প্যারিস: করোনা সংক্রমণের তৃতীয় ঢেউ সামলাতে বাধ্য হয়েই লকডাউনের পথে হাঁটলেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইম্যানুয়েল ম্যাক্রঁ(Emmanuel Macron)। বুধবার, ৩১ মার্চ তিনি দেশজুড়ে তৃতীয় লকডাউন(Lockdown)-র ঘোষণা করেন। আগামী এক মাসের জন্য সম্পূর্ণ লকডাউন ঘোষণা করা হল ফ্রান্সে (France)।
ফেব্রুয়ারি মাস থেকেই ফ্রান্সে দৈনিক সংক্রমণ ৪০ হাজারের গণ্ডি পার করছে। অতিরিক্ত আক্রান্তের সংখ্যায় হাসপাতালগুলিতে রোগী উপচে পড়ছে। গত বছরের শেষভাগ থেকেই লকডাউনের জল্পনা শুরু হলেও তা যথাসম্ভব এড়িয়ে চলারই চেষ্টা করছিলেন প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রঁ। গতকাল তিনি লকডাউনের ঘোষণা করে বলেন, “যদি আমরা এখনই কোনও পদক্ষেপ না করি, তবে আগামিদিনে পরিস্থিতি আমাদের নিয়ন্ত্রণে থাকবে না।”
প্রেসিডেন্ট জানান, এই সপ্তাহের শেষভাগ থেক্ আগামী তিন সপ্তাহের জন্য দেশের সমস্ত স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকবে। একইসঙ্গে টিকাকরণে গতি আনা এবং হাসপাতালের চিকিৎসা পরিষেবাকে আরও শক্তিশালী করার উপর জোর দেন তিনি। ম্যাক্রঁ জানান, বর্তমানে করোনা রোগীদের চিকিৎসার জন্য ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটের সংখ্যা ৫ হাজার থেকে বাড়িয়ে ১০ হাজার করা হবে।
করোনা টিকাকরণ কর্মসূচি নিয়ে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট বলেন, “এপ্রিলের মাঝামাঝি সময় থেকেই ষাটোর্ধ্ব ব্যক্তিরা করোনা টিকা নিতে পারবেন। যাদের বয়স ৫০-র বেশি, তাঁরা আরও এক মাস বাদে, অর্থাৎ মে মাস থেকে করোনার টিকা পাবেন। আমাদের লক্ষ্য জুনের মাঝামাঝি সময় থেকে ৩ কোটি মানুষকে করোনা টিকা দেওয়া।”
লকডাউনে অর্থনীতিতে ব্যপক প্রভাব পড়লেও করোনামুক্তির এটিই একমাত্র পথ বলে জানান প্রেসিডেন্ট। তিনি বলেন, “এপ্রিল মাস জুড়ে লকডাউন জারি থাকবে এবং করোনা টিকাকরণেও গতি আনা হবে। এই প্রক্রিয়া অনুসরণ করেই আমরা মে মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে ফের ধীরে ধীরে সমস্ত পরিষেবা চালু করতে পারব বলেই আশাবাদী।”
স্কুল-কলেজ বন্ধ রাখার পাশাপাশি ফ্রান্সের অভ্যন্তরে ভ্রমণেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। একইসঙ্গে আগামী চার সপ্তাহের জন্য সমস্ত অনাবশ্যকীয় দোকান বন্ধ থাকবে বলেও জানান প্রেসিডেন্ট। তবে সামনেই ইস্টার উরসব থাকায় দেশবাসীর যাতায়াতে কিছুটা ছাড় দেওয়া হয়েছে।
লকডাউনের ঘোষণা করে ইম্যানুয়েল ম্যাক্রঁ বলেন, “শনিবার থেকে আগামী চার সপ্তাহের জন্য লকডাউন জারি করা হচ্ছে। তবে ১০ কিলোমিটারের মধ্যে যাতায়াতে কোনও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হচ্ছে না। সন্ধে সাতটা থেকে ভোর ৬টা অবধি কার্ফু চলাকালীন ১০ কিলোমিটারের মধ্যে যাতায়াতের জন্য একটি বিশেষ সার্টিফিকেট দেখাতে হবে।”