Iran: প্রকাশ্যেই নীতি পুলিশের নিগ্রহ, কোমায় ১৬ বছরের কিশোরী! ফের উত্তপ্ত ইরান

16-year-old Iran girl in coma: ইরানের সরকার এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। সরকারের দাবি, আরমিতার নিম্ন রক্তচাপের সমস্যা ছিল। তাই মেট্রোর মধ্যে সে সংজ্ঞা হারিয়েছিল। নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে এই ঘটনার কোনও যোগ নেই। প্রশ্ন উঠছে, নিম্ন রক্তচাপের সমস্যার জন্য সে জ্ঞান হারাতে পারে, কিন্তু কোমায় চলে গেল কীকরে?

Iran: প্রকাশ্যেই নীতি পুলিশের নিগ্রহ, কোমায় ১৬ বছরের কিশোরী! ফের উত্তপ্ত ইরান
নীতি পুলিশের অত্যাচারেই ১৬ বছরের আরমিতা গারাওয়ান্দ কোমায় চলে গিয়েছে বলে অভিযোগImage Credit source: Twitter
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Oct 04, 2023 | 12:58 PM

তেহরান: মাহসা আমিনির মৃত্যুর ঠিক এক বছর পর, ফের ইরানে প্রশ্নের মুখে সেই দেশের কুখ্যাত নীতি পুলিশ। রবিবার (১ অক্টোবর) তেহরানের মেট্রোরেলে হিজাব পরার নিয়ম নিয়ে নীতি পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হয় আরমিতা গারাওয়ান্দ নামে এক ১৬ বছরের কিশোরীর। নীতি পুলিশের অত্যাচারেই সে কোমায় চলে গিয়েছে বলে অভিযোগ। আপাতত, তেহরানের এক হাসপাতালে কড়া সুরক্ষার মধ্যে তার চিকিৎসা চলছে। এই ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়তেই ফের মধ্যপ্রাচ্যের এই দেশে নীতি পুলিশের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে।

হেনগাও নামে এক কুর্দ অধিকার গোষ্ঠী সরাসরি অভিযোগ করেছে ইরানের কিছু মহিলা নীতি পুলিশ অফিসারদের বিরুদ্ধে। তাদের দাবি, ওই নীতি পুলিশ অফিসাররা, তেহরান মেট্রোরেলে আরমিতা গারাওয়ান্ডকে গুরুতর আঘাত করেছিল। যার পরই সে কোমায় চলে গিয়েছে। যদিও, ইরানের সরকার এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। সরকারের দাবি, আরমিতার নিম্ন রক্তচাপের সমস্যা ছিল। তাই মেট্রোর মধ্যে সে সংজ্ঞা হারিয়েছিল। নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে এই ঘটনার কোনও যোগ নেই। প্রশ্ন উঠছে, নিম্ন রক্তচাপের সমস্যার জন্য সে জ্ঞান হারাতে পারে, কিন্তু কোমায় চলে গেল কীকরে?

হেনগাও গোষ্ঠীর দাবি, তেহরানের শোহাদা মেট্রো স্টেশনে নীতি পুলিশ গ্রেফতার করেছিল আরমিতাকে। তারপর, তাঁকে শারীরিক নিগ্রহ করা হয়। তাতেই গুরুতর আহত হয় সে। ঘটনাটি সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছে। সেই ভিডিয়োতে নীতি পুলিশ কর্মীদের মেট্রোর মধ্যে আরমিতা এবং তার বন্ধুদের ধাক্কা দিতে দেখা গিয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে। পরে, একটি নিথর দেহও টেনে নিয়ে যেতে দেখা যায় তাদের। তবে, এই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করা যায়নি। তেহরান সাবওয়ে সিস্টেমের পক্ষ থেকেও, মেট্রোরেলে কোনও ছাত্রছাত্রী ব অন্য যাত্রীদের সঙ্গে মেট্রো কর্তা বা নীতি পুলিশের কোনও মৌখিক বা শারীরিক দ্বন্দ্ব হয়নি বলে দাবি করা হয়েছে। এই বিষয়ে একটি সিসিটিভি ফুটেজও প্রকাশ করা হয়েছে।

বর্তমানে তেহরানের ফজর হাসপাতালে আরমিতার চিকিৎসা চলছে। কিন্তু, সরকারের পক্ষ থেকে তার কাছে কাউকে ঘেষতে দেওয়া হচ্ছে না। এমনকি তার পরিবারের সদস্যদেরও কার কাছে যেতে দেওয়া হচ্ছে না। ইরানের সরকারি সংবাদমাধ্যমে তাঁদের মিথ্যা বয়ান দিতে বাধ্য করেছে নিরাপত্তা কর্তারা। মরিয়ম লোতফি নামে, এক ইরানি সংবাদপত্রের সাংবাদিক হাসপাতালে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু তাঁকে আটক করা হয়। পরে অবশ্য তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। কুর্দ গোষ্ঠীটি হাসপাতালের বিছানায় শোয়া অবস্থায় আরমিতা গারাওয়ান্দের একটি ছবি প্রকাশ করেছে। তাতে দেখা গিয়েছে, আরমিতার মাথা এবং ঘাড় সম্পূর্ণ ব্যান্ডেজে ঢাকা। ফিডিং টিউবের মাধ্যমে তাকে খাবার দেওয়া হচ্ছে। এখনও তার জ্ঞান ফেরেনি বলে জানা গিয়েছে। বর্তমানে তেহরানে বসবাস করলেও, আরমিতা গারাওয়ান্দ আদতে পশ্চিম ইরানের শহর কেরমানশাহের বাসিন্দা। শহরটি কুর্দ অধ্যুষিত।

ঠিক এক বছর আগে, প্রায় একই রকমের এক ঘটনা নিয়ে বিক্ষোভে উত্তাল হয়েছিল ইরান। পোশাক বিধি লঙ্ঘন করার অভিযোগে ইরানের নীতি পুলিশ গ্রেফতার করেছিল মাহসা আমিনি নামে এক যুবতীকে। নীতি পুলিশের হেফাজতে থাকা অবস্থাতেই তাঁর মৃত্যু হয়েছিল। আমিনির মৃত্যুর পর, কয়েক মাস ধরে ইরানে নীতি পুলিশ ব্যবস্থার বিরুদ্ধে এবং কঠোর পোশাক বিধির বিরুদ্ধে ব্যাপক বিক্ষোভ দানা বেঁধেছিল। চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছিল ইরানের ধর্মীয় নেতৃত্ব। শেষ পর্যন্ত কঠোর হাতে সেই বিক্ষোভ দমন করেছিল ইরান সরকার। অসংখ্য মানুষকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। সরকারি বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে প্রাণ হারিয়েছিলেন বহু মানুষ। আরমিতার ঘটনা কি ফের দেশব্যাপী বিক্ষোভের জন্ম দেবে?