লন্ডন: বসকে নিয়ে সন্তুষ্ট, এই বিশ্বে এমন লোকের সংখ্যা হাতে গোনা। হয়তো কেউ ভাবছে সে তার কর্মদক্ষতা দিয়ে কাজের ক্ষেত্রে উন্নতি করবে। আর পিছন থেকে তাঁকে টেনে ধরলেন তাঁর বস। এমন ঘটনা প্রায়শই ঘটে থাকে। এই অবস্থায় বসের উপর কীভাবে প্রতিশোধ নেওয়া যায়? ব্রিটেনের এক শেফ বা রাঁধুনি এক অভিনব উপায় নিলেন। যদিও তার জেরে এখন তাঁকে জেলের ঘানি টানতে হবে।
ঘটনাটি ইংল্যান্ডের লিঙ্কনশায়ার কাউন্টির একটি পাবের। ছুটির দিনেও কাজ করেছিলেন রাঁধুনি টম উইলিয়ামস। তাঁর ধারণা ছিল ছুটির দিনে কাজ করলে, তার জন্য তাঁকে মোটা অঙ্কের বাড়তি বেতন দেওয়া হবে। কিন্তু, তাঁর হাতে ধরিয়ে দেওয়া হয়েছিল মাত্র ১০,০০০ টাকা। এই নিয়ে ২০২২ সালের ১১ অক্টোবর বসের সঙ্গে তাঁর তুমুল তর্ক-বিতর্ক হয়। দুই দিন পরে, হতাশ শেফ টম উইলিয়াম পাবে ফিরে এসেছিলেন। তাঁর সঙ্গে ছিল একটি বয়াম। তাতে ভরা ছিল গাদা গাদা আরশোলা। সেই আরশোলা তিনি পাবের রান্নাঘরে ছেড়ে দেন।
এরপর, পাবটিকে আরশোলা মুক্ত করতে বিস্তর কাঠড় পোড়াতে হয় পাব কর্তৃপক্ষকে। জায়গাটি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পরিষ্কার করার জন্য পরিবেশগত স্বাস্থ্য এবং কীটপতঙ্গ নিয়ন্ত্রণ বিভাগকে ডাকতে হয়। বেশ কয়েকদিন পাবটি বন্ধ রাখতে হয়। আরশোলা সমস্যা দূর করতে পাবটির মোট খরচ হয় প্রায় ২২ লক্ষ টাকা। এরপরই টমের বিরুদ্ধে মামলা করেছিল পাব কর্তৃপক্ষ। লিঙ্কন ক্রাউন কোর্টে ২৫ বছরের টমের বিরুদ্ধে পাবের রান্নাঘরে ‘আরশোলা বোমা’ ফেলার অভিযোগ আনা হয়।
গত ২১ নভেম্বর এই মামলার শুনানি ছিল, কিন্তু টম আদালতে হাজিরা দেননি। ২৮ নভেম্বর পাবটির ক্ষতি করা-সহ চুরির গায়ে টমকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। সম্প্রতি তাঁর সাজা ঘোষণা করা হয়েছে। বিচারক তাঁকে সতেরো মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন। এছাড়াও, তাঁকে মোট ২০০ ঘন্টা অবৈতনিক কমিউনিটি সার্ভিস দিতে হবে। পাব কর্তৃপক্ষের আইনজীবীর মতে, বিরোধের সঙ্গত কারণ থাকলেও, টমের প্রতিশোধ নেওয়ার পন্থাটি ছিল ভুল। তাঁর মনে যে ক্ষোভ জন্মেছিল, তা প্রশমনে তিনি ভুল সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। আর বিচার প্রক্রিয়ায় অংশ না নেওয়া তাঁর আরও বড় ভুল।