নয়া দিল্লি: আগামী দুই দিনের মধ্যে বন্ধ হয়ে যেতে পারে নয়া দিল্লির আফগান দূতাবাস। এখনও পর্যন্ত এই দূতাবাসের দখল রয়েছে, আফগানিস্তানের পূর্ববর্তী গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকার নিযুক্ত কূটনীতিকদের হাতেই। এই দূতাবাসের দখল কাদের হাতে থাকবে, এই নিয়ে গত কয়েক মাস ধরেই ক্ষমতার দ্বন্দ্ব। তারমধ্যেই, আফগান দূতাবাস সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর) ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রককে একটি চিঠি লিখেছে আফগান দূতাবাস। চিঠিতে, ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে দূতাবাস বন্ধ করে দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে। এই বিষয়ে অবশ্য এখনও মুখ খোলেনি বিদেশ মন্ত্রক। এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ভারতে নিযুক্ত আফগান রাষ্ট্রদূত ফরিদ মামুন্দজে বর্তমানে লন্ডনে আছেন। তাঁর পক্ষ থেকেও এখনও সরকারিভাবে কোনও প্রতিক্রিয়া আসেনি।
দূতাবাস সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্তমানে নয়া দিল্লির আফগান দূতাবাসে মাত্র তিনজন আফগান কূটনীতিক আছেন। বৃহস্পতিবার রাতেই তাঁরা ফ্রান্সের উদ্দেশে রওনা হবেন বলে শোনা যাচ্ছে। রাষ্ট্রদূত মামুন্দজেই ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে দূতাবাস বন্ধ করার জন্য ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রককে চিঠি দিয়েছেন। এর আগে, গত শুক্রবার দূতাবাসের কর্মীদের আচমকাই চাকরি থেকে বরখাস্ত করেছিল আফগান দূতাবাস। ভারতীয় কর্মীরা দাবি করেছিলেন, প্রায় বিনা নোটিশেই তাঁদের বরখাস্ত করা হয়েছে। আচমকাই তাঁদের দূতাবাসে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়েছে। সেই সময় মামুন্দজে দাবি করেছিলেন, কাবুল এবং অন্যান্য উত্স থেকে তহবিল আসছে না। দূতাবাসের যে নিজস্ব আয়, তা দিয়ে সমস্ত অপারেশনাল খরচ সামলানো সম্ভব নয়। তাই ছাঁটাই ছাড়া, তাঁদের সামনে আর কোনও পথ খোলা ছিল না।
অন্যদিকে, মামুন্দজের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ করেছে আফগানিস্তানের তালিবান শাসকরা। স্বাভাবিকভাবেই আপগান রাষ্ট্রদূত এই সকল অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁর দাবি, ভারতের আফগান দূতাবাসের দখল নেওয়ার উদ্দেশ্যেই এই অভিযোগগুলি করছে তালিবান সরকার। তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, অভিযোগগুলি সত্যি হলে, এর আগেই কেন করা হল না? কেন এতদিন অপেক্ষা করা হল?
এর আগে চলতি বছরের এপ্রিলে, মামুন্দজের বাণিজ্য পরামর্শদাতা, কাদির শাহ বিদেশ মন্ত্রককে চিঠি লিখে দাবি করেছিলেন, তালিবান সরকার তাঁকেই নয়া রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিয়োগ করেছে। কার নিয়ন্ত্রণে আছে আফগান দূতাবাস, এই নিয়ে সঙ্কট তৈরি হয়েছিল। সেই সময় মামুন্দজে লন্ডনে ছিলেন। মে মাসে, মামুন্দজে ভারতে ফেরার পর, কাদির শাহের দূতাবাসে প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। তারপরই কাদির শাহ লন্ডনে ফিরে গিয়েছিলেন। গত তিন মাস ধরে তাঁর আর কোনও খোঁজ নেই।