ঢাকা: নতুন নির্বাচন গঠন নিয়ে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির সঙ্গে কথাবার্তা আলোচনাকে অপ্রয়োজনীয় অর্থহীন বলেই মনে করে বাম গণতান্ত্রিক জোট। আজ সোমবার এক সাংবাদিক সম্মেলনে এমনটাই জানিয়েছেন জোটের নেতৃত্ব। রাজধানী ঢাকার পুরনো পল্টনের মৈত্রী মিলনায়তনে এই সাংবাদিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। উপস্থিত সাংবাদিকদের সামনে বাম গণতান্ত্রিক জোটের লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান জোটের সমন্বয়ক তথা বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সইফুল হক।
তিনি বলেন, ” নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে আলোচনা করা অর্থহীন। সরকারের এই উদ্যোগ নিতান্তই লোক দেখানো। দেশের সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন গঠনের ব্যাপারে রাষ্ট্রপতি কোনও ভূমিকা নেই এবং তার সিদ্ধান্তের কোনও প্রয়োজন নেই। নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে রাষ্ট্রপতির যদি পৃথক কোন চিন্তা ভাবনা থাকে তা সত্ত্বেও প্রধানমন্ত্রীর বাইরে গিয়ে কোন সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার সংবিধান তাঁকে দেয় না।”
সাংবাদিক সম্মেলনে বাম গণতান্ত্রিক জোটের পক্ষ থেকে দাবি করা হয় আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচন কমিশনারকে রাষ্ট্রপতি নিয়োগ করলেও দেশের প্রধানমন্ত্রীর সম্মতি ছাড়া সেই নিয়োগ সম্ভব নয়। বাম গণতান্ত্রিক জোটের পক্ষ থেকে অতীতের কিছু ঘটনা টেনে নাম না করে রাষ্ট্রপতির ভূমিকা কে কটাক্ষ করা হয়। তাদের দাবি ২০১২ ও ২০১৭ সালে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে আলোচনা ও সার্চ কমিটির মাধ্যমে যে নির্বাচন কমিশন গঠিত হয়েছিল, সেই কমিশন নজিরবিহীন দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিয়েছে।
বামেদের সাংবাদিক সম্মেলন থেকে এদিন নির্বাচন কমিশন ও শেখ হাসিনা পরিচালিত বাংলাদেশ সরকারকে কটাক্ষ করা হয়। বাম নেতৃত্ব বলেন, সরকার ও সরকারি দলের অনুগত হিসেবে কাজ করতে গিয়ে নির্বাচন কমিশন দেশে নির্বাচন ব্যবস্থা তুলে দিয়েছে। ভোটের মাধ্যমে নিজের পছন্দের দল ও প্রার্থীকে নির্বাচিত করার অধিকার বাংলাদেশের জনগণের কাছ থেকে কেড়ে নেওয়া হয়েছে। আওয়ামীলীগের শাসনকালে নির্বাচন কমিশন এক হাস্যকর ও নিষ্ক্রিয় সংস্থায় পরিণত হয়েছে। তাদের যেকোনো কাজ প্রহসন ছাড়া আর কিছুই নয়।
বেশ কিছুদিন ধরে নির্বাচন কমিশন গঠন প্রসঙ্গে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে আলোচনায় নিজেদের অনীহার কথা জানিয়েছিল বাংলাদেশের বিরোধী দল বিএনপি। এবার বাম গণতান্ত্রিক জোটের গলায় ও একই সুর। ২০২৩ সালে বাংলাদেশ জাতীয় নির্বাচন। এই সরকার বিরোধিতার আবহে নির্বাচন নিয়ে আগামী দিনে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠবে সেই সংশয় প্রকাশ করেছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা।