কঙ্গো: গৃহযুদ্ধে এক দশকেরও বেশি সময় ধরে বিদীর্ণ আফ্রিকার দেশ কঙ্গো। এর জেরে প্রচুর মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েছেন। দেশ ছেড়ে পালিয়ে অন্য দেশে শরণার্থীও হয়েছেন লক্ষাধিক কঙ্গোবাসী। গৃহহীনদের অনেকে দেশের মধ্যে বিশেষ ক্যাম্পে থাকছেন। কিন্তু সেখানে থেকেও হিংসা থেকে মুক্তি মিলছে না। ক্যাম্প থেকে মহিলারা বাইরে বেরোলে বা খাবারের খোঁজে গিয়ে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রসঙ্গত, হিংসায় জর্মজরিত কঙ্গোতে ধর্ষণ অত্যাচারের অন্যতম অংশ। রাষ্ট্রপুঞ্জ এবং একাধির মানবাধিকার সংগঠন মহিলাদের উপর যৌন অত্যাচারের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন। কিন্তু পরিস্থিতির বদল যে হয়নি তা সম্প্রতি ফের ফুটে উঠল সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে।
কঙ্গোর গোমা শহরের আশপাশের এলাকায় রয়েছে বিশেষ ক্যাম্প। ৬০ হাজারেরও বেশি মানুষ রয়েছেন সেখানে। সেখানে থাকা কঙ্গোবাসীদের বড় একটি অংশ নিকটবর্তী জঙ্গলে যান কাঠ কাটতে এবং খাবারের খোঁজে। সেখানে গিয়ে অস্ত্রধারী দুষ্কৃতীদের হাতে ধর্ষণের শিকার হতে হয়েছিল ক্যাম্পের অনেক মহিলাকে। সেই ঘটনার কথা সম্প্রতি সামনে এসেছে। বুলেঙ্গোর একটি ক্যাম্পে থাকা ৩৫ বছরের এক মহিলা জানিয়েছেন, সম্প্রতি তিনি কয়েক জনের সঙ্গে কাঠ কাটতে জঙ্গলে গিয়েছিলেন। সে সময় কাটারি হাতে চার জন তাঁর পিছু নেয়। জঙ্গলের ভিতর তিনি যখন নিজের সঙ্গীদের থেকে আলাদা হয়ে পড়েছিলেন তখন এক জন ঝাঁপিয়ে পড়েন তাঁর উপর। বাকি অস্ত্রধারীরাও চলে আসে। তার পর তাঁকে গণধর্ষণ করা হয়েছে বলে রয়টার্সকে জানিয়েছেন ওই মহিলা। ঘটনার কথা কাউকে জানালে খুন করার হুমকি দেওয়া হয়। ওই মহিলা শুধু একা নন। একাধিক মহিলা একই অত্যাচারের শিকার হয়েছেন। মেডিক্যাল চ্যারিটি মেডিসিন সানস ফ্রন্টিয়ারে ১৭ এপ্রিল থেকে ৩০ এপ্রিলের মধ্যে ৬৭০ জন মহিলার চিকিৎসা হয়েছে। যাঁদের মধ্যে সকলেই যৌন নির্যাতনের শিকার। নির্যাতিতের সংখ্যা এর থেকেও বেশি বলে জানা গিয়েছে।
পেটের টানে মেয়েদের বেরোতে হচ্ছে ক্যাম্পের বাইরে। তখনই নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন তাঁরা। তাঁদের অধিকারশই অস্ত্রধারী দুষ্কৃতী এবং সেনার লালসার শিকার হচ্ছেন। ৫৫ বছরের এক মহিলা থাকেন ক্যাম্পে। তাঁর দুই সঙ্গীনি ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। এর পর থেকে জঙ্গলে যেতেই ভয় পাচ্ছেন ওই মহিলা। সে কথা জানিয়ে উদাসী চাহনিতে ওই মহিলার প্রশ্ন, “আমরা খাব কী?”