ঢাকা: বাংলাদেশে এখনও সরকারিভাবে ইদের ছুটি শুরু হয়নি। অথচ তার আগেই, অর্থাৎ, গত দেড় দিনে ইদের আনন্দ উপভোগ করতে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা ছেড়ে জেলায় জেলায় পাড়ি দিয়েছেন প্রায় ৩০ লক্ষ মানুষ। মোবাইল ফোনের অবস্থান অনুসারে এমনটা জানিয়েছে সেই দেশের বিভিন্ন মোবাইল ফোন অপারেটররা। প্রসঙ্গত প্রতি বছর ইদে ঢাকা ছেড়ে জেলার বাড়িতে ফিরে যান প্রায় দেড় কোটি মানুষ। বৃহস্পতিবার (২০ এপ্রিল), ঢাকা ছেড়েছেন আরও প্রায় ৫০ লক্ষ মানুষ। এদিন বাংলাদেশের ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার এক ফেসবুক পোস্ট করে এই পরিসংখ্যান জানিয়েছেন। বাংলাদেশে ইদের সরকারি ছুটি শুরু হবে শুক্রবার থেকে। এদিন অফিসের পর, আরও প্রায় ২০ থেকে ৩০ লক্ষ মানুষ ঢাকা ছাড়তে পারেন বলে মনে করা হচ্ছে। অবশ্য এই হিসেব পুরোপুরি যাঁরা মোবাইল ব্যবহার করেন, তাদের। মোবাইল ফোন ব্যবহার করেন না কিন্তু ঢাকা ছেড়েছেন, এমন মানুষের সংখ্যাও নেহাত কম নয়, অন্তত কয়েক লক্ষ। সব মিলিয়ে আরও ২০ লক্ষ মানুষ এদিন ঢাকা ছেড়েছেন।
এদিকে, সরকারিভাবে ইদের ছুটি শুরুর আগেই ঢাকার বাস ও ট্রেন টার্মিনালে দেখা গিয়েছে ভিড়ের চাপ। ঢাকা-টাঙ্গাইল ও ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে যাত্রী ও যানবাহনের চাপও বেড়েছে। ঢাকার আশপাশের জেলাগুলিতে যাওয়ার জন্য বাসের টিকিটের লাইনও বিশাল লম্বা ছিল। কাউন্টার থেকে জানা গিয়েছে, দুরত্ব বেশি থাকায় উত্তরবঙ্গের বগুড়া, দিনাজপুর, রংপুর অঞ্চলের যাত্রীর চাপ সন্ধ্যার পরই বেশি থাকে। আর ঢাকার পাশের জেলা ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা, জামালপুর এই অঞ্চলের যাত্রীদের চাপ দিনে বেশি। পরিবহন কাউন্টার কর্মীরা জানান, দূরপাল্লার বেশিরভাগ বাসেরই অগ্রিম টিকিট বিক্রি হয়েছে। রাতের অগ্রিম টিকিটের বিক্রি বেশি হয়েছে। সায়েদাবাদ ও যাত্রাবাড়ীর কিছু অংশে আলাদা কাউন্টার রয়েছে বড় বড় বাস কোম্পানিগুলির। সেখানেও ব্যাপক ভিড় দেখা গিয়েছে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের আবদুল্লাহপুর, টঙ্গী, স্টেশন রোড, বোর্ড বাজার, ভোগরা বাইপাস মোড়, চান্দনা চৌরাস্তাসহ গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট গুলোতে অতিরিক্ত সংখ্যক ট্রাফিক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। দিনের বিভিন্ন সময়ে এই মহাসড়কে যানবাহনের গতি ছিল অত্যন্ত মন্থর।
এবারে ইদের আগে জেলামুখী যাত্রায় নতুন সংযোজন পদ্মা সেতু। এই রুটে যাত্রী সংখ্যা অন্যান্য রুটের তুলনায় বেশি। একইসঙ্গে মোটরসাইকেল আরোহীর সংখ্যাও বেড়েছে কয়েক গুণ। বৃহস্পতিবার থেকে পদ্মা সেতুতে মোটরসাইকেল চলাচল শুরু হয়েছে। টাঙ্গাইলের বঙ্গবন্ধু সেতুতেও মাত্র ২ ঘণ্টায় ২,৭০০ মোটরসাইকেল পার হয়েছে। বঙ্গবন্ধু সেতুতে গত ২৪ ঘণ্টায় ছোট-বড় মিলিয়ে ৩৬,০৬৯টি যানবাহন পারাপার করেছে। বঙ্গবন্ধু সেতুর এক্সিকিউটিভ এঞ্জিনিয়ার জানিয়েছেন, এর ফলে টোল আদায় হয়েছে ২,৭১,৯৫,৪০০ টাকার। ইদে ঘরে ফেরার সময়ে বিভিন্ন রাস্তায় হাইওয়েতে যাতে যানবাহন বিকল হয়ে যানজট না সৃষ্টি হয়, তার জন্য অবিলম্বে যানবাহনগুলি মেরামত করার ব্যবস্থা রাখছে পুলিশ। পাশাপাশি হাইওয়েতে ডাকাতি, ছিনতাই ঠেকানো ও দুর্ঘটনা রোধের উপরও গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া যানবাহনের বেপরোয়া গতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশের কাছে থাকবে স্পিডগানও।