Tarique Rahman: মায়ের মৃত্যুতে রাজীব গান্ধীর মতোই কপাল খুলবে তারেক রহমানের?
Bangladesh Election: মঙ্গলবার সকাল ৬টায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। বড়দিনের দিন ১৭ বছর পর লন্ডন থেকে বাংলাদেশে ফিরল তারেক রহমান। প্রথম দিনেই ১৬ মিনিটের রাজনৈতিক ভাষণ। তারপর দিন থেকে কার্যালয়ে বৈঠক, কমিটির বৈঠকে যোগদান।

ঢাকা: ১৯৮১ সাল কংগ্রেসে যোগ দিলেন রাজীব গান্ধী। উত্তরাধিকার সূত্রে ক্ষমতার শীর্ষ তিনি বসবেন, সেই বিষয়টি খুব স্বাভাবিক। কিন্তু গোটা প্রক্রিয়া এতটা দ্রুত হবে, তা নিজেও হয়তো কল্পনা করতে পারেননি রাজীব। ১৯৮৪ সালের ৩১শে অক্টোবর। নিজের দেহরক্ষীর হাতেই খুন হলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী। রাজীব গান্ধীকে অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী করা হল। তারপর ডিসেম্বর দেশজুড়ে আয়োজিত হল লোকসভা নির্বাচন। নজির গড়ল কংগ্রেস। শেষ লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি টার্গেট দিয়েছিল ৪০০ পার করার। কিন্তু জোট নিয়েও তা করতে পারেনি। কিন্তু ১৯৮৪ সালে সেই নজির গড়েছিল কংগ্রেস। তাও আবার একা। প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন রাজীব গান্ধী। কীভাবে?
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলেন, সহানুভূতি ভোট অস্ত্র হয়েছিল কংগ্রেসের। এই প্রসঙ্গে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ‘লস অ্যাঞ্জেস টাইমসে’ প্রতিবেদনে উল্লেখিত তথ্য এখনও প্রাসঙ্গিক। সেই সময় লেখক খুশওয়ান্ত সিং ওই সংবাদমাধ্যমকে বলেছিলেন, ‘ইন্দিরা গান্ধীর মৃত্যুর পর দেশের রাজনৈতিক সমীকরণ সম্পূর্ণ ভাবে বদলে গিয়েছে।’ কী রকম সমীকরণ? একাংশ বলেন, সহানুভূতি ভোট তৎকালীন সময়ে হয়ে উঠেছিল বেনজির রাজনৈতিক হাতিয়ার। ইন্দিরার মৃত্যু ঘিরে দেশজুড়ে তুলে ধরেছিল আবেগের জোয়ার।
মঙ্গলবার সকাল ৬টায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। বড়দিনের দিন ১৭ বছর পর লন্ডন থেকে বাংলাদেশে ফিরল তারেক রহমান। প্রথম দিনেই ১৬ মিনিটের রাজনৈতিক ভাষণ। তারপর দিন থেকে কার্যালয়ে বৈঠক, কমিটির বৈঠকে যোগদান। বাংলাদেশ ছাড়ার সময় এই তারেকই বলেছিলেন, তিনি আর রাজনীতি করবেন না। কিন্তু বাংলাদেশে ফিরে তাঁর বার্তার শুরুটাই হল রাজনৈতিক। ‘নতুন দেশ গড়ার’ স্বপ্ন দেখালেন তিনি।
এই ঘটনার পাঁচদিনের মাথায় খালেদা জিয়ার মৃত্যু। বিএনপি-র জন্য ডিভিডেন্ড নাকি নেতৃত্বহীনতার মুখে পড়বে দল? একাংশ মনে করেন, বিএনপি-র অন্দরে তারেক রহমান বেড়ে উঠেছেন একটি সমান্তরাল শক্তি হিসাবে। বিদেশে থেকেছেন কিন্তু দল থেকে দূরে থাকেননি। সময়ে সময়ে বার্তা, বাংলাদেশের দিকে নজর রাখা এবং সঠিক সময়ের জন্য অপেক্ষা করা। যা এবার হয়তো এসে গিয়েছে।
আওয়ামী লিগ নির্বাচন থেকে বাদ। হাসিনা দেশের বাইরে। এক বছর আগে পর্যন্ত বাংলাদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ দল ছিল এটি। যার ভোটব্যাঙ্ক এখন বিএনপির অন্যতম হাতিয়ার। কারণ জামায়াত-এনসিপির মতো সরাসরি রক্ষণশীল, ইসলামিক রাজনীতি নিয়ে খেলা করে না তাঁরা। বোঝে ভারসাম্য রাখার রাজনীতি। বিবিসি বাংলার প্রতিবেদন অনুযায়ী, গোপালগঞ্জ — যা আওয়ামী লিগের অন্যতম ঘাঁটি, সেখানে এবার বাড়তি জোর দিচ্ছে বিএনপি। গোপালগঞ্জ-২ সদর আসনে বিএনপির প্রার্থী কে এম বাবর বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন, ‘এবার আওয়ামী লিগ থাকবে না। মানুষ বিএনপির পক্ষেই যাবে।’
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, হাসিনা-হীন বাংলাদেশে এই পক্ষ টানার ক্ষেত্রে ব্রহ্মাস্ত্র হতে পারে খালেদা জিয়ার মৃত্য়ুর আবেগ। বাংলাদেশে রাজনীতিতে তিনি অন্যতম মুখ। বিভেদ রয়েছে, কিন্তু প্রাসঙ্গিকতাও অসামান্য। সহানুভূতির ভোটে সওয়ার হয়ে সেই ভোট দখল করতে পারে বিএনপি। তবে কতটা তাঁরা সফল হবে, সেই উত্তর সময়ই দেবে।
