লন্ডন: আর্থিক সঙ্কটে ধুঁকছে ব্রিটেন। নতুন প্রধানমন্ত্রীর সামনে সবথেকে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল দেশের অর্থনীতির হাল ফেরানো। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণের পর প্রথম মিনি বাজেট পেশ করেই দলের রোষের মুখে পড়েছিলেন লিজ ট্রাস। গদি থেকে অপসারণ করার আগেই তড়িঘড়ি তিনি ইস্তফা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে। মাত্র ৪৫ দিনের জন্য ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন লিজ ট্রাস। ব্রিটেনের সবথেকে স্বল্প মেয়াদের প্রধানমন্ত্রী তিনিই। কিন্তু তাতে কী, মাত্র ৪৫ দিনের প্রধানমন্ত্রী হয়েও বিপুল আর্থিক ভাতা পাবেন লিজ ট্রাস। আর্থিক ভাতার অঙ্কটাও কম নয়, প্রতি বছর তিনি ১ লক্ষ ১৫ হাজার পাউন্ড, ভারতীয় মুদ্রায় যার পরিমাণ ১ কোটি টাকারও বেশি পাবেন।
ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার ৬ সপ্তাহের মধ্যেই, গত বৃহস্পতিবার ইস্তফা দেন লিজ ট্রাস। পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী কে হবেন, তা জানা যাবে আগামী সপ্তাহেই। কিন্তু বর্তমানে সবথেকে বেশি চর্চায় প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফার পর লিজ ট্রাসের জীবন। ব্রিটেনের নিয়ম অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রী অবসর গ্রহণের পরও আজীবন একটি আর্থিক ভাতা পান। লিজ ট্রাসও তার থেকে ব্রাত্য হবেন না। প্রত্যেক বছর তিনি ১ লক্ষ ১৫ হাজার পাউন্ড পাবেন। ভারতীয় মুদ্রায় এর অঙ্ক ১ কোটি ৬ লক্ষ ৩৬ হাজার ৪৬৩ টাকা।
করদাতাদের বোঝা কমানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েই ক্ষমতায় এসেছিলেন লিজ ট্রাস। সেই বোঝা কমাতে তো ব্যর্থ হলেনই, একইসঙ্গে এবার সাধারণ করদাতাদের টাকা থেকেই বার্ষিক ভাতা পাবেন তিনি। দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্টের প্রতিবেদন অনুযায়ী, জনসাধারণের করের টাকা থেকেই পাবলিক ডিউটি কস্ট অ্যালাওয়েন্স হিসাবে প্রত্যেক বছর মোটা অঙ্কের টাকা পাবেন লিজ ট্রাস।
ব্রিটেন সরকারের নিয়ম অনুযায়ী, জনগণের প্রতি দায়িত্ব পালনের জন্য ও প্রধানমন্ত্রী-পরবর্তী জীবন স্বাচ্ছন্দ্যে কাটানোর জন্যই এই আর্থিক ভাতা দেওয়া হয়। ১৯৯১ সাল থেকে এই নিয়ম চালু রয়েছে। ১৯৯০ সালে মার্গারেট থ্যাচার প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার পর, পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী জন মেয়র ১৯৯১ সালের মার্চ মাসে এই নিয়ম ঘোষণা করেন। তারপর থেকে ব্রিটেনের একাধিক প্রধানমন্ত্রীই এই আর্থিক সুবিধা নিয়েছেন।
বর্তমানে মোট ৬ জন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী এই আর্থিক ভাতা পান। সেই তালিকাতেই এবার অন্তর্ভুক্ত হচ্ছেন লিজ ট্রাসও। অর্থাৎ ৭ প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর আর্থিক অনুদানের জন্য করদাতাদের প্রত্যেক বছর ৮ লক্ষ পাউন্ড দিতে হবে।