ওয়াশিংটন: মহাকাশ অভিযানেও হাত মেলালো ভারত-মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। নাসার সঙ্গে যৌথভাবে মহাকাশ অভিযানে সামিল হবে ইসরো। হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ‘আর্টেমিস অ্যাকর্ডস’ স্বাক্ষর করতে সম্মত হয়েছে ভারত। মহাকাশ অভিযান এবং ব্যবহারের ক্ষেত্রে যাতে সকল দেশ সমানভাবে উপকৃত হয়, সেই বিষয়ে ২০২০ সালে আমেরিকা এবং আরও ৭টি দেশ, নাসার তৈরি এই অ্যাকর্ডস-এ স্বাক্ষর করেছিল। হোয়াইট হাউসের এক পদস্ত কর্তা বলেছেন, “মহাকাশ অভিযান যাতে সমস্ত মানবজাতির কল্যাণে লাগে সেই লক্ষ্যে তৈরি করা হয়েছিল আর্টেমিস অ্যাকর্ডস। ভারত এই অ্যাকর্ডস স্বাক্ষর করতে চলেছে।” এই অ্যাকর্ডস স্বাক্ষর করা ছাড়াও, ২০২৪ সালে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে একটি যৌথ অভিযান করবে নাসা এবং ইসরো বলে জানিয়েছেন হোয়াইট হাউসের ওই পদস্থ কর্তা।
দীর্ঘদিন ধরেই মহাকাশে মানুষ পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে ইসরো। গগনযান অভিযানের প্রস্তুতি প্রায় শেষ পর্বে। মহাকাশে একটি নিজস্ব স্পেস স্টেশন স্থাপন করার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে ইসরো। এদিন হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, মহাকাশে মানুষ পাঠানোর বিষয়ে ইসরোকে সাহায্য করবে নাসা। দুই মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র কীভাবে একে অন্যের সহায়তা করতে পারে, সেই বিষয়ে একটি কাঠামো তৈরি করা হবে। আর পরের বছরই, অর্থাৎ ২০২৪ সালে নাসা এবং ইসরো আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে একটি যৌথ অভিযান করবে। আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে যাত্রা করবেন ভারতীয় নভোশ্চররা। পরবর্তী ক্ষেত্রে এই পারস্পরিক সহযোগিতার মাত্রা আরও বাড়তে পারে।
বর্তমানে মহাকাশ গবেষণার ক্ষেত্রে নবজোয়ার এসেছে বলা চলে। নাসার পক্ষ থেকে নতুন করে চাঁদে মানুষ পাঠানোর প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। ২০২৫ সালের মধ্যেই মানুষকে চাঁদে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে চায় আমেরিকা। আর এই লক্ষ্যেই নাসা শুরু করেছে ‘আর্টেমিস প্রোগ্রাম’। ভারত, চিন, জাপান, ইজরায়েল এবং ইউরোপিয়ান ইউনিয়নও মহাকাশ অভিযানের দৌড়ে সামিল হয়েছে। মহাকাশ গবেষণা যাতে কোনও ক্ষতিকর কাজে ব্যবহার না করা হয়, এই লক্ষ্যে নাসা এবং মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট যৌথভাবে আর্টেমিস অ্যাকর্ডস-এর খসড়া তৈরি করেছিল।
২০২০ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, ইটালি, জাপান, লুক্সেমবার্গ, সংযুক্ত আরব আমিরশাহির জাতীয় মহাকাশ সংস্থা এই অ্যাকর্ডস স্বাক্ষর করেছিল। এই সবকটি দেশই আর্টেমিস প্রোগ্রামে অংশ নিচ্ছে। এছাড়া পরবর্তী সময়ে এই অ্যাকর্ডস-এ স্বাক্ষর করেছে ইউক্রেন, দক্ষিণ কোরিয়া, নিউজিল্যান্ড, ব্রাজিল, পোল্যান্ড, মেক্সিকো, ইজরায়েল, রোমানিয়া, বাহারাইন, সিঙ্গাপুর, কলম্বিয়া, ফ্রান্স, সৌদি আরব, রোয়ান্ডা, নাইজেরিয়া, চেক রিপাবলিক এবং স্পেন এই অ্যাকর্ডস-এ স্বাক্ষর করেছে। এবার, ভারতও এই তালিকায় নাম লেখাল। মহাকাশ গবেষণায় নাসার উজ্জ্বল ইতিহাসের কথা নতুন করে বলার কিছু নেই। অন্যদিকে, সাম্প্রতিক সময়ে, মহাকাশ গবেষণায় অন্যতম বড় নাম হিসেবে দ্রুত উঠে এসেছে ইসরো। বিশ্বের এই দুই বৃহৎ মহাকাশ চর্চা কেন্দ্রের পারস্পরিক সহযোগিতার সিদ্ধান্ত, সামগ্রিকভাবে মহাকাশ গবেষণার ক্ষেত্রে বড় মাইলফলক বলে মনে করা হচ্ছে।