ঢাকা: ফের বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় ভয়াবহ বিস্ফোরণ। মঙ্গলবার (৭ মার্চ), ঢাকার গুলিস্তান এলাকার সিদ্দিক বাজারে বিআরটিসির বাস কাউন্টারের পাশে, বিকেল ৪টে বেজে ৫০ মিনিট নাগাদ প্রচণ্ড শব্দে একটি বিস্ফোরণ ঘটেছে বলে জানা গিয়েছে। ঘটনাস্থলেই বহু মানুষের মৃত্যু হয়েছে। প্রায় দুশো জনের মতো মানুষ গুরুতর আহত হয়েছেন। হতাহতের সংখ্যা ক্রমে বাড়ছে। এই বিপর্যয়ের সর্বশেষ সব খবর সরাসরি পেতে চোখ রাখুন এখানে –
বুধবার (৮ মার্চ) সকাল থেকে বাংলাদেশের ঢাকার গুলিস্তানে বিস্ফোরণস্থলে এসে বাবার খোঁজ করছে ছোট্ট সামির। কিন্তু, কেউ তার বাবার খোঁজ দিতে পারেনি। নিহতের তালিকাতেও তার বাবার নাম নেই।
মঙ্গলবার বিকেল ৫টা নাগাদ বিস্ফোরণ হয়েছিল। তার ১৮ ঘণ্টা পার হয়ে যাওয়ার পরও নিখোঁজ সদস্যদের খোঁজে ধ্বংসস্তূপের আশেপাশে ঘুরে বেড়াচ্ছেন পরিবার-পরিজনরা।
ঠিক কী কারণে বিস্ফোরণ হয়েছিল ঢাকার ওই বহুতলে, তা জানতে বিশেষ তদন্তকারী কমিটি গঠন করা হল বাংলাদেশ সরকারের তরফে।
বিস্ফোরণের পর আহত ও নিহতদের ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ ও শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। শেষ খবর পাওয়া অবধি ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। কমপক্ষে ১২০ জন আহত হয়েছেন। হাসপাতালগুলির বাইরে এখন শুধুই হাহাকার শোনা যাচ্ছে।
বিস্তারিত পড়ুন: হাসপাতাল চত্বরে শুধুই বুক ফাটা কান্নার রব, সেনাবাহিনীর অপেক্ষায় থমকে উদ্ধারকাজ
ঢাকার বিস্ফোরণের ঘটনায় উদ্ধারকাজে এবার হাত লাগাচ্ছে সেনাবাহিনীও। এ দিন সকালেই ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছয় সেনাবাহিনী। এরপরে উদ্ধারকাজ শুরু করা হয়।
ভেঙে পড়তে পারে বিস্ফোরণে বিধ্বস্ত বিল্ডিংটি। এই আশঙ্কাতেই ঢাকার ওই বিল্ডিংয়ের বেসমেন্টে প্রবেশ করতে পারল না দমকল বাহিনী।
ঢাকা বিস্ফোরণের ঘটনায় ক্ষতিপূরণের ঘোষণা করল জেলা প্রশাসন। নিহতদের পরিবার পিছু ৫০ হাজার টাকা ও আহতদের ২৫ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে।
ঢাকায় বিস্ফোরণে মৃতের সংখ্যা ক্রমশ বেড়েই চলেছে। বুধবার সকালের খবর অনুযায়ী, বিস্ফোরণে এখনও অবধি ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত শতাধিক মানুষ। জারি রয়েছে উদ্ধারকাজ।
ঢাকার বিস্ফোরণকাণ্ডে মৃত বেড়ে হল ১৭। ভবনটির কলামগুলি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ভিতরে ঢুকতে পারছে না দমকল। দমকল বিভাগের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ভবনটি একটু স্থিতিশীল না করতে পারলে ভিতরে প্রবেশ করাটা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যেতে পারে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পক্ষ থেকে স্বেচ্ছায় রক্তদানের জন্য হাসপাতালে আসার আহ্বান জানানো হয়েছে।
ঢাকার রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, জমে থাকা গ্যাস থেকেও বিস্ফোরণ ঘটতে পারে। ঘটনাস্থলে উপস্থিত অনেকেই দাবি করেছেন, দুই দিনের ব্যবধানে একের পর এক বিস্ফোরণের পিছনে নাশকতাও থাকতে পারে।
ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে সেনা বাহিনীর বোমা নিষ্ক্রিয়কারী শাখা। সেনা সদস্যরা ইতিমধ্যে কাজও শুরু করে দিয়েছেন। বিস্ফোরণের ঘটনার পিছনে কোনও নাশকতা আছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
বিস্ফোরিত ভবনে আর কারোর বেঁচে থাকার আশা নেই বলে আশঙ্কা করছে দমকল বিভাগ।
