ঢাকা: বাংলাদেশের দক্ষিণে বঙ্গোপসাগরে সবথেকে বড় দ্বীপ, সেন্ট মার্টিন্স দ্বীপ। দীর্ঘদিন ধরেই এই দ্বীপটির উপর নজর রয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের। সেখানে তাঁরা সেখানে সামরিক ঘাঁটি বানাতে চায়। তবে, মার্কিনীরা চাইলেও আওয়ামী লিগ সরকার কোনও পরিস্থিতিতেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হাতে সেন্ট মার্টিন্স দ্বীপ তুলে দেবে না বলে স্পষ্ট জানালেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সম্প্রতি, সুইজারল্যান্ড ও কাতার সফরে করে ফিরেছেন হাসিনা। এদিন সেই বিষয়ে, তাঁর সরকারি বাসভবনে এক সাংবাদিক সম্মেলন করেন তিনি। সেখানেই সেন্ট মার্টিন্স দ্বীপের প্রসঙ্গও উঠে আসে।
হাসিনা স্পষ্টভাবে জানান, কোনভাবেই সেন্ট মার্টিন্স দ্বীপ অন্য কারও হাতে তুলে দেওয়া হবে না। শেখ হাসিনা বলেন, “আমার হাত দিয়ে এই দেশের কোনও সম্পদ বিক্রি হবে না। দেশের সম্পদ বিক্রি করে আমি ক্ষমতায় আসতেও চাই না। ২০০১ সালে ভারতের কাছে গ্যাস বিক্রির মুচলেকা দিয়ে ক্ষমতায় এসেছিল বিএনপি। এখন আবার সামনে আসছে প্রবাল দ্বীপ সেন্ট মার্টিন্স বিক্রি প্রসঙ্গ। কেউ কেউ এই বিষয়ে মুচলেকা চায়। আমি এইটুকু বলতে পারি, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের কন্যার হাত দিয়ে এই দেশের কোনও সম্পদ বিক্রি হবে না। ঐ মুচলেখা দিয়ে আমি ক্ষমতায় আসতেও চাই না।” হাসিনা আরও জানান, নিজে ভোগ করতে নয় বরং মানুষের উন্নতি করতেই তিনি ক্ষমতায় আছেন।
প্রসঙ্গত, গত কয়েক মাস ধরে আমেরিকার সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের অবনতি ঘটেছে। বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচন কতটা অবাধ ও স্বচ্ছ হবে, সেই বিষয়ে প্রশ্ন তুলেছে আমেরিকা। এমনকি, বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় যারা বিঘ্ন ঘটাবে, তাদের ভিসা দেওয়া হবে না বলে, নয়া ভিসা নীতিও ঘোষণা করেছে ওয়াশিংটন। শেখ হাসিনার মতে, আমেরিকাকে সেন্ট মার্টিন্স দ্বীপ লিজ দিলে তাদের উপর আর কোনও মার্কিন নিষেধাজ্ঞা বা নতুন করে কোনও ভিসা নীতি তৈরি হত না। নাম না করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি ইঙ্গিত করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে কাউকে খেলতে দেব না। আমার দেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলার অধিকার কারও নেই। আর আমার দেশের মাটি ব্যবহার করে কোনও জায়গায় কেউ সন্ত্রাসবাদী কর্মকাণ্ড চালাবে, কারোর উপর হামলা করবে – এটা আমরা হতে দেব না।”
বর্তমানে ৩ দিনের সফরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রয়েছেন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সূত্রের খবর, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কের উন্নতিতে ভারতের সহায়তা চেয়েছে বাংলাদেশ। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে এই বিষয়ে কথা বলার জন্য নরেন্দ্র মোদীকে অনুরোধ করেছেন বাংলাদেশি নেতারা। নির্বাচনের আগে, বাংলাদেশের গণতন্ত্র নিয়ে আমেরিকার অবস্থানকে হাতিয়ার করতে পারে বিরোধীরা, এমনই আশঙ্কা করছে হাসিনা প্রশাসন। এরই মধ্যে সেন্ট মার্টিন্স দ্বীপ লিজ দেওয়া নিয়ে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করল ঢাকা।