বেজিং: করোনা মহামারির একেবারে শুরু থেকে ‘জ়িরো টলারেন্স’ নীতি নিয়ে এগিয়েছে চিন। এর ফলে করোনার দাপটে বিশ্ব যখন জুবুথুবু, তখন কোভিড নিয়ন্ত্রণে বেজিং অনেকটাই সফল। কিন্তু করোনার চতুর্থ ঢেউ মোকাবিলা করতে গিয়ে আরও কড়াকড়ি হতে দেখা গেল জিনপিং সরকারকে। নাগরিকদের মানবাধিকার লঙ্ঘনের মতো ঘটানো হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। ন্যাশনাল রিভিউ নামে এক মার্কিন ম্যাগাজিনের রিপোর্টে আরও বিস্ফোরক তথ্য সামনে এসেছে। করোনা রুখতেই নাকি নাগরিকদের খাঁচায় বন্দি করে রাখছে বেজিং।
সোশাল মিডিয়ায় বেশ কিছু ভিডিয়ো ফাঁস হয়েছে। সেই সব ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে, সাদা পোশাক পরিহিত সরকারের ‘মহামারি নিয়ন্ত্রকরা’ চিনা নাগরিকদের ইচ্ছামতো তুলে নিয়ে যাচ্ছে কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে, কিংবা লোহার পাত দিয়ে তাঁদের বাড়ির দরজা সিল করে বন্দি করা হচ্ছে। অস্থায়ী কোয়ারেন্টাইন সেন্টারগুলিতে বর্তমানে হাজার হাজার চিনা নাগরিকদের আটকে রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ। একই ছাদের তলায় এক সঙ্গে রয়েছেন নারী, পুরুষ, শিশু, বৃদ্ধ – সকলেই। পর্যাপ্ত জল ও খাবার নেই বলে অভিযোগ।
এই অবস্থায় ক্রমশই সরকারের বিরুদ্ধে সুর চড়াচ্ছেন চিনা নাগরিকরা। ‘ভয়েস অব এপ্রিল’ নামে একটি ভিডিয়ো প্রকাশ করে মহামারি নিয়ন্ত্রণের নামে নাগরিকদের প্রতি চিন সরকারের এই চরম অমানবিক আচরণের কথা তুলে ধরেছেন সাংহাই শহরের বাসিন্দারা। কড়া সেন্সরশিপের মধ্যেও, সেই ভিডিয়ো এখন সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল। সাংহাই শহরের এক ব়্যাপ সঙ্গীত শিল্পী ‘নিউ স্লেভ’ (বাংলায় তর্জমা করলে দাঁড়ায় ‘নয়া ক্রীতদাস’) নামে একটি সঙ্গীতে জিনপিং সরকারের এই ক্ষমতার অপব্যবহারের বিষয়টি তুলে ধরেছেন। সরকারের এই দমন পীড়নের প্রতিবাদ করতে চিনারা অস্ত্র করছেন তাঁদের জাতীয় সঙ্গীতের অমোঘ পঙক্তি, ‘ক্রীতদাস হতে না চাইলে জেগে ওঠো’।
এই প্রতিবাদী কন্ঠগুলি বন্ধ করতে উঠে পড়ে লেগেছে চিন সরকার। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া ভিডিয়োগুলি নিয়ন্ত্রণ করার জন্য যারপরনাই চেষ্টা চালানো হচ্ছে। এমনকী, সরকার বিরোধী প্রতিবাদ থামাতে, বাধ্য হয়ে জাতীয় সঙ্গীত গাওয়ার উপরেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।