Nancy Crampton-Brophy: লিখেছিলেন ‘হাউ টু মার্ডার ইয়োর হাজব্যান্ড’, স্বামী হত্যার দায়ে দোষী সাব্যস্ত প্রখ্যাত ঔপন্যাসিক

TV9 Bangla Digital | Edited By: অমর্ত্য লাহিড়ী

May 27, 2022 | 12:23 PM

Nancy Crampton-Brophy: বৃহস্পতিবার, 'হাউ টু মার্ডার ইয়োর হাজব্যান্ড' প্রবন্ধের লেখিকা ন্যান্সি ক্র্যাম্পটন-ব্রফি'কে, তাঁর স্বামীর হত্যার দায়ে দোষী সাব্যস্ত করল পোর্টল্যান্ডের এক আদালত।

Nancy Crampton-Brophy: লিখেছিলেন হাউ টু মার্ডার ইয়োর হাজব্যান্ড, স্বামী হত্যার দায়ে দোষী সাব্যস্ত প্রখ্যাত ঔপন্যাসিক
আদালতের রায় শোনার পর ন্যান্সি

Follow Us

পোর্টল্যান্ড: এ এক আশ্চর্যজনক অপরাধের ঘটনা। এক সময় ‘হাউ টু মার্ডার ইয়োর হাজব্যান্ড’ (বাংলা অনুবাদ করলে দাঁড়ায়, কীভাবে আপনার স্বামীকে হত্যা করবেন) শিরোনামে একটি প্রবন্ধ লিখেছিলেন ঔপন্যাসিক ন্যান্সি ক্র্যাম্পটন-ব্রফি। এমনিতে, ‘দ্য ওয়াং লাভার’ এবং ‘দ্য রং হাজব্যান্ড’ মতো রোম্যান্টিক উপল্যাসের জন্য বিখ্যাত ছিলেন তিনি। বৃহস্পতিবার, ৭১ বছর বয়সী এই মার্কিন ঔপন্যাসিককে, তাঁর স্বামীকে হত্যার দায়ে দোষী সাব্যস্ত করল পোর্টল্যান্ডের মাল্টনোমাহ কাউন্টির এক আদালত! দ্য ইন্ডিপেনডেন্টের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৮ সালের জুন মাসে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওরেগন কিউলিনারি ইনস্টিটিউটের ভিতরে মৃত অবস্থায় পাওয়া গিয়েছিল ন্যান্সির স্বামী ড্যানিয়েল ব্রফিকে। ৬৩ বছরের ড্যানিয়েল ওই কিউলিনারি ইনস্টিটিউটে শেফ বা রন্ধনশিল্পী হিসাবে কাজ করতেন। তাঁর পিঠে ও বুকে গুলির আঘাতের চিহ্ন ছিল। এই ঘটনার তিন মাস পরই, এই হত্যার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছিল ন্যান্সিকে। তারপর থেকে তিনি কারাগারেই ছিলেন।

পাঁচ সপ্তাহ ধরে বিচার চলেছে এই মামলার। তবে, ন্যান্সিই যে এই হত্যা করেছিলেন, তদন্তকারীদের কাছে এর কোনও অকাট্য প্রমাণ ছিল না। আদালতে যেগুলি প্রমাণ হিসাবে পেশ করা হয়েছিল, তার সবই ছিল পারিপার্শ্বিক। এমনকি, যে বন্দুকটি দিয়ে হত্যা করা হয়েছিল, সেটিও পুলিশ খুঁজে পায়নি। সরকার পক্ষের আইনজীবীরা আদালতে বলেন, ড্যানিয়েলকে হত্যা করতে যে বন্দুক ব্যবহার করা হয়েছিল, সেই একই সংস্থার তৈরি একই মডেলের একটি বন্দুক ন্যান্সিরও ছিল। সম্ভবত, হত্যার পর ওই ঔপন্যাসিক বন্দুকের ব্যারেলটি পাল্টে দিয়েছিলেন এবং তারপরে সেটি ফেলে দিয়েছিলেন। সেই কারণেই পুলিশ হত্যার অস্ত্র পায়নি।