গুলিস্থান হলো ঢাকার সবথেকে পুরোনো বাস স্ট্যান্ড। রাজধানী মধ্যে ইন্টার সিটি এবং দূর পাল্লার বাস চলাচল করে এখান থেকে। এর জন্য গুলিস্থান এলাকায় প্রায় ২৪ ঘন্টাই হাজার হাজার লোকের ভিড় থাকে।
মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১৬ হয়েছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ
ঘটনাস্থলের পাশে আল আমিন নামে একটি বাজার রয়েছে। সেই বাজারের এক কর্মী বলেছেন, বিস্ফোরণের পর বাইরে বেরিয়ে তিনি দেখেছিলেন রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রাস্তায় পড়ে আছেন বহু মানুষ। ৮ জনকে তিনি নিজেই ভ্যানে তুলে মেডিকেল কলেজে পাঠিয়েছেন।
বিস্ফোরণের পর সিদ্দিক বাজার এলাকায় ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।
पड़ोसी बांग्लादेश के ढाका में गुलिस्तान इलाके में स्थित एक 5 मंजिला इमारत में धमाका 8 मरे 100 घायल..#Bangladesh #Blast #Dhaka pic.twitter.com/mKaEapoqxW
— Ved Shukla (@Ved_Shukla28) March 7, 2023
ধ্বংসস্তূপের নীচ থেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে একের পর এক আহত মানুষকে
At least 7 people killed, over 70 people injured in an explosion at a building in Bangladesh’s Dhaka: Local media #Dhaka #Bangladesh #DHAKABLAST pic.twitter.com/hbZLibPTrF
— DHIRAJ DUBEY (@Ddhirajk) March 7, 2023
কীভাবে এই বিস্ফোরণ ঘটেছে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে প্রত্যক্ষ্যদর্শীদের অনেকেই দাবি করেছেন, একটি শীতাতপ নিয়ন্ত্রক যন্ত্রেই এই বিস্ফোরণ ঘটেছে।
গত কয়েকদিনে একাধিক বিস্ফোরণ এবং অগ্নিকাণ্ডের সাক্ষী থেকেছে বাংলাদেশ। গত রবিবার ঢাকার সায়েন্স ল্যাব এলাকায় আরও একটি বিস্ফোরণ ঘটেছিল। ওই ঘটনায় তিনজন নিহত আরও অন্তত ১৪ জন আহত হয়েছিলেন। তার আগে শনিবার চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে একটি অক্সিজেন কারখানায় বিস্ফোরণ এবং অগ্নিকাণ্ডে অন্তত ছয়জন নিহত হয়েছিলেন।
বিস্ফোরণের পর ঘটনাস্থলে ভিড় জমিয়েছেন বহু মানুষ। ভিডিয়োতে ধরা পড়েছে বিস্ফোরণের ভয়াবহতা।
Dhaka #gulistan #blast https://t.co/UX2KdIBEtJ
— ?? Md. Mahbubul Islam (Saik) (@SAIKoopath) March 7, 2023
হাতের কাছে যথেষ্ট সংখ্যক অ্যাম্বুল্যান্স না থাকায় ছোট ছোট ট্রাকে করে, এমনকি রিক্সায় করেও আহতদের হাসাপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১১ হল। আহত হয়েছেন প্রায় ২০০ জন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বিস্ফোরণে ভবনটির বেশ কয়েকটি তলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিস্ফোরণের সময় রাস্তার একটি যাত্রীবাহি বাস এবং বেশ কিছু ভ্যান দাঁড়িয়েছিল। বিস্ফোরণের অভিঘাতে বাসটির কাচের জানালা উড়ে গিয়েছে, ভ্যানগুলির চালকরাও কম-বেশি আহত হয়েছেন।
ঢাকা দমকল বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, একটি সাত তলা ভবনে এই বিস্ফোরণ ঘটেছে। গোটা ভবনটি জুড়ে স্যানিটারি পণ্যের দোকান রয়েছে। উপরের তলায় একটি ব্যাঙ্কের শাখা রয়েছে।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়েছে বিশাল পুলিশ বাহিনী। ঠিক কীভাবে এই বিস্ফোরণ ঘটল, তা এখনও জানা যায়নি। তদন্ত শুরু করেছে ঢাকা পুলিশের বোমা নিষ্ক্রিয়কারী শাখা।
বিস্ফোরণের ফলে বহুতল ভবনে আগুন ধরে গিয়েছে। ঢাকা দমকল বিভাগের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সেই আগুন নিয়ন্ত্রণ করতে এবং হতাহতদের উদ্ধার করতে ইতিমধ্য়েই দমকলের ১১টি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে। তারা আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালাচ্ছে।