ঢাকা: আচমকা কীসের যেন ধাক্কা। কিছু বুঝে ওঠার আগেই উল্টে গেল কামরা। উদ্ধারের পর যন্ত্রণায় কাতরে উঠলেন অনেকে। কারও পা কাটা গিয়েছে। কারও হাত। বাংলাদেশের কিশোরগঞ্জ জেলার ভৈরবে ট্রেন দুর্ঘটনার পর এমন বীভৎস দৃশ্য দেখা গেল। যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন আহত যাত্রীরা। যন্ত্রণার সঙ্গী হয়েছে আতঙ্ক। ট্রেন দুর্ঘটনার পর আতঙ্ক গ্রাস করেছে জখম যাত্রীদের।
সোমবার (২৩ অক্টোবর) স্থানীয় সময় বিকেল ৪টার দিকে ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটে কিশোরগঞ্জ জেলার ভৈরবে। দুর্ঘটনায় শেষ খবর পর্যন্ত কমপক্ষে ১৭ জনের প্রাণহানি হয়েছে। আহত হয়েছেন আরও অনেকে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ভৈরব রেলওয়ে জংশনের আউটার পয়েন্ট ক্রসিংয়ে রাজধানী ঢাকার দিক থেকে আসা যাত্রীবাহী ট্রেন এগারো সিন্দুর এক্সপ্রেসের শেষ দুটি বগিতে ধাক্কা দেয় চট্টগ্রামের দিকে যাওয়া মালগাড়ি। এতে দুমড়ে-মুচড়ে যায় এগারো সিন্দুর ট্রেনের বেশ কয়েকটি বগি।
চাপা পড়েন অনেক যাত্রী। শুরুতে তাঁদের উদ্ধারের চেষ্টা করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। পরে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় ফায়ার সার্ভিস-সহ বিভিন্ন সংস্থার সদস্যরা। একে একে উদ্ধার করা হয় বেশ কয়েকটি মৃতদেহ। গুরুতর আহতদের পাঠানো হয় বিভিন্ন হাসপাতালে।
দুর্ঘটনার জেরে কারও বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে হাত। কারও পা। কেউ কাতরাচ্ছেন অসহনীয় যন্ত্রণায়। গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অনেকে।
মালবাহী ট্রেনটি ঢাকা থেকে চট্টগ্রামের দিকে যাচ্ছিল। আর যাত্রীবাহী ট্রেনটি যাচ্ছিল ভৈরব থেকে ঢাকায়। বাংলাদেশ রেলওয়ে সূত্র জানিয়েছে, ঢাকা থেকে ছেড়ে যাওয়া মালগাড়িটি ভৈরব স্টেশনে প্রবেশ করছিল। তার কয়েক মুহূর্ত আগে ভৈরব থেকে এগারো সিন্দুর ট্রেন ঢাকার দিকে রওনা হয়েছিল। জগন্নাথপুর রেল ক্রসিং এলাকায় এগারো সিন্দুর ট্রেনের শেষের দুই-তিনটি বগিতে মালগাড়ির ইঞ্জিন আঘাত করে। এতে যাত্রীবাহী এগারো সিন্দুর ট্রেনের শেষের দুই-তিনটি বগি ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বাংলাদেশ রেলওয়ের তরফে জানানো হয়েছে, মালবাহী ট্রেন সিগন্যাল না মানায় ভৈরবে দুই ট্রেনের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। ভয়াবহ এই দুর্ঘটনার পরই ঢাকার সঙ্গে বন্ধ হয়ে যায় চট্টগ্রাম, সিলেট, ময়মনসিংহ ও নোয়াখালির ট্রেন চলাচল।