ঢাকা: বাংলাদেশের অর্থনীতির কোমর ভেঙে দেওয়ার ষড়যন্ত্র করছে চিন? সম্প্রতি এমনই এক চাঞ্চল্য তথ্য প্রকাশ্যে এসেছে, যা থেকে স্পষ্ট ইঙ্গিত মিলছে, পদ্মাপারের আর্থিক পরিকাঠামো ধ্বংস হয়ে যেতে পারে চিনা সংস্থাগুলির কারসাজিতে। অভিযোগ উঠছে, বেশ কিছু চিনা কোম্পানির ভুয়া নথি চক্র (Fake documents racket on China-based companies) রমরমিয়ে চলছে বাংলাদেশে (Bangladesh)। এর জেরে প্রতি বছর বাংলাদেশ সরকারের প্রায় ১ হাজার ১০০ কোটি টাকা (ভারতীয় মুদ্রায়) ক্ষতি হচ্ছে। বাংলাদেশ বিশ্বের অধিকাংশ দেশে তৈরি পোশাক রফতানি করে। কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশের অনুমান, বাংলাদেশের থেকে পোশাকের এই আন্তর্জাতিক বাজার ছিনিয়ে নিতেই চিন এখন এই ষড়যন্ত্র চালাচ্ছে। জাল নথি চক্রের হাত ধরে তৈরি হয়ে যাচ্ছে পাসপোর্ট থেকে জন্ম শংসাপত্র সবই।
সম্প্রতি ‘বাংলাদেশ লাইভ নিউজ’ সংবাদ মাধ্যমে এই জাল নথি নিয়ে চিনের ষড়যন্ত্রের কথা প্রকাশ পেয়েছে। বাংলাদেশের ওই সংবাদ মাধ্যমের এক রিপোর্টে বলা হয়েছে, অনেক চিনা কোম্পানি নথি জাল করার ষড়যন্ত্রে জড়িত। অনেক নকল জিনিস তৈরি হচ্ছে এবং এগুলো বাংলাদেশের বন্দর দিয়ে অন্য দেশে পাঠানো হচ্ছে। এসব পণ্য রফতানির জন্য জাল নথিও ব্যবহার করা হয়। কয়েক বছরে এই জাল নথি এবং নকল পণ্যের বাজার দ্রুত বৃদ্ধি পেয়েছে। ওই সংবাদ মাধ্যম সূত্রে খবর, বাংলাদেশ প্রশাসন এই ষড়যন্ত্রের আন্দাজ করতে পারলেও এখনও পর্যন্ত সেভাবে কোনও ব্যবস্থা নিয়ে উঠতে পারেনি।
‘ওয়ার্ল্ড কাস্টম অর্গানাইজেশন’-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গোটা বিশ্বে প্রতি বছর ৩.৫ শতাংশ জাল নথি এবং নকল পণ্য ব্যবহার করা হয়। এর মধ্যে ৬৫ শতাংশ আসে চিন থেকে। এক্ষেত্রে বেশ কিছু চিনা কোম্পানির বেশ দুর্নাম রয়েছে। এর জন্য তারা স্থানীয় কিছু দুষ্কৃতীদের ব্যবহার করে বলে অভিযোগ।
গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ট্যাক্স জাস্টিস-এর মতে, চিনের এই সব অপকর্ম বা ষড়যন্ত্রের কারণে বাংলাদেশ সরকার প্রতি বছর প্রায় ১ হাজার ১০০ কোটি টাকা (ভারতীয় মুদ্রায়) ক্ষতির মুখে পড়ছে। এই ক্ষতির অঙ্কটা বাদ দিলেও বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তার জন্যও এই পরিস্থিতি বেশ উদ্বেগজনক। অনেক বহুজাতিক কোম্পানি এবং ধনী ব্যক্তিরাও কর এড়াতে জাল নথির আশ্রয় নিতে পারে, এমনও আশঙ্কা করছেন অনেকে।
বাংলাদেশে সরকারি দলিল ও স্ট্যাম্পের জন্য যে কাগজ ব্যবহার করা হয়, ওই জাল-চক্রের সঙ্গে যুক্তরা সেই কাগজ নকল করে জাল দলিল তৈরি করছে বলে অভিযোগ। এতে বাংলাদেশ সরকারের কোটি কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। সূত্রের খবর, চিনা কোম্পানি ‘ডিজিট অ্যান্টি ফেক কোম্পানি লিমিট’ এই নকল কাগজপত্র চট্টগ্রামের এক কোম্পানি আরাফাত এন্টারপ্রাইজে পাঠিয়েছে। যখন এই বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে, তখন চিনা সংস্থাটি তাদের ওয়েবসাইট থেকে ওই নথির তথ্য মুছে দেয়। চিন থেকে পাঠানো এই কাগজের একটি চালানও চট্টগ্রাম বন্দরে ধরা পড়েছে। স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম সূত্রে খবর, চিন শুধু এই বাণিজ্য ক্ষেত্রেই জাল নথি তৈরি করছে, এমনটা নয়, এর পাশাপাশি জাতীয় পরিচয়পত্র ও জন্ম শংসাপত্রও জাল করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন : NCPCR on Vaccination in Punjab: ভোটমুখী পঞ্জাব, মণিপুর ছোটদের টিকাকরণে অনেকটাই পিছিয়ে