পঞ্জশীর: তালিবানের সঙ্গে লড়াইয়ে বড় ক্ষতির মুখে পড়ল প্রতিরোধ বাহিনী। রবিবারের সংঘর্ষে প্রতিরোধ বাহিনীর মুখপাত্র তথা আহমেদ মাসুদের অন্যতম ঘনিষ্ট সঙ্গী ফহিম দাস্তির মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। খবরের সত্যতা স্বীকার করে নিয়েছে প্রতিরোধ বাহিনীও।
রবিবারই আফগানিস্তানের জাতীয় প্রতিরোধ বাহিনীর তরফে ফেসবুক পোস্ট করে ফহিমের মৃত্যুর খবর জানানো হয়। ওই পোস্টে বলা হয়, “অত্যন্ত দুঃখ ও শোকের সঙ্গে জানানো হচ্ছে যে আজকের যুদ্ধে আমাদের দুই ভাই ও যোদ্ধাদের হারিয়েছি। আমির সাহিব আহমেদ মাসুদ ও জেনারেল সাহিব আব্দুল ওয়াদুদ জ়োরের অফিসের প্রধান কর্মকর্তা ফহিম মাসুদও শহিদ হয়েছেন। তোমাদের সেলাম।” আফগান সাংবাদিক ফ্রুড বেজ়হানও টুইটে ফহিম দাস্তির মৃত্যুর খবর জানান। প্রতিরোধ বাহিনীর শীর্ষনেতা আহমেদ মাসুদ ও আফগানিস্তানের প্রাক্তন ভআইস প্রেসিডেন্ট আমিরুল্বাহ সালেহকে আটক করা হয়েছে বলেও দাবি তালিবানের। তবে প্রতিরোধ বাহিনীর তরফে এ বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি।
Fahim Dashti, spokesman of National Resistance Front of #Afghanistan, has been killed in Panjshir
Three other key figures of the anti-Taliban group in Panjshir, last pocket of resistance to Taliban, have been killed tonight during clashes with the militants
Major blow.
— Frud Bezhan فرود بيژن (@FrudBezhan) September 5, 2021
গতমাসেই একটি সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে ফহিম দাস্তি বলেছিলেন, “প্রতিরোধ বাহিনী কেবল পঞ্জশীরের জন্য নয়, গোটা আফগানিস্তানের জন্য লড়াই করছে। আমরা সমস্ত আফগান, মহিলা ও সংখ্যালঘুদের অধিকার নিয়ে চিন্তিত। তালিবানকে সমান অধিকারের আশ্বাস দিতেই হবে।” প্রতিরোধ বাহিনীর ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন বলেও জানিয়েছিলেন।
এদিকে, পঞ্জশীরের প্রতিরোধ বাহিনীর শীর্ষ নেতা আহমেদ মাসুদ যুদ্ধ শেষ করে তালিবানের সঙ্গে আলোচনায় বসার প্রস্তাব দিয়েছেন। রবিবার তিনি ফেসবুক পোস্টে তালিবানকে আলোচনায় বসার আহ্বান জানান। তিনি ওই পোস্টে লেখেন, “জাতীয় প্রতিরোধ বাহিনী বর্তমান সমস্যা সমাধান করতে যুদ্ধ শেষ করে তালিবানের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যেতে রাজি হয়েছে।”
তিনি আরও জানান, তালিবানরা পঞ্জশীর ও আন্দারাবে হামলা চালানো বন্ধ করলে তবেই তারাও যুদ্ধ শেষ করবে। উলেমা কাউন্সিলের উপস্থিতিতে দুই পক্ষের তরফেই বড় বাহিনী নিয়ে আলোচনায় বসার প্রস্তাব দেন মাসুদ। মনে করা হচ্ছে, ফহিমের মৃত্যুর পরই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মাসুদ।
সম্প্রতিই স্থানীয় আফগান সংবাদমাধ্যমগুলিতে জানানো হয়েছিল, উলেমা নামক ওই ধর্মীয় সংগঠন তালিবানকে আলোচনায় বসার প্রস্তাব দিয়েছিল। পঞ্জশীরের যুদ্ধে ইতি টানতে দুই পক্ষ যাতে নিজেদের মধ্যে সমঝোতা করে নেয়, সেই প্রস্তাবও দেওয়া হয়। তালিবানের তরফে এখনও অবধি কোনও জবাব না মিললেও প্রতিরোধ বাহিনী এই প্রস্তাবে রাজি হয়ে গিয়েছে।
বর্তমানেও পঞ্জশীরে গুলির লড়াই চলছে তালিবানের সঙ্গে। গতকালই প্রতিরোধ বাহিনীর তরফে জাননো হয়েছিল, সংঘর্ষে অন্তত ৬০০ তালিবানের মৃত্যু হয়েছে । উল্টোদিকে তালিবানের দাবি, তারা পঞ্জশীর ইতিমধ্যেই দখল করে নিয়েছে। শনিবার তারা জানিয়েছিল, পঞ্জশীরের গর্ভনরের অফিসে ঢুকে পড়েছে তারা। রবিবার তালিব মুখপাত্র জানান, পঞ্জশীরের রাজধানী বাজরাকেও প্রবেশ করতে শুরু করেছে তালিবান বাহিনী। আরও পড়ুন: লড়াই শেষ করতে চায় প্রতিরোধ বাহিনী, তালিবানকে আলোচনার প্রস্তাব দিলেন স্বয়ং মাসুদ!