বেজিং: শি-জিনপিং সরকারের কঠোর ‘শূন্য কোভিড নীতি’র বিরুদ্ধে গণ বিক্ষোভে কেঁপে উঠেছে চিন। তবে, এই বিক্ষোভকে ধামাচাপা দিতে সেই দেশের পুলিশ কঠোর দমনপীড়নের পথ গ্রহণ করেছে বলে অভিযোগ। মার্কিন সংবাদ প্রতিবেদনগুলির মতে চিনা পুলিশ নাগরিকদের ফোন নিয়ে পরীক্ষা করছে। দেখছে, তারা টুইটার, ইনস্টাগ্রাম, ফেসবুকের মতো সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলি ব্যবহার করছে কি না। কড়া সেন্সরশিপের কারণে চিনা জনতা তাদের দেশের সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলিতে কোনও প্রতিবাদ ব্যক্ত করতে পারছে না। তাই, টুইটার, ইনস্টাগ্রামের মতো প্ল্যাটফর্মগুলি তারা বেছে নিচ্ছে বিক্ষোভের ভিডিয়ো পোস্ট করার জন্য। চিন সরকারের বিরুদ্ধে তাদের প্রতিবাদ তুলে ধরার জন্য।
বেশ কয়েকটি মার্কিন সংবাদ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চিনা কর্তৃপক্ষ আচমকা কোনও কোনও পথচারীর রাস্তা আটকাচ্ছে। তাদের ফোন নিয়ে দেখছে টুইটার, ইনস্টাগ্রামের মতো অ্যাপ আছে কি না। খুঁজে পেলে ওই ব্যক্তির বিশদ তথ্য লিখে রাখা হচ্ছে। বস্তুত, গত কয়েকদিনে বিক্ষোভকারীরা চিনের কোভিড-১৯ নিষেধাজ্ঞা অমান্য করছেন, এমন বেশ কিছু ভিডিয়ো টুইটার, ফেসবুক বা ইনস্টাগ্রামে ছড়িয়ে পড়েছে। কারা সেই ভিডিয়োগুলি ছড়াচ্ছে, তাদের চিহ্নিত করতে চাইছে চিন সরকার। এক ইউরোপীয় সাংবাদিক টুইটারে দাবি করেছেন, কেউ ফোন দিতে না চাইলে পুলিশ তাদের বিষয়ে রিপোর্ট করার হুমকি দিচ্ছে। তাঁর মতে, যে কোনও সময় যে কোনও জায়গায় ফোন পরীক্ষা করা হচ্ছে৷
প্রায় এক দশক আগে ক্ষমতায় এসেছিলেন বর্তমান চিনা রাষ্ট্রপতি শি জিনপিং। সম্প্রতি তিনি ক্ষমতায় তাঁর মুঠি আরও শক্ত করেছেন। আর সেই সময়ই চিনের মূল ভূখণ্ডে সরকার বিরোধিতার, আইন অমান্য করার সবথেকে বড় তরঙ্গ দেখা যাচ্ছে। ক্ষোভের মূল কারণ, চিন সরকারের কঠোর কোভিড নিষেধাজ্ঞা। দীর্ঘদিন ধরে যা চলে আসছে, এবং ক্ষতির মুখে পড়ছেন সাধারণ মানুষ। সম্প্রতি সেই দেশে দৈনিক কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা রেকর্ড সংখ্যায় বেড়েছে। তাতে নতুন করে বেশ কয়েকটি শহরে লকডাউন জারি করা হয়েছে। এর ফলে ক্ষোভের, হতাশার আগুনে ঘি পড়েছে। অনেকেই এই বিক্ষোভকে ১৯৮৯ সালের গণতন্ত্রকামী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে তুলনা করছেন।