বেজিং: ভারতের হাজারো আপত্তি সত্ত্বেও শ্রীলঙ্কার হামবানতোতা বন্দরে নোঙর ফেলেছে চিনের অত্যাধুনিক জাহাজ। এই জাহাজ গুপ্তচরবৃত্তি করতেই এসেছে, এমনটাই সন্দেহ ভারতের। সেই কারণেই জাহাজটি শ্রীলঙ্কা পৌঁছনোর আগেই আপত্তি জানিয়েছিল ভারত। কিন্তু সেই দাবিকে নস্যাৎ করেই মঙ্গলবার চিনের তরফে জানানো হয়, তাদের উন্নত প্রযুক্তির রিসার্চ জাহাজ কোনও দেশের নিরাপত্তাকে প্রভাবিত করবে না। কোনও তৃতীয় পক্ষ যাতে বাধা দেওয়ার চেষ্টা না করে, সেই কথাও জানানো হয়েছে জিনপিং সরকারের তরফে।
চলতি সপ্তাহেই শ্রীলঙ্কার হামবানতোতা বন্দরে নোঙর করে উয়ান ওয়াং ৫ নামক চিনের জাহাজ। চিনের দাবি, অত্যাধুনিক স্যাটেলাইটযুক্ত এই জাহাজটি ভারত মহাসাগরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা খতিয়ে দেখতে আসছে। ১৭ অগস্ট অবধি শ্রীলঙ্কার হামবানতোতা বন্দরেই ওই জাহাজের থাকার কথা। এই জাহাজের শ্রীলঙ্কায় আসা নিয়েই উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল ভারত। পাশে দাঁড়িয়েছিল আমেরিকাও। তারাও এই জাহাজের আগমনকে সন্দেহজনক বলে জানানো হয়েছে।
মঙ্গলবার চিনের বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবিন জানান, উইয়ান ওয়াং ৫ জাহাজটি শ্রীলঙ্কার সহযোগিতায় সফলভাবে হামবানতোতা বন্দরে নোঙর করেছে। শ্রীলঙ্কায় থাকা চিনা রাষ্ট্রদূত কুই জ়েনহং তাদের স্বাগত জানিয়েছেন। উপস্থিত ছিলেন প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমসিঙ্ঘের পাঠানো প্রতিনিধিও। চিনের এই আধুনিক প্রযুক্তির জাহাজ কোনও দেশের নিরাপত্তা ও আর্থিক ব্যবস্থাকে প্রভাবিত করবে না। কোনও তৃতীয় পক্ষেরও উচিত নয় এই জাহাজের কাজে বাধা সৃষ্টি করা।
উল্লেখ্য, আর্থিক সঙ্কটে ডুবে থাকা শ্রীলঙ্কার হামবানতোতা বন্দরটি ২০১৭ সালেই ৯৯ বছরের জন্য লিজ নেয় চিনের একটি সংস্থা। ফলে এই বন্দরে চিনের জাহাজের আসা আটকানো খুব একটা সহজ নয় শ্রীলঙ্কার পক্ষে। একইসঙ্গে চিনের কাছ থেকে বিপুল অঙ্কের ঋণ নিয়েছে শ্রীলঙ্কা। চলতি বছরের মধ্যেই সেই ঋণ পরিশোধ করার কথা বললেও, শ্রীলঙ্কা নিজেকে ঋণখেলাপী বলে ঘোষণা করে দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে শ্রীলঙ্কা যদি চিনকে চটায়, তবে কড়া মাশুল চোকাতে হতে পারে তাদের। সেই কারণেই ঝুঁকি নিতে রাজি নয় শ্রীলঙ্কা।
এদিকে, চিনা জাহাজের শ্রীলঙ্কায় আসা নিয়ে ভারতের আপত্তি, কারণ এই জাহাজে অত্যাধুনিক স্যাটেলাইট রয়েছে, যা দূর থেকেই মিসাইলের অবস্থান জানতে সক্ষম। ওড়িশার উপকূলে ভারত যে মিসাইল পরীক্ষা করে, তার উপরে শ্রীলঙ্কার বন্দর থেকেই নজর রাখতে পারবে চিনা গুপ্তচর জাহাজ।