ইসলামাবাদ: ঘরের বেডরুম। ঘরের এক কোনায় একটি চেয়ার। সেখানে চুপচাপ বসে রয়েছেন এক প্রৌঢ়। তার সামনে খাটের উপর চলছে এক নির্মম পরিণতি। প্রৌঢ় আব্দুল সাত্তার চোখের সামনে তাঁর মেয়েকে শ্বাসরোধ করে খুন করার অভিযোগ ছেলের বিরুদ্ধে। মেয়েটির অপর এক ভাই গোটা ঘটনাটি ক্যামেরাবন্দি করল। সব চলল বাবার চোখের সামনেই। কিন্তু বাবা নিরুত্তাপ। শান্ত, শীতল মাথায় চোখের সামনে বসে বসে দেখলেন নিজের বছর বাইশের মেয়ের মৃত্যু। সম্প্রতি এমনই এক ঘটনা ঘটেছে পাকিস্তানের পঞ্জাব প্রদেশের তোবা তেক সিং শহরে। মৃত যুবতীর নাম মারিয়া বিবি।
ওই পাকিস্তানি যুবতীর দুই ভাই – ফয়জল ও শাহবাজ। জানা যাচ্ছে, বোনকে খাটের মধ্যে শ্বাসরোধ করে যখন খুন করছিল ফয়জল, তখন গোটা ঘটনাটি ভিডিয়ো করেছিল শাহবাজ। গত ১৭ মার্চ পাকিস্তানের এক ঘরের মধ্যে নিজের বাবার সামনেই এভাবে নির্মমভাবে ভাইদের খুন হন মারিয়া। সেই ভিডিয়ো ইতিমধ্যেই ভাইরাল হয়েছে। তাতে একটা সময়ে শাহবাজকে বলতে শোনা যাচ্ছে, ‘বাবা, এবার ভাইকে থামতে বলো।’ কিন্তু সে কথা যেন কানেই গেল না প্রৌঢ় সাত্তারের। আর খাটের মধ্যে পড়ে থাকা নিথর দেহটাকে তখনও প্রায় দু মিনিটেরও বেশি সময় ধরে নাক-মুখে চেপে ধরে থাকল ফয়জল। তারপর যখন ফয়জল থামল, তখন প্রৌঢ় বাবা তাকে জল এগিয়ে দিলেন খাওয়ার জন্য।
ঘটনার পর গত ২৪ মার্চ পুলিশের মনে প্রথম সন্দেহ জাগে। পুলিশ বুঝতে পারে, এটি কোনও স্বাভাবিক মৃত্যু নয়। সেই মতো একটি স্বতোঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। সাত্তার ও ফয়জলকে সেদিনই গ্রেফতার করা হয় এবং পরের দিন গ্রেফতার হয় শাহবাজ। ওই ভিডিয়োটিতে শাহবাজের স্ত্রীকেও দেখা যাচ্ছিল, তাঁকেও গ্রেফতার করেছে পুলিশ। প্রাথমিকভাবে পুলিশের সন্দেহ, পরিবারের সম্মান রক্ষার জন্য খুন (অনার কিলিং) করা হয়েছে মারিয়াকে।