হত্যার উদ্দেশ্য কী ছিল? আদালতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, অর্থের প্রয়োজনেই স্বামীকে হত্যা করেছেন ন্যান্সি। বাজারে ব্রফি পরিবারের প্রচুর ধার হয়ে গিয়েছিল। স্বামীর মৃত্যুতে যে জীবন বীমার অর্থ পাওয়া যাবে, তাই দিয়ে ন্যান্সি সেই ধার শোধ করার পরিকল্পনা করেছিলেন। এছাড়া, হত্যার দিন, সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজে, ন্যান্সিকে গাড়ি চালিয়ে ওরেগন কিউলিনারি ইনস্টিটিউটে আসতেও দেখা গিয়েছিল। পরে ওই ইনস্টিটিউট থেকেই মিলেছিল ড্যানিয়েলের দেহ।

ন্যান্সি অবশ্য বারংবার তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা এই সব অভিযোগ অস্বীকার করেছিলেন। আদালতে তিনি জানিয়েছিলেন, ড্যানিয়েলের অবসরকালীন সঞ্চয়ের একটা অংশ নগদ দিয়েই তিনি তাঁদের আর্থিক সমস্যাগুলি অনেকাংশে সমাধান করেছিলেন। বন্দুকটি তিনি ঔপন্যাসিক হিসেবে তাঁর কাজের গবেষণার জন্য কিনেছিলেন বলে দাবি করেন তাঁর আইনজীবীরা। তাঁরা আরও বলেছিলেন, স্বামীর মৃত্যুর দিন কিউলিনারি ইনস্টিটিউটের কাছে ন্যান্সির উপস্থিতি নিছকই কাকতালীয়। লেখার কাজের জন্যই তিনি ওই এলাকায় গিয়েছিলেন। ন্যান্সির আইনজীবীরা আরও দাবি করেন যে ড্যানিয়েলের সঙ্গে শেষ দিন পর্যন্ত প্রেম অটুট ছিল ন্যান্সির। শুধুমাত্র পারিপার্শ্বিক প্রমাণের উপর ভিত্তি করে এই মামলা চলতে পারে না বলে, তাঁরা প্রশাসনের আবেদন খারিজ করে দেওয়ার আবেদন জানিয়েছিলেন।

তবে, গত ১৮ মে এই মামলার মোড় ঘুরে যায়। ন্যান্সির সঙ্গে কারাগারে একই কক্ষে থাকতেন আন্দ্রেয়া জেকবস নামে এক মহিলা। আদালতে তিনি দাবি করেন, নিজের অজান্তেই ৭১ বছর বয়সী ঔপন্যাসিক তাঁর স্বামীর মৃত্যুর বিবরণ প্রকাশ করেছিলেন। নিউইয়র্ক পোস্টের প্রতিবেদন অনুসারে, আন্দ্রেয়া আদালতে দাবি করেন, ন্যান্সি তাঁকে বলেছিলেন তাঁর স্বামীর হৃফপিণ্ডে দুটি গুলি করা হয়েছিল। এমনকি, তাঁর স্বামীকে কত দূর থেকে গুলি করা হয়েছিল, তাও বিশদে বর্ণনা করেছিলেন। অথচ, এই তথ্যগুলি স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে তাঁর জানার কথাই নয়।

আন্দ্রেয়ার ওই গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষ্য এবং পারিপার্শ্বিক প্রমাণের ভিত্তিতে, এদিন পোর্টল্যান্ডের মাল্টনোমাহ কাউন্টির জুরিরা ন্যান্সিকে হত্যার দায়ে দোষী সাব্যস্ত করেছেন। তবে, তাঁর সাজা ঘোষণা এখনও বাকি। আগামী ১৩ জুন তাঁকে সাজা দেওয়া হবে।

Next Article