মস্কো: আংশিক সেনা সংহতকরণের কথা ঘোষণা করেছেন ভ্লাদিমির পুতিন। আর তারপর থেকেই রুশ জনতার মধ্য়ে হুড়োহুড়ি পড়ে গিয়েছে। যে কোনও উপায়ে তাঁরা সেনা বাহিনীতে যোগদান ঠেকাতে চাইছেন। অনেকেই দেশ ছেড়ে অন্যত্র পালানোর পরিকল্পনা করেছেন। তবে, কেউ কেউ আরও চরম পদক্ষেপ নিচ্ছেন। এবার এক ভাইরাল হওয়া ভিডিয়োতে দেখা গেল এক ভয়াবহ দৃশ্য। পুতিনের সংরক্ষিত বাহিনীর এক সদস্যকে দেখা গেল, একটি স্লেজহ্যামার (বরফ ভাঙার হাতুড়ি) দিয়ে তাঁর হাত ভেঙে ফেলার চেষ্টা করতে।
এইভাবে আত্ম-আঘাত করে যুদ্ধ এড়ানোর প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে রুশ সেনাকর্তারা দেশবাসীকে সতর্ক করেছেন। কিন্তু, তারপরও ইউক্রেনে যুদ্ধ করতে যাওয়ার বদলে এই ধরনের বিকৃত পথই বেছে নিচ্ছেন আম রুশ নাগরিকরা। ভিডিয়োতে দেখা যাচ্ছে, ওই রুশ যুবক তাঁর বাঁ হাত একটা বেঞ্চের উপরে রেখেছেন। অন্য হাত দিয়ে ঢেকে রেখেছেন তাঁর মুখ। এরপর, তাঁর এক রুশ যুবকের বাঁ হাতে ওই হাতুড়িটি দিয়ে প্রচণ্ড জোরে আঘাত করেন।
স্পষ্টতই প্রচণ্ড যন্ত্রণায় চিৎকার করে উঠে যুবকটিকে তাঁর নিজের পায়ে হাত দিয়ে চাপড় মারতে দেখা যায়। যে বন্ধুটি আঘাতটি করেছিলেন, তিনি দ্রুত সরে যান। দূর থেকে বন্ধুটিকে বলতে শোনা যায়: “কলিয়ান, সব ঠিক আছে তো?” এরপর এক মহিলা কন্ঠকে বলতে শোনা যায়, “ও কেন সে পালিয়ে গেল?” যন্ত্রনা কাতর যুবকটি বলেন, “ও আমাকে আঘাত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল।” এরপর দুই মহিলা ভিডিয়োতে দেখা যায়। তাঁরা যুবকের আঘাতপ্রাপ্ত হাতটি পরীক্ষা করেন। একজন জিজ্ঞেস করেন, “কতটা কঠিন ছিল কাজটা? কিন্তু, ও কি তোমার হাত ভাঙতে ব্যর্থ হয়েছে?” বন্ধুটি জিজ্ঞেস করেন, “তুমি কী বলতে চাও? ওর হাত ভাঙেনি?” এখানেই ভিডিওটি শেষ হয়ে ?যায়। স্লেজহ্যামারের আঘাতে ওই রিজার্ভ সেনাকর্মীর হাত সত্যি সত্যই ভেঙেছে কি না, তা স্পষ্ট নয়। ইউক্রেনে যুদ্ধ করতে যাওয়া থেকে বাঁচার জন্য তাঁর আঘাত যথেষ্ট ছিল কি না তাও স্পষ্ট নয়।
তবে, শুধু এই একজনই নন, যুদ্ধ এড়াতে রুশ পুরুষরা অনেকেই এরকম ভয়ঙ্কর পদক্ষেপ করছেন। কেউ কেউ পালিয়ে গিয়ে মাতৃভূমি ফিনল্যান্ড, জর্জিয়া, কাজাখস্তান বা মঙ্গোলিয়ায় আশ্রয় নিচ্ছেন। উপগ্রহ চিত্রে দেখা গিয়েছে, রাশিয়া-জর্জিয়া সীমান্ত বরাবর ভার্খনি লারস চেকপয়েন্টে ১০ মাইল দীর্ঘ গাড়ির লাইন পড়ে গিয়েছে। পুতিনের ঘোষণার পর দেশের বাইরে যাওয়ার উড়ানের টিকিট বিক্রি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তাই কেউ হাত, কেউ পা ভাঙার মতো চরম পদক্ষেপ নিচ্ছেন।