ঢাকা: একের পর এক রেকর্ড ভেঙে দিচ্ছে চলতি বছরের গরম। বৈশাখের গোড়াতেই পাঁচ দশকের রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে ঢাকার (Dhaka) তাপমাত্রা। আজ, রবিবার, বাংলাদেশে বাংলা নববর্ষের তৃতীয় দিন। আর শনিবারের মতো এদিনও দুপুর ১টায় ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ৪১.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। শনিবারও ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছিল ৪০.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা ৫৮ বছরের মধ্যে ঢাকায় সর্বোচ্চ।
আবহাওয়া দফতরের পুরোনো রেকর্ড ঘাঁটলে দেখা যায়, ঢাকাবাসী সবচেয়ে উত্তপ্ত দিন অনুভব করেছিল ১৯৬৫ সালের এপ্রিলে। তখন ঢাকার তাপমাত্রা উঠেছিল ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। তার আগে ১৯৬০ সালে ঢাকায় তাপমাত্রা উঠেছিল ৪২.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তারপর ২০১৪ সালের ২২ এপ্রিল অর্থাৎ ৯ বছর আগে ঢাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা উঠেছিল ৪০ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা ছিল পাঁচ দশকে সর্বোচ্চ। তবে এখনও পর্যন্ত বাংলাদেশে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে রাজশাহীতে। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭২ সালের ১৮ মে রাজশাহীতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছিল ৪৫.১ ডিগ্রি সেলসিয়াসে।
তবে বর্তমানে গোটা দেশের মধ্যে রাজধানী ঢাকাতেই তাপমাত্রা পারদ সর্বোচ্চ। এর কারণ খুঁজতে গিয়ে এক সমীক্ষা করেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়। সেই সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, গাছ ও জলাশয় রয়েছে, এমন এলাকার থেকে ঢাকার তাপমাত্রা গড়ে ৪-৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে শীততাপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্রের ব্যবহার। এসব যন্ত্রের ব্যবহার বাড়ার সঙ্গ সঙ্গে বাড়ির বাইরের তাপমাত্রাও বাড়ছে ব্যাপকভাবে। আবহাওয়া বিভাগের হিসাবে, গত ১০০ বছরে দেশের অন্যান্য স্থানের তুলনায় রাজধানীর তাপমাত্রা বেড়েছে দেড় গুণ বেশি। ফলে তাপপ্রবাহও বেড়েছে।
যদিও দাবদাহ বছরের এই সময়ের বৈশিষ্ট্য। বৃষ্টি না হলে এই সময়ে তাপপ্রবাহ বাড়ে। এবার সেভাবে কালবৈশাখী হয়নি। বৃষ্টিপাতও কম হয়েছে। ফলে দাবদাহ ও তার সঙ্গে তাপপ্রবাহ বেড়েছে। তাপপ্রবাহের সঙ্গে দু-তিন দিন ধরে বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ বেড়েছে। ফলে ভ্যাপসা গরম অনুভূত হচ্ছে, অস্বস্তি বেড়েছে। কেবল দিন নয়, রাতের তাপমাত্রাও অনেকটা বেড়েছে। ফলে গরম বেশি অনুভূত হচ্ছে।
আবহাওয়া দফতর সূত্রে খবর, গত ৪ এপ্রিল থেকেই শুরু হয়েছে তাপপ্রবাহ। প্রথমে রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের কিছু জায়গায় তাপপ্রবাহ শুরু হয়েছে। বর্তমানে ঢাকা সহ সারা দেশেই তাপপ্রবাহে নাজেহাল বাংলাদেশবাসী। বৃষ্টি না হওয়া পর্যন্ত তাপপ্রবাহ থেকে রেহাই নেই বলে জানিয়েছেন আবহবিদ হাফিজুর রহমান। তবে কবে বৃষ্টি হবে, সে ব্যাপারে কোনও আশার কথা শোনাতে পারছেন না তিনি।