ইসলামাবাদ: আন্তর্জাতিক মহলে ভিক্ষার ঝুলি নিয়ে বেরিয়েছে পাকিস্তান। রোজকার খাবার জোগার করতেই হিমশিম খাচ্ছে সেই দেশের মানুষ। দীর্ঘদিনের অর্থনৈতিক সঙ্কট, ২০২২ সালের ভয়ঙ্কর বন্যায় এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে এক প্যাকেট আটার জন্য মারামারি করতে দেখা যাচ্ছে আম পাকিস্তানিদের। এই অবস্থায় ভিক্ষা ছাড়া আর কীই বা করতে পারেন শাহবাজ শরিফ। মানবিক দৃষ্টিতে বিবেচনা করেই চরম ঋণের দায়ে ডুবে থাকা সত্ত্বেও বন্যার পর পাকিস্তানের পুনর্গঠনে সহায়তা করার জন্য প্রায় ১০০০ কোটি মার্কিন ডলার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে আন্তর্জাতিক মহল। তবে, একদিকে যেমন এই ভিক্ষাবৃত্তি চলছে, তেমনই চলছে চৌর্যবৃত্তিও। সম্প্রতি পাক সরকারের তৈরি একটি রিপোর্টেই বলা হয়েছে, প্রতি মাসে প্রায় ৬ থেকে ৭ কোটি মার্কিন ডলার ইসলামাবাদ থেকে পাচার হচ্ছে পড়শি আফগানিস্তানে।
গুরুতর অর্থনৈতিক সঙ্কটের মধ্যে মার্কিন ডলারের চোরাচালানের বিষয়ে একটি রিপোর্ট তৈরি করেছে শাহবাজ শরিফের সরকার। সেই রিপোর্টেই দেখা যাচ্ছে প্রতি মাসে পাকিস্তান থেকে আফগানিস্তানে পাচার করা হচ্ছে প্রায় ৬ থেকে ৭ কোটি মার্কিন ডলার। আরও বলা হয়েছে, ট্রানজ়িট বাণিজ্যের পথেই এই ডলার চোরাচালান চলছে। সংযুক্ত আরব আমিরশাহি এবং তুরস্কে ‘লেটার অব ক্রেডিট’ খুলতে ব্যবহার করা হচ্ছে পাকিস্তানের বিদেশী মুদ্রা। এর জন্য চরম রাজস্ব ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে পাকিস্তানকে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গিয়েছে। এখন, পাকিস্তান সরকার ডলার পাচারের এই বিষয়টি আফগানিস্তানের তালিবান সরকারের কাছে তোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে শুধু মার্কিন ডলারই নয়, পাক সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী ছোট গাড়ি, টায়ার, মোবাইল ফোন, জ্বালানি তেল এবং অন্যান্য মূল্যবান জিনিসও আফগানিস্তানে পাচার করা হচ্ছে। একানেই শেষ নয়। দেখা গিয়েছে, এই পাচার হওয়া পণ্যগুলি আবার ঘুরিয়ে পাকিস্তানেই রফতানি করা হচ্ছে। কাজেই, এই চোরাচালানে বল যেতে পারে ডবল ক্ষতির মুখে পড়েছে ইসলামাবাদ। হাত পাততে হচ্ছে আন্তর্জাতিক মহলে।
চলতি সপ্তাহের সোমবার ইসলামিক ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্ক, বিশ্বব্যাংক এবং সৌদি আরব পাকিস্তানকে আর্থিক সহায়তা করার কথা জানিয়েছে। গত বছরের বিধ্বংসী বন্যা থেকে পাকিস্তানের পুনরুদ্ধারের জন্য তারা সব মিলিয়ে ৯০০ কোটি মার্কিন ডলারেরও বেশি অর্থ ঋণ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। শুধু তাই নয়, বৃহস্পতিবার সংযুক্ত আরব আমিরশাহিও ১০০ কোটি মার্কিন ডলারের অতিরিক্ত ঋণ দিতে রাজি হয়েছে।