তেহরান: বিক্ষোভের আগুনে জ্বলছে ইরান। হিজাব না পরায় গ্রেফতারি ও পরে পুলিশের হেফাজতে এক ২২ বছরের যুবতীর মৃত্যু ঘিরেই বিক্ষোভ-আন্দোলন শুরু হয়েছে ইরানে। বিক্ষোভকারীদের দমাতে উঠে পড়ে লেগেছে পুলিশ ও নিরাপত্তারক্ষী। বিক্ষোভকারীদের উপরে অবাধে লাঠিচার্জ, গুলি চালিয়েছে নিরাপত্তারক্ষীরা। পুলিশের গুলিতে এখনও অবধি কমপক্ষে ৫০ জন বিক্ষোভকারীর মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, দেশে কোনও রকম বিশৃঙ্খলা বরদাস্ত করা হবে না।
ইরানের নারীদের উপরে বহু বছর ধরেই একাধিক বিধিনিষেধ চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। সম্প্রতিই ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি জানান যে সকল মহিলাকেই কঠোরভাবে হিজাব পরার নিয়ম মানতে হবে। এই নির্দেশের পরই সঠিকভাবে হিজাব না পরার অভিযোগে গত ১৩ সেপ্টেম্বর গ্রেফতার করা হয় ২২ বছরের মাহসা আমিনিকে। ১৬ সেপ্টেম্বর পুলিশ হেফাজতেই মারা যান মাহসা।
মহাসার মৃত্যুর খবর প্রকাশ্যে আসতেই বিক্ষোভে জ্বলছে ইরান। ইরানের কুর্দি-জনবহুল উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে প্রথম শুরু হয় বিক্ষোভ। বর্তমানে কমপক্ষে ৫০ শহরে বিক্ষোভ-আন্দোলন ছড়িয