্রি করা যায়। দুনিয়ায় একশোর বেশি দেশ এফডিআই-র গাইডলাইন মেনে চলে। বেশ কিছুদিন ধরে চা নিয়ে বিভিন্ন রকম বিভ্রান্তিকর তথ্য সামনে আসছিল। বিভিন্ন জার্নালে চায়ের ক্ষতিকারক দিক নিয়ে বেশ কয়েকটি রিপোর্ট প্রকাশিত হয়। ফর্মাল সায়েন্স পত্রিকায় মার্চ এডিশনে দাবি করা হয়, চায়ে এমন দুটি উপাদান রয়েছে, যা ক্যান্সারের কারণ হতে পারে। এমনকি চা পাতা খুব পুরনো হলে তাতে বেশি ক্ষতির সম্ভাবনা বলেও দাবি করা হয়েছিল। আরেকটি সায়েন্স জার্নালে অভিযোগ করা হয়েছিল, বেশি চা পেলে শরীরে হরমোনের তারতম্য হতে পারে। তাতে একাধিক শারীরিক সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা।

আমাদের দেশেই খোদ টি-বোর্ড চায়ের গুণমান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। ভারতে বেশিরভাগ চায়ে ক্ষতিকারক রাসায়নিক মিলেছে বলে রিপোর্টে দাবি করা হয়। দেশের অনেক সংস্থাই যে নির্ধারিত মাপকাঠি মেনে চায়ের প্যাকেজিং করছে না, তাও উঠে এসেছিল টি-বোর্ডের রিপোর্ট।

এফডিআইয়ের আশ্বাসের পর আর চিন্তার কোনও কারণ নেই। খালি চায়ের গুণমান ঠিক থাকলেই, নিশ্চিন্তে চা খাওয়া যাবে। অন্য দিকে, মাখন-রুটি মানে বাখরখানি। পাতলা, গোলাকার রুটি, বা লুচির মতো। চাখলে পাঁউরুটির মতো মনে হতে পারে। নোনতা, মিস্টি যেমন চান, তেমন খান। এটাই বাখরখানির ইউএসপি। মাংসের ঝোল বা চা – যাতেই ডুবিয়ে খান, মুখে মিলিয়ে যাবে। মোমিনপুরে জার্মান বেকারি, খিদিরপুরে আলি’স বেকারির মতো কয়েকটা হাতে গোণা জায়গায় সাতসকালে গেলে বাখরখনি চাখতে পারবেন। বেলা হতেই মাল শেষ।

বাখরখনি নামটা এল কোথা থেকে? নবাব মুর্শিদাকুলি খাঁয়ের সঙ্গে কলকাতায় এসে চট্টগ্রাম বন্দরের নিরাপত্তার দায়িত্ব পেয়েছিলেন আগা বাকর খান। আর কলকাতায় এসেই তখনকার নামী নতর্কী খনির প্রেমে পড়েন। বাংলার অনেক হুজ হু লোকজনই তখন খনির গুণমুগ্ধ।

এর মধ্যে একজন ছিলেন প্রভাবশালী জমিদারি আজমির খানের ছেলে জইনুল। দুজনের মধ্যে লড়াই হয়। একবার নয়, দুবার। দ্বিতীয় লড়াইয়ের সময় হঠাত্‍ করেই খনির উপর হামলা করে জইনুল। হামলায় খনির মৃত্যু হয়। খনির স্মৃতিতে একটি সৌধ নির্মাণ করেছিলেন বাকর সাহেব। আর তাঁদের প্রেমকে অমর করে রাখতেই নাকি তৈরি করেছিলেন নতুন একটা পদ – বাখরখানির উপর লখনউয়ের দাবিও কম জোরালো নয়।

সম্প্রতি একটি ফরাসী ম্যাগাজিন সেই বাখরখানিকে গ্লোবাল হেরিটেজ কুইজিনের স্বীকৃতি দিয়েছে। আর কলকাতার কুইজিন হিসাবেই তা হেরিটেড ফুডের অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।