ঢাকা: শনিবার রাজধানী ঢাকার গোলাপবাগ মাঠে বিএনপির তরফে মহাসমাবেশের আয়োজন করা হয়। এই মহাসমাবেশ ঘিরে বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তে উত্তেজনার পারদ চড়ছিল বেশ কয়েকদিন ধরে। এবার এই জনসমাবেশ থেকে আওয়ামি লিগ সরকারের পতনের উদ্দেশে এই সমাবেশ থেকে ১০ দফা দাবি তুলে ধরল প্রধান বিরোধী দল বিএনপি। আজ রাজধানী ঢাকায় বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশে যুগপৎ আন্দোলনের ১০ দফা ঘোষণা করলেন দলটির স্থায়ী কমিটির অন্যতম সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।
এই ১০ দফা দাবি আদায়ে আগামী ২৪ ডিসেম্বর ঢাকাসহ বিভাগীয় শহরগুলোতে বিক্ষোভ মিছিলের ডাক দেওয়া হয়েছে। এর আগে ১৩ ডিসেম্বর বিএনপি ঢাকাসহ বিভাগীয় শহরগুলোতে আরও একটি বিক্ষোভ মিছিলের ডাক দিয়েছে বিএনপি। দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম ও স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসসহ গ্রেফতার হওয়া একাধিক নেতার মুক্তি এবং নয়াপল্টনে পুলিশ-বিএনপি সংঘর্ষে মারা যাওয়া মকবুল হোসেনের হত্যার বিচারের দাবিতে এই বিক্ষোভের ডাক দেওয়া হয়েছে।
যে ১০ দফা দাবি তোলা হয়েছে :
১. জাতীয় সংসদ বিলুপ্ত করে বর্তমান সরকারের পদত্যাগ।
২. ১৯৯৬ সালে সংবিধানে সংশোধিত ধারা ৫৮-খ, গ ও ঘ-এর অধীনে দলনিরপেক্ষ একটি নির্বাচনকালীন বা অন্তর্বর্তীকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করতে হবে।
৩. বর্তমান কমিশন বিলুপ্ত করে স্বাধীন ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন।
৪. বিএনপি প্রধান খালেদা জিয়াসহ সব বিরোধী দলের নেতাকর্মী, সাংবাদিক সহ জ্ঞানী-গুণী ব্যক্তিদের সাজা বাতিল এবং মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের পাশাপাশি নতুন মামলায় গ্রেফতার বন্ধ ও সভা-সমাবেশে বাধা সৃষ্টি না করা;
৫. ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮ ও বিশেষ ক্ষমতা আইন ১৯৭৪-সহ মৌলিক মানবাধিকার হরণকারী সব কালাকানুন বাতিল;
৬. বিদ্যুৎ, জ্বালানি, গ্যাস, জল সহ জনসেবার খাতগুলিতে মূল্যবৃদ্ধির জনগণবিরোধী সিদ্ধান্ত বাতিল;
৭. নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে আনা;
৮. বিগত ১৫ বছরে বিদেশে অর্থ পাচার, ব্যাঙ্কিং ও আর্থিক খাত, বিদ্যুৎ-জ্বালানি খাত ও শেয়ারবাজারসহ রাষ্ট্রীয় সব ক্ষেত্রে সংঘটিত দুর্নীতি চিহ্নিত করার লক্ষ্যে কমিশন গঠন;
৯. সরকারের মদতে নিখোঁজ হওয়া সব নাগরিককে উদ্ধার, বিচারবহির্ভূত হত্যা ও রাষ্ট্রীয় নির্যাতনের প্রতি ঘটনার দ্রুত বিচার, ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বাড়িঘর ও উপাসনালয় ভাঙচুর ও সম্পত্তি দখলের বিচার;
১০. আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, প্রশাসন ও বিচার বিভাগে সরকারি হস্তক্ষেপ বন্ধ করে স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ দেওয়ার দাবি তোলা হয়েছে।
বিএনপির মিত্র দল ও সরকার পতনে একমত অন্যান্য রাজনৈতিক দল ও সংশ্লিষ্ট সব গোষ্ঠীর সঙ্গে আলোচনা করে এই ১০ দফা দাবি ঠিক করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন খন্দকার মোশাররফ হোসেন। বাকি বিষয়গুলোও আলোচনার মাধ্যমে নির্ধারণ করা হবে বলে জানানো হয়েছে।