ওয়াশিংটন: দীর্ঘদিন ধরেই ‘স্পেসএক্স’ সংস্থার মালিক ইলন মাস্ক মঙ্গল গ্রহে মানুষ পাঠানোর কথা বলছেন। সুনির্দিষ্ট কোনও পরিকল্পনা ঘোষণা করতে না পারলেও, মঙ্গল গ্রহে পাড়ি দেওয়ার সম্ভাবনাকে বাস্তব করার চ্যালেঞ্জ নিয়েছেন ‘টেসলা’ ও ‘স্পেসএক্স’ সিইও। বর্তমানে ‘টেসলা’ সংস্থায় ছাঁটাই এবং ৪৪০০ কোটি মার্কিন ডলারে ‘টুইটার’ সংস্থা কেনার প্রচেষ্টার জন্য শিরোনামে থাকলেও, মাস্কের আসল লক্ষ্য যে প্রাণকে মঙ্গলে পৌঁছে দেওয়া, তা বারবারই স্বীকার করেছেন তিনি। সম্প্রতি, মাস্কের এক ভক্ত, টুইটারে তাঁর মঙ্গল গ্রহ অভিযানের পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতে চেয়েছিলেন। উত্তরে সোমবার (৬ জুন) মাস্ক বলেছেন, ‘মঙ্গলে জীবন পরিবহণের জন্য ১০০০-এরও বেশি স্টারশিপ তৈরি করব। মূলত, খুব আধুনিক নোয়ার নৌকা।’
‘স্টারশিপ’ মহাকাশযান ইতিমধ্যেই তৈরি করে ফেলেছে মাস্কের মহাকাশ সংস্থা ‘স্পেসএক্স’। খাতায় কলমে এই মহাকাশযান মানুষ এবং পণ্যসম্ভার, চাঁদে এবং তারও বাইরে দূর মহাকাশে নিয়ে যেতে সক্ষম। মাস্কের দাবি, ‘স্টারশিপ’ মহাকাশযানই মানবজাতির এবং সামগ্রিকভাবে প্রাণকে সংরক্ষণ করবে। বাইবেলে বিশ্বব্যাপী বন্যার বর্ণনায় ‘নোয়ার আর্ক’ বা নোয়ার নৌকার কথা আছে। বাইবেল অনুযায়ী নোয়া তাঁর নৌকায় বিশ্বের সকল প্রাণীকে জোড়ায় জোড়ায় তুলেছিলেন। তারপর জলস্তর নেমে ডাঙা ভেসে উঠলে, তাঁর রক্ষা করা প্রাণীকূল থেকেই ফের জীবজগৎ পৃথিবীতে মাথা তুলে দাঁড়িয়েছিল। সেই ‘আর্ক’ বা নৌকার সঙ্গেই ‘স্টারশিপ’ মহাকাশযানগুলিকে তুলনা করেছেন ইলন মাস্ক। তাঁর দাবি ‘পৃথিবীতে বিপর্যয় আসলে স্টারশিপই প্রাণকে রক্ষা করতে পারে’।
এরকম ১০০০টিরও বেশি স্টারশিপ তৈরির পরিকল্পনা জানানোর পাশাপাশি, এই বিষয়ে এদিন আরও বেশ কয়েকটি টুইট করেছেন মাস্ক। তিনি লিখেছেন, ‘প্রাণকে বহুগ্রহীয় করে তুললে (একাধিক গ্রহে ছড়িয়ে দিলে) চেতনার পরিধি এবং মাত্রা প্রসারিত হয়। এটা আমাদের জীবজগৎকে রক্ষা করতে সক্ষম করে তোলে। পৃথিবীতে কোনও বিপর্যয় এলেও জীবন রক্ষা করা যাবে’। তিনি আরও বলেছেন, অনেকেই মানব সভ্যতাকে পছন্দ করেন না। কিন্তু, তিনি মানব সভ্যতাকে অত্যন্ত ভালবাসেন। আর তাই এই সভ্যতাকে যেনতেন প্রকারে রক্ষা করতে চান। তাঁর মতে, একমাত্র মানুষই পারে প্রাণকে রক্ষা করতে। কারণ, জীবজগতের অন্য কোনও প্রজাতি প্রাণকে মঙ্গল গ্রহে নিয়ে যেতে পারবে না। তারা এই ক্ষেত্রে মানুষের দিকেই তাকিয়ে আছে। মাস্ক বলেছেন, ‘আমরা তাদের হতাশ করতে পারি না’।
প্রসঙ্গত, ‘স্পেসএক্স’ সংস্থার তৈরি ‘স্টারশিপ’কে ইতিমধ্যেই স্বীকৃতি দিয়েছে ‘নাসা’। ‘ইউএস ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের’ সবুজ সংকেত পেলেই, মাস্কের প্রথম ‘স্টারশিপ’ উড়ে যাবে মঙ্গল গ্রহের উদ্দেশে। আর একবার উড়ান সফল হলেই, মঙ্গলে প্রাণ প্রতিষ্ঠার জন্য পরের ধাপের কাজ শুরু করবেন ইলন মাস্ক।