কাবুল: আফগানিস্তানে (Afghanistan) তালিবান শাসন শুরু হওয়ার পর থেকেই সন্ত্রাসের চেনা ছবিটা বদলে যায়নি। বরং আফগান ভূমের বিভিন্ন জায়গায় লাগাতার সন্ত্রাসের নানা ছবি ধরা পরেছে। তালিবান (Taliban) কাবুল দখল করার কয়েকদিনের মধ্যে ঘটে যায় সেই ভয়াবহ বিস্ফোরণ। কাবুল বিমানবন্দরে (Kabul Airport) তখন অপেক্ষা করছেন হাজার হাজার মানুষ। মার্কিন সেনাবাহিনীর (US Army) তত্ত্বাবধানে আফগানদের বিমানে ওঠার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। আচমকাই ভয়াবহ বিস্ফোরণে প্রাণ হারান বহু মানুষ। শতাধিক মৃত্যুর ঘটনায় নতুন করে আতঙ্ক ছড়ায় কাবুলের বুকে। একাধিক মার্কিন সেনারও মৃত্যু হয়। আর সেই ঘটনার পরই জানা যায় যে আত্মঘাতী হামলার নেপথ্যে রয়েছে ইসলামিক স্টেট-খোরাসান (IS-K)। এরপর বিভিন্ন হামলার ঘটনায় ইসলামিক স্টেট জঙ্গি সংগঠনের নাম সামনে এসেছে। তাদের আক্রমণ, ক্রমশই তালিবানে অস্বস্তি বাড়িয়ে তুলছিল।
লাগাতার আইএস হামলায় সাধারণ মানুষের প্রাণ হারানোর ঘটনার মাঝেই বুধবার, তালিবান শাসকদের দাবি, ইসলামিক স্টেট জঙ্গিদের নিয়ে যে আশঙ্কা ছিল, সেটা কম বেশি নিয়ন্ত্রণেই রয়েছে। এক সাংবাদিক সম্মলনে তালিবান মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ (Spokesman Zabihullah Mujahid) জানিয়েছন, আফগানিস্তানের জন্য ইসলামিক স্টেট বড় কোনও আশঙ্কার বিষয় নয়। তিনি আরও জানিয়েছেন, অগাস্ট মাসে আফগান মসনদে বসার পর থেকে ইসলামিক স্টেট সদস্য বা তাদের সঙ্গে যুক্ত ৬০০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মুজাহিদ জানিয়েছন, যাদের আটক করা হয়েছে তাদের মধ্যে বেশ কিছু মহিলাও রয়েছেন। প্রশাসনের মহিলা সদস্যরা তাদের জেরা করবে। “আফগানিস্তানে আইএস বেশি নেই, কারণ মানুষের সমর্থন তাদের সঙ্গে নেই।” বলেন মুজাহিদ। পাশাপাশি তিনি আরও জানিয়েছেন, ইসলামিক স্টেট জঙ্গিদের বিরুদ্ধে ক্রমাগত অভিযান চলবে।
তালিবানের মত আইএসও একটি সুন্নি মুসলিম সংগঠন হলেও তারা তালিবানের থেকে আরও বেশি আগ্রাসী। দেশের সীমানা ছাড়িয়ে আন্তর্জাতিক স্তরে ‘জেহাদ’ ছড়িয়ে দিতেই তারা বেশি আগ্রহী। ২০১৪ সালে সিরিয়ায় খিলাফত ঘোষণা করার সময় এই গোষ্ঠীটি প্রথম নজরে আসে। আফগানিস্তান, ইরান, পাকিস্তান এবং তুর্কমেনিস্তানের কিছু অংশে বিস্তৃত একটি অঞ্চল ‘খোরাসান’ সহ অনেকগুলি জঙ্গি শাখাকে অনুপ্রাণিত করেছিল ইসলামিক স্টেট। মুজাহিদ বলেন মধ্যপ্রাচ্যে এই জঙ্গি গোষ্ঠীর প্রভাব থাকলে আফগানিস্তানে এদের নিয়ে চিন্তার কোনও কারণ নেই।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, আফগানিস্তান রয়েছে আফগানিস্তানেই। চলতি বছরের ১৫ অগাস্ট আসরফ গণি সরকারকে উৎখাত করে আফগান মসনদে বসে তালিবান। ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হওয়ার পর মানবাধিকার বিঘ্নিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও সাধারণ আফগান জনগণ ভেবেছিল এবার হয়ত লাগাতার বোমা গুলির আওয়াজ থেকে নিস্তার মিলবে। দুর্ভাগ্যবশত সেটা হয়নি। একের পর এক আক্রমণের ঘটনার পর নতুন করে তালিবানের নয়া শত্রু হিসেবে সামনে উঠে আসে ইসলামিক স্টেট-খোরাসান-এর নাম। আগামি দিনে তালিবান-আইএস-কে লড়াই কোনদিকে যায় সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।
আরও পড়ুন SpaceX এর রকেটে ISS এর জন্য রওনা হলেন ৪ মহাকাশযাত্রী, ‘Crew 3’ মিশনকে কমান্ড করবেন এই ভারতীয়