লন্ডন: আয়ু আর মেরেকেটে তিন বছর। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে নাকি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন তাঁর চিকিৎসকরা। ‘দ্য মিরর’ পোর্টালের এক প্রতিবেদনে এমনটাই দাবি করা হয়েছে। তাদের দাবি, রুশ গুপ্তচর সংস্থা ‘এফএসবি’-র এক গোপন সূত্রে এই তথ্য তারা জানতে পেরেছে। বিগত বেশ কয়েক মাস ধরেই রুশ প্রেসিডেন্টের স্বাস্থ্য নিয়ে বেশ কিছু জল্পনা ছড়িয়েছে। ব্লাড ক্যান্সার -সহ বেশ কয়েকটি গুরুতর রোগে ভুগছেন পুতিন, বেশ কিছু সংবাদ প্রতিবেদনে এমন দাবি করা হয়েছে। ইউক্রেনের সামরিক গোয়েন্দা প্রধান মেজর জেনারেল কিরিলো বুদানভ আবার দাবি করেছেন, তাঁকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য রাশিয়ায় ষড়যন্ত্র চলছে। এরই মধ্যে নতুন করে আলোড়ন তৈরি করেছে ‘দ্য মিরর’ পোর্টালের এই প্রতিবেদন।
রুশ গুপ্তচর সংস্থা এফএসবি ছেড়ে প্রাণভয়ে এখন ব্রিটেনে আশ্রয় নিয়েছেন প্রাক্তন এফএসবি কর্তা বরিস কার্পিচকভ। মিররের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে কার্পিচকভের কাছে সম্প্রতি এক গোপন বার্তায় পুতিনের স্বাস্থ্য সম্পর্কে কিছু গুরুতর তথ্য দিয়েছেন এক এফএসবি এজেন্ট। সে বলেছে, ৬৯ বছর বয়সী পুতিনের শারীরিক অবস্থার ক্রমশ অবনতি হচ্ছে। তাঁর শরীরে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে ক্যান্সার। ক্রমে তা গুরুতর আকার নিয়েছে। সে আরও দাবি করেছে, ভ্লাদিমির পুতিনের দৃষ্টিশক্তিরও নাকি মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে। কিন্তু, তিনি কিছুতেই চশমা পরতে চাইছেন না। কারণ তিনি ভয় পাচ্ছেন, চশমা পরা মানে নিজের দুর্বলতাকে স্বীকার করে নেওয়া। তাঁর অঙ্গ-প্রত্যঙ্গও এখন অনিয়ন্ত্রিতভাবে কাঁপছে বলে দাবি করা হয়েছে। আর এই শারীরিক অসুস্থতার কারণেই ‘অনিয়ন্ত্রিত ক্রোধ’ প্রকাশ করছেন অধস্তন কর্মীদের উপর।
অন্যদিকে, ‘ডেইলি মেইলের’ এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘জেনারেল এসভিআর’ নামে এক টেলিগ্রাম চ্যানেল থেকেও পুতিনের স্বাস্থ্যের ক্রমাবনতির খবর ফাঁস করা হচ্ছে। ডেইলি মেইলের দাবি, ক্রেমলিন থেকেই ওই টেলিগ্রাম চ্যানেল পরিচালনা করা হয়। ‘জেনারেল এসভিআর’-এর দাবি, চলতি মাসেই পুতিন ক্যান্সারের অস্ত্রোপচার করিয়েছেন এবং তা সফল হয়েছে। চিকিত্সকরা তাঁকে জানিয়েছিলেন, অস্ত্রোপচার ‘অত্যাবশ্যক’। তাঁদের পরামর্শ মেনে তিনি সুস্থ হয়ে উঠছেন।
গত ফেব্রুয়ারি মাসের শেষে, ইউক্রেনে রুশ সামরিক অভিযান শুরু হয়েছিল। সেই সময় থেকেই, বিশেষ করে পশ্চিমী দেশে ভ্লাদিমির পুতিনের শারীরিক অবস্থা নিয়ে জোর চর্চা চলছে। একাধিক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে যে, তাঁর চেহারাতেই অসুস্থতার ছবিটা ধরা পড়ছে। এমনকি, ইউক্রেনে হামলার পিছনেও এই অসুস্থতার বড় ভূমিকা রয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে। ক্যান্সারের পাশাপাশি, সোশ্যাল মিডিয়ায় পুতিনের পারকিনসনস রোগ হওয়ার জল্পনাও উসকে উঠেছে। বিশেষ করে বেলারুশের নেতা আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কো-কে, পুতিনের স্বাগত জানানোর বেশ কয়েকটি ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়েছিল। ভিডিওগুলিতে, পুতিনের শরীর অস্বাভাবিকভাবে কাঁপতে দেখা গিয়েছিল। ভাইরাল হয়েছে রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রী সের্গেই শোইগুর সঙ্গে তাঁর ভিডিয়ো বৈঠকও। ১২ মিনিটের মিটিং-এর পুরো সময়টায়, পুতিনকে শক্তভাবে টেবিল আঁকড়ে বসে থাকতে দেখা গিয়েছিল।