ঢাকা: বিজয় বা স্বাধীনতার ৫২ বছরে কি পেল বাংলাদেশ? শনিবার বাংলাদেশের ৫৩ তম বিজয় দিবস উদযাপনের পর এমনই প্রশ্ন উঠছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা না পেলেও নিঃসন্দেহে কমেছে দারিদ্র্যের হার। গড় আয়ু, মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি ছাড়াও অর্থনীতির নানা সূচকে উল্লেখযোগ্য সাফল্য পেয়েছে এই দেশটি। ২০৪১ সাল নাগাদ বাংলাদেশকে উন্নত দেশ হিসাবে গড়ার পরিকল্পনা নিয়েছে হাসিনা সরকার। তবে আগামী বছর থেকে ধনী-দরিদ্র বৈষম্য ও দুর্নীতি কমানোই বড় চ্যালেঞ্জ বাংলাদেশের।
বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির দিকে লক্ষ্য করলে দেখা যায়, করোনা মহামারি আর ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের মতো বৈশ্বিক সংকট সামাল দিয়ে অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রা ঠিকই ধরে রেখেছে বাংলাদেশ। অর্থনীতিবিদদের মতে, আর্থ-সামাজিক খাতে উন্নতি করেছে এই দেশ। গত এক দশকে অর্থনীতির বেশ কিছু সূচকেই এগিয়ে গিয়েছে বাংলাদেশ। এই ধারা অব্যাহত রাখতে হিংসা ও ধ্বংসের রাজনীতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে বলেও মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে ব্যক্তিগত দুর্নীতি উন্নয়নের বড় বাধা বলেও জানিয়েছেন তাঁরা। তবেই ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ একটি স্থানে পৌঁছতে পারবে।
হাসিনা সরকারের দাবি, এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। বিশেষজ্ঞদের মতে, বাংলাদেশ এগিয়ে যাওয়ার পথে বড় প্রতিবন্ধকতা সাম্প্রদায়িকতা ও সন্ত্রাসবাদ। তবে সেটা ইতিমধ্যে নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে বলেও দাবি বাংলাদেশের বর্তমান সরকারের। হাসিনা সরকারের মুখপাত্র ও আওয়ামী লিগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, “মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে আমরা যে বাংলাদেশ পেয়েছি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে তা এগিয়ে যাচ্ছে। আজ আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশের পর স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ছি। আগামী দিনে এই অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকবে।” ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, “একটা ভিশন নিয়ে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, তবে অগ্রগতি-সমৃদ্ধির পথে প্রতিবন্ধকতা সাম্প্রদায়িকতা ও সন্ত্রাসবাদ। দেশে যে অপশক্তি নির্বাচনের বিরোধিতা করছে ও গণতান্ত্রিক রাজনীতির পথে অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে, এরা শুধু সাম্প্রদায়িকতা কায়েম করতে চায় না, দেশের রাজনীতি ধ্বংস করাই এদের মূল লক্ষ্য।” এর বিরুদ্ধে লড়াইয়ের অঙ্গীকার করে হাসিনা সরকার ও আওয়ামী লিগের তরফে তিনি বলেন, “এই অপশক্তিকে রুখব এটাই আজকের দিনের অঙ্গীকার। অসাম্প্রদায়িক রাজনীতি-বিরুদ্ধ শক্তিকে প্রতিহত করব,পরাজিত করব।”
প্রসঙ্গত, যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশ ১৯৭১ সালে ছিল দক্ষিণ এশিয়ার দরিদ্র দেশগুলির একটি। নানা সময়ে বাংলাদেশকে তলাবিহীন ঝুড়ি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নানা উদ্যোগে বিজয়ের মাত্র সাড়ে তিন বছরে দেশের মাথাপিছু আয় ৯৪ থেকে বেড়ে ২৭৮ ডলারে উন্নীত হয়। জিডিপি প্রবৃদ্ধি ছাড়ায় নয় শতাংশ। এবার বিজয়ের ৫৩ বছরে মাথাপিছু আয় বেড়ে হয়েছে ২ হাজার ৭৬৫ ডলার। মোট জাতীয় উৎপাদনের লক্ষ্য ৭.৫০ শতাংশ। স্বাভাবিকভাবেই দেশ এখন ধারাবাহিক উন্নয়নের পথে। এখন খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। পদ্মা সেতু, বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনাল, টানেল-সহ অত্যাধুনিক পরিকাঠামো নির্মাণ হয়েছে, এমনকি মেট্রোরেলের যুগে এসে পৌঁছেছে বাংলাদেশ।