তাইওয়ান: বেজিংয়ের চোখ রাঙানিকে গুরুত্ব না দিয়েই তাইওয়ান সফরে গিয়েছেন মার্কিন স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি। তা নিয়ে চরম ক্ষুব্ধ চিন। পেলোসির তাইওয়ানে পা রাখার পরই বেজিংয়ের মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে সমন পাঠাল চিনা সরকার। চিনের স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, বারবার না করা সত্ত্বেও মার্কিন স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি তাইওয়ান সফরে এসেছেন। এই ঘটনার তীব্র নিন্দা ও সমালোচনা করার জন্যই মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে তলব করেছে বেজিং।
চিনের সরকার পরিচালিত সংবাদমাধ্যম শিনহুয়ায় সে দেশের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বলেন, “আমেরিকার এই পদক্ষেপ অত্যন্ত জঘন্য এবং এর প্রভাব অত্যন্ত গুরুতর হবে। এবার চিনও চুপচাপ বসে থাকবে না। আমেরিকাকে নিজের ভুলের মাশুল দিতেই হবে।”
শুধু এইটুকুই নয়, মার্কিন সরকারকে হুঁশিয়ারি দিয়ে জিনপিং আরও বলেন, “দ্রুত নিজেদের ভুল স্বীকার করা উচিত ওয়াশিংটনের এবং ন্যান্সি পেলোসির তাইওয়ান সফরের কারণে যে ব্যাপক বিরূপ প্রভাব পড়েছে, তা ফের স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে ফিরিয়ে আনার জন্য বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।”
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবারই তাইওয়ান সফরে এসেছেন মার্কিন স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি। মার্কিন হাউস অব রিপ্রেজ়েন্টেটিভস-এর স্পিকারের এই সফর নিয়ে বেজায় চটে চিন। বিগত ২৫ বছরে এই প্রথম তাইওয়ানে কোনও উচ্চ পর্যায়ের মার্কিন দূত সফরে এলেন। দুই ক্ষমতাশীল দেশের মধ্যে দীর্ঘ সময় ধরেই ক্ষমতার তীব্র প্রতিযোগিতা চলছে, এই সফর তার মাত্রা আরও কয়েক গুণ বাড়িয়ে দিয়েছে।
গতকাল তাইওয়ানে ন্যান্সি পেলোসি পা রাখতেই, ২০টি চিনা সামরিক বিমান তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা সীমা পার করে ঢুকে পড়ে বলে জানা গিয়েছে। বিমান হামলার আতঙ্কে নিভিয়ে দেওয়া হয় বিমানবন্দরের আলো। মোবাইল ও টর্চের আলোতে স্বাগত জানানো হয় পেলোসিকে। সংবাদ সংস্থা সূত্রে খবর, ন্যান্সি ও সঙ্গীদের সফর শুরুর আগেই তাইওয়ানের আকাশসীমায় অন্তত ২০টিরও বেশি চিনা ফাইটার জেট অনুপ্রবেশ করে।
এদিকে, পেলোসিকে নিরাপত্তা দিতে জাপানের বিমানঘাঁটি থেকে তাইওয়ানে উড়ে এসেছে আমেরিকার বায়ুসেনার বেশ কয়েকটি ফাইটার জেট। তাইওয়ানের পূর্বে মোতায়েন করা হয়েছে চারটি যুদ্ধজাহাজও। এরমধ্যে একটিতে আবার রয়েছে যুদ্ধবিমানও। এই যুদ্ধজাহাজগুলো সব ধরনের আক্রমণ ঠেকাতে সক্ষম বলে জানানো হয়েছে হোয়াইট হাউস সূত্রে।