সিলেট: সাধারণত সংবাদপত্র বা ওয়েবসাইটে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেখতে আমরা সকলেই অভ্যস্ত। আর যদি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগ হয় তবে সেক্ষেত্রে সরকারের ভূমিকাই প্রধান গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তবে উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে বাংলাদেশে ঘটেছে এক আজব কাণ্ড। সিলেটের শাহাজাহান লাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগের দাবিতে দীর্ঘদিন ধরেই সেখানে আন্দোলন চলছিল। এবার আন্দোলনে এক নতুন রাস্তা বেছে নিলেন বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া।
বিশ্ববিদ্যালয়ের দেওয়ালে চোখে পড়েছে এক অভিনব নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি। লাল রংয়ের সেখানে লেখা আছে “নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি, ভিসি পদ ফাঁকা আছে।” বৃহস্পতিবারই বিশ্ববিদ্যালয় দেওয়ালের অভিনব বিজ্ঞাপন পড়ুয়াদের চোখে পড়েছে। উপাচার্যের বিরুদ্ধে আন্দোলনকারী ২৪ পড়ুয়ার অনশন সত্ত্বেও, কর্তৃপক্ষের টনক না নড়ায় এই ধরনের বিজ্ঞাপন বলেই মনে করছেন অনেকে।
উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগের দাবিতে এক সপ্তাহ ধরে উত্তাল শাজাহান লাল বিশ্ববিদ্যালয়। বুধবার থেকে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে আমরণ অনশনে বসেছেন ২৪ জন পড়ুয়া। শুক্রবার সকাল অবধি অনশনরত পড়ুয়াদের ১১ জন অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাদের স্থানীয় হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। প্রথম আলোতে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী আন্দোলনকারী নজিবুর রহমান জানিয়েছেন, রবিবার রাতের পর থেকে উপাচার্যকে আর দেখা যায়নি। যেখানে তাঁর পদত্যাগের দাবিতে পড়ুয়ারা অনশন করছে, তার পরেও তিনি গুরুত্ব দিচ্ছেন না। পড়ুয়াদের মৃত্যু হলে তবে কি তিনি বিষয়টিকে গুরুত্ব দেবেন? আন্দোলনকারী আরেক পড়ুয়া জানিয়েছেন “উপাচার্য আন্দোলনকারী পড়ুয়াদের পুলিশ দিয়ে মার খাইয়েছে। এমনকি ছাত্রছাত্রীদের ওপর গুলি চালানো হয়েছে। উপাচার্য হিসেবে আমরা ওনাকে চাইনা। কারণ উনি ছাত্র-ছাত্রীদেরকে ভালোবাসেন না। এমন একজনকে উপাচার্য করা হোক তিনি ছাত্র স্বার্থে কাজ করবেন।”
জানুয়ারি মাসের ১৩ তারিখ থেকে আন্দোলনের সূত্রপাত। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহারের অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের আধিকারিক জাফরি আহমেদের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলনে নামেন পড়ুয়ার। রবিবার বিকেলে পড়ুয়ারা পড়ুয়ারা যখন আইসিটি ভবনে উপাচার্যকে ঘেরাও করেছিলেন তখন পুলিশ ছাত্রছাত্রীদের ওপর লাঠিচার্জ করে। সেদিনই অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করে দেওয়ার ঘোষণা করা হয়। তা সত্য নিজেদের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন ছাত্রছাত্রীরা। ছাত্রছাত্রীদের ওপর পুলিশের লাঠিচার্জ এর প্রতিবাদে ঢাকা, রাজশাহী, খুলনা, এবং বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন পড়ুয়ারা।