Israel’s Ramon prison: ইজরায়েলি কারাগার থেকে বন্দির শুক্রাণু পাচারের চেষ্টা, ধরা পড়ে গেলেন প্যালেস্তাইনি নাগরিক
sperm smuggling from Israel’s prison: কারাগার থেকে বন্দির শুক্রাণু, বাইরে পাচারের ঘটনাটি বিস্ময়কর মনে হতে পারে। তবে, ইজরায়েলের কারাগারে বন্দি প্যালেস্তাইনি নাগরিকদের কাছে এটা কোনও নতুন বিষয় নয়।
তেল আবিব: দক্ষিণ ইজরায়েলের রামন কারাগারে বন্দি এক প্যালেস্তাইনি নাগরিকের শুক্রাণু পাচার করতে গিয়ে ধরা পড়লেন আরেক প্যালেস্তাইনি নাগরিক। ইজরায়েলের প্রিজন সার্ভিস জানিয়েছে, ঘটনাটি ঘটেছে গত মঙ্গলবার (২৭ জুন)। ওই ব্যক্তি রামন কারাগারের দেওয়ালের বাইরে এক সংশোধনাগারে থাকেন। একটি বোতলে কারাবন্দি প্যালেস্তাইনি নাগরিকের শুক্রাণু ভরে গোপনে তা জেলের বাইরে পাচার করার সময়, ইজরায়েলি রক্ষীদের হাতে তিনি ধরা পড়ে যান। যে বন্দির শুক্রাণু পাচার করা হচ্ছিল, তিনি রামন কারাগারের এক নিভৃত কক্ষে বন্দি আছেন। পাচারকারীকে গ্রেফতারের পর, রামন কারাগারেই বন্দি করা হয়েছে। কারাগার থেকে বন্দির শুক্রাণু, বাইরে পাচারের ঘটনাটি বিস্ময়কর মনে হতে পারে। তবে, ইজরায়েলের কারাগারে বন্দি প্যালেস্তাইনি নাগরিকদের কাছে এটা কোনও নতুন বিষয় নয়।
আসলে, ইজরায়েলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে প্রতি বছর বহু প্যালেস্তাইনি নাগরিক ইজরায়েলি রক্ষীদের হাতে বন্দি হন। মানবাধিকার সংগঠনগুলির মতে, তাঁদের অনেককেই বছরের পর বছর বিনা বিচারে কারাগারে বন্দি রাখা হয়। অথবা, দীর্ঘমেয়াদি কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এই অবস্থায়, কারাবন্দিদের শুক্রাণু জেলের বাইরে পাচার করা এবং সেই শুক্রাণু থেকে বন্দিদের সন্তানের জন্মের বিষয়টি, প্যালেস্তাইনিদের কাছে অত্যন্ত সংবেদনশীল বিষয়। সূত্রের খবর, গত কয়েক বছরে ইজরায়েলের কারাগার থেকে প্যালেস্তাইনি বন্দিদের শুক্রাণু পাচারের মাধ্যমে শতাধিক মহিলা গর্ভধারণ করেছেন এবং সন্তানের জন্ম দিয়েছেন। কারাবন্দি প্যালেস্তাইনি নাগরিকদের শুক্রাণু জেলের বাইরে পাচার করা হয় এবং তাঁদের স্ত্রীরা ‘ইন ভিট্রো ফার্টিলাইজেশন’ বা আইভিএফ পদ্ধতিতে গর্ভধারণ করেন। অর্থাৎ, ওই শুক্রাণু দিয়ে কৃত্রিম উপায়ে তাঁদের ডিম্বাণুর নিষেক ঘটানো হয়।
এই ভাবে গর্ভধারণের মূল্য নেহাত কম নয়। কমপক্ষে ১০,০০০ মার্কিন ডলার, অর্থাৎ, ভারতীয় মুদ্রায় ৮ লক্ষ ২০ হাজার টাকারও বেশি খরচ হয়। সূত্রের খবর, কোনও বন্দি দীর্ঘমেয়াদী সাজা পেলে, তাঁর স্ত্রীকে আইভিএফ পরিষেবা প্রদান করার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দেয় প্যালেস্তাইনি আইভিএফ ক্লিনিকগুলি। প্যালেস্তাইনি ধর্মগুরুরা এই বিষয়ে ফতোয়া জারি করেছেন। বিভিন্ন সংস্থার প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১২ সালে প্রথম ইজরায়েলি কারাগারে বন্দি এক প্যালেস্তাইনি ব্যক্তির শুক্রাণু জেলের বাইরে পাচারের মাধ্যমে তাঁর স্ত্রী গর্ভধারণ করেছিলেন এবং সন্তানের জন্ম দিয়েছিলেন। তারপর থেকে এই ঘটনা বারংবার ঘটেছে। ইজরায়েলি কর্তৃপক্ষও তা জানে। তবে তাদের মতে, এইভাবে যে শিশুরা জন্মায়, তারা আসলে অবৈধ সন্তান। ইজরায়েলের দাবি, জেল থেকে আইভিএফ ক্লিনিক পর্যন্ত নিয়ে যেতে যেতে শুক্রাণুগুলি আর কার্যকর থাকে না। তার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা লাগে। এমনি একটি বোতলে ভরে নিয়ে গেলে কোনও কাজ হবে না। ইজরায়েলি কর্তৃপক্ষের দাবি, যে শিশুরা এইভাবে জন্মগ্রহণ করেছে বলে দাবি করা হয়, তারা আসলে কারাবন্দিদের সন্তান নয়। জেলের বাইরে থাকা অন্য কোনও ব্যক্তি ওই শিশুদের আসল বাবা।