ঢাকা: সপ্তাহখানেক আগে পর্যন্তও দুর্বিষহ অবস্থা ছিল বাংলাদেশের। একদিকে, ভয়ঙ্কর তাপপ্রবাহ। তার উপর ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে লোড শেডিং। যার জেরে বন্ধ করে দিতে হয়েছিল বাংলাদেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি। এবার সেই লোডশেডিং পরিস্থিতির উন্নতি হতে চলেছে। মঙ্গলবার (২৭ জুন) বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবাহ শুরু করলো আদানি গোষ্ঠী। যাবতীয় জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে ঝাড়খণ্ডে আদানি পাওয়ারের দ্বিতীয় ইউনিট থেকে বাংলাদেশে বাণিজ্যিকভাবে বিদ্যুৎ সরবাহ শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে, বাংলাদেশের পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ড বা পিডিবি। সোমবার, মুম্বই স্টক এক্সচেঞ্জে দেওয়া এক বিবৃতিতে আদানি পাওয়ার জানিয়েছে, পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে আদানি পাওয়ারের দ্বিতীয় ইউনিটের বাণিজ্যিক কর্মকাণ্ড শুরু করেছে।
আদানিদের ঝাড়খণ্ডের দুটি ইউনিটের প্রতিটি ৮০০ মেগাওয়াট করে বিদ্যুৎ উৎপাদনে সক্ষম। সব মিলিয়ে ক্ষমতা ১৬০০ মোগাওয়াটের। ৭ এপ্রিল প্রথম ইউনিটটি বাণিজ্যিক বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু করেছিল। আদানি পাওয়ারের বিবৃতি অনুযায়ী, ঝাড়খণ্ডের গোড্ডায় আদানির বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে এখন ১,৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। সেখান থেকে প্রয়োজন অনুযায়ী বিদ্যুৎ আমদানি করতে পারবে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে আদানিদের চুক্তির অনুযায়ী, আগামী ২৫ বছর ধরে প্রতিদিন ১,৪৯৬ মেগাওয়াট করে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হবে। গোড্ডা থেকে ভারতের মধ্য দিয়ে প্রায় ১০৬ কিলোমিটার ‘ডেডিকেটেড ট্রান্সমিশন লাইন’এর মাধ্যমে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিচ্ছে আদানি পাওয়ার।
পিডিবির পরিচালক শামিম হাসান বলেছেন, “রবিবার আদানির ১টি ইউনিট থেকে বাংলাদেশে ৭৬৪ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়েছিল। সোমবার (২৬ জুন) সকাল ৮টা ৫৩ মিনিটে আদানিদের অপর ইউনিটটি বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু করে। সোমবার সন্ধ্যা ৬টায় আদানিদের বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে মোট ৮৬৭ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ বাংলাদেশের জাতীয় গ্রিডে যোগ হয়েছে। রাত ৮-৯টার দিকে বিদ্যুৎ সরবরাহের পরিমাণ বাড়তে পারে, আবার চাহিদা না থাকলে কমতেও পারে।” তিনি জানিয়েছেন, দিনের বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশে বিদ্যুতের চাহিদার তারতম্য হয়। ফলে চাহিদা অনুযায়ীই দিনের বিভিন্ন সময়ে বিদ্যুৎ আমদানির তারতম্য হবে। আদানিদের বিদ্যুৎ আসা শুরু হওয়ায় বাংলাদেশের লোডশেডিং পরিস্থিতির উন্নতি হবে বলে আশা করা হচ্ছে। ফলে, আসন্ন ইদের ছুটিতে সেই দেশে আর লোডশেডিং হওয়ার সম্ভবনা নেই বলেই আশা করছে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ বিভাগ।
আদানি পাওয়ার বিদ্যুৎ সরবরাহ করায় বাংলাদেশের লোডশেডিং পরিস্থিতির উন্নতি হবে ঠিকই, তবে, আদানি গোষ্ঠীর কাছ বিদ্যুৎ আমদানি নিয়ে বাংলাদেশে বড় বিতর্ক রয়েছে। অনেকেই সরকারের এই সিদ্ধান্তে অসন্তুষ্ট। আদানিদের কাছ থেকে বিদ্যুৎ আমদানির বিরোধিতা করেছিল বাংলাদেশের বিভিন্ন মহল। অভিযোগ উঠেছিল, আদানি গোষ্ঠী অনেক বেশি দামে বিদ্যুৎ বিক্রি করছে বাংলাদেশকে। তবে, কোনও সমালোচনাতেই কান দেয়নি হাসিনা সরকার।