নয়া দিল্লি: মলদ্বীপের বর্তমান সরকার যতই ভারত বিরোধী হোক, প্রতিবেশির হাত একেবারে ছাড়ছে না ভারত। সেনা সরালেও, মলদ্বীপকে যে তিনটি এয়ারক্র্যাফ্ট উপহার দিয়েছিল ভারত, সেগুলি থেকেই যাচ্ছে। চিকিৎসার জন্য রোগী উড়িয়ে আনা-সহ উচ্ছেদ বিভিন্ন মানবিক কাজে ব্যবহারের জন্য, মলদ্বীপকে দুটি অ্যাডভান্স্ড লাইট ‘ধ্রুব’ হেলিকপ্টার এবং একটি ডর্নিয়ার বিমান দিয়েছিল ভারত সরকার। এতদিন ভারতীয় সেনাকর্মীরাই এই তিনটি এয়ারক্র্যাফ্ট চালাতেন। কিন্তু, মলদ্বীপের প্রেসিডেন্ট, মহম্মদ মুইজ্জু সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, ভারতীয় সেনা রাখা যাবে না তাদের দ্বীপরাষ্ট্রে। কাজেই, ওই তিনটি এয়ারক্র্যাফ্ট চালানোর জন্য সেনার বদলে ‘দক্ষ ভারতীয় প্রযুক্তি কর্মীদের’ পাটানোর সিদ্ধান্ত নিল নয়া দিল্লি। বৃহস্পতিবার, বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেছেন, “সেনাকর্মীদের জায়গায় ভারতীয় প্রযুক্তিকর্মীদের পাঠানো হবে।”
বর্তমানে, মলদ্বীপে ৭৫ জন ভারতীয় সামরিক কর্মী আছেন। ১৫ মার্চের মধ্যে তাদের সকলকে সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন সেই দেশের প্রেসিডেন্ট মহম্মদ মুইজ্জু। তারপর থেকে এই নির্দেশ কার্যকর কীভাবে করা হবে, সেই বিষয়ে দুই দেশের মধ্যে আলোচনা চলছে। এই সমস্যার সমাধানের জন্য দুই দেশই একটি উচ্চ-স্তরের কোর কমিটি গঠন করেছে। ২ ফেব্রুয়ারি এই কমিটির দ্বিতীয় বৈঠক ছিল। ওই বৈঠকের পরই ভারত জানিয়েছিল, সেনা প্রত্যাহারের পরও ভারতের তিনটি এয়ারক্র্যাফ্ট মলদ্বীপেই থাকবে। কীভাবে সেগুলি চালানো হবে, তার জন্য দুই দেশ পারস্পরিক গ্রহণযোগ্য সমাধান খুঁজছে। মলদ্বীপের বিদেশ মন্ত্রক জানিয়েছিল, ১০ মার্চের মধ্যে ভারত ডর্নিয়ার বিমানটির সামরিক কর্মীদের বদলে দেবে। ১০ মের মধ্যে অন্য দুই এয়ারক্র্যাফ্টের সমস্ত সামরিক কর্মীদেরও প্রতিস্থাপন করে দেবে ভারত। এদিন, রণধীর জয়সওয়াল জানিয়েছেন, শিগগিরই এই কোর কমিটির তৃতীয় বৈঠক হবে।
তিনি আরও জানিয়েছেন, মলদ্বীপের উন্নয়নে সহায়তার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ভারত। ২০২৪-২৫ সালের বাজেটেও ভারত সরকার মালদ্বীপের জন্য ৭৭৯ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। তিনি আরও জানিয়েছেন, ভারতের ‘প্রতিবেশি প্রথম’ নীতির সবচেয়ে বড় সুবিধাভোগীর অন্যতম। ওয়াকিবহাল মহল সূত্রে জানা গিয়েছে, মলদ্বীপে যে দুটি হেলিকপ্টার এবং ডর্নিয়ার বিমান রয়েছে, সেগুলি পরিচালনার জন্য সামরিক কর্মীদের বদলে কাদের পাঠানো যায়, সেই বিষয়ে বেশ কিছু বিকল্প বিবেচনা করছে নয়াদিল্লি। ধ্রুব হেলিকপ্টার এবং ডর্নিয়ার বিমানের সঙ্গে পরিচিত অসামরিক অপারেটরদের পাঠানো হতে পারে। এছাড়া, সেনা, বায়ুসেনা বা নৌসেনার অবসরপ্রাপ্ত কর্মীদের, যাদের বিমান চালানো এবং রক্ষণাবেক্ষণের অভিজ্ঞতা রয়েছে, তাদেরও পাঠানো হতে পারে। ভারতীয় এয়ারক্র্যাফ্টগুলি রোগীদের উড়িয়ে নিয়ে আসার পাশাপাশি সামুদ্রিক নজরদারির জন্যও ব্যবহার করত মলদ্বীপ। ইতিমধ্যেই তার জায়গায় ড্রোন ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মুইজ্জু সরকার। ড্রোন কেনার জন্য তুর্কিয়ের সঙ্গে চুক্তি করেছে তারা।