ঢাকা: ঘূর্ণিঝড় রেমালের তাণ্ডবে বাংলাদেশে প্রাণ গিয়েছে ১৬ জনের। সাড়ে ৩৭ লক্ষ বাড়ি মাটিতে মিশে গিয়েছে। লক্ষ-লক্ষ মানুষ এখনও বিদ্যুতহীন। তবে, শুধু মানুষেরই নয়, ঘূর্ণিঝড়ে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে বাংলাদেশের প্রাণীকূল এবং প্রকৃতিরও। বাংলাদেশ বনবিভাগ জানিয়েছে, রেমালের দাপটে মৃত্যু হয়েছে সুন্দরবন এলাকার বহু হরিণের। এখনও পর্যন্ত শুধু কটকা এলাকা থেকেই ৩০টি হরিণের মৃতদেহ উদ্ধার করেছে বনবিভাগ। এখনও জঙ্গল জুড়ে তল্লাশী চলছে। মৃত হরিণের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এছাড়া, ঝড়ে সুন্দরবনের অভ্যন্তরে ২৫টি বাংলাদেশি টহলদার ফাঁড়িরও ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন, খুলনা এলাকার বন সংরক্ষক, মিহির কুমার দে। ৮ থেকে ১০ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে তলিয়ে গিয়েছে পুকুরগুলি। পুকুরে জলে মিশে গিয়েছে সমুদ্রের লবণাক্ত জল। লোনা জল মেশায়, বনকর্মীদের পাশাশাশি পানীয় জলের সংকটে পড়েছে বাঘ, হরিণ-সহ বন্যপ্রাণীরাও। মিহির কুমার দে-র মতে, শুধু হরিণ নয়, বন বিভাগের তল্লাশিতে আরও অনেক মৃত বন্যপ্রাণ উদ্ধারের সম্ভাবনা রয়েছে।
ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে গাছপালারও। ক্ষতি হয়েছে বনবিভাগের বিভিন্ন অফিস, টহলদারী নৌকো, টিনের চাল, জানালা-দরজা, সোলার প্যানেল ও বন দফতরের পরিকাঠামোর। ঝড়-জ্বলোচ্ছাসে কটকা অভয়াণ্যের অফিস ঘাটের জেটি ও পুকুর বঙ্গোপসাগরের গর্ভে বিলিন হয়ে গিয়েছে। দুবলা, কটকা, কচিখালি, বগি-সহ ২৫টি টহলদার ফাঁড়ির টিনের চালা উড়ে গিয়েছে।
ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে পূর্ব সুন্দরবনের করমজল বন্যপ্রাণ প্রজনন ও পর্যটন কেন্দ্রও। সেখানকার কর্তা হাওলাদার আজাদ কবির জানিয়েছেন, “ঘূর্ণিঝড় রিমালের তাণ্ডবে এখানকার পর্যটক চলাচলের কাঠের সেতুটি ভেঙে গিয়েছে। উপরে গিয়েছে অসংখ্য গাছপালা। তবে গাছপালা-সহ পুরো সুন্দরবনের কী পরিমান ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তা এখনই নিশ্চিত করে বলা সম্ভব নয়।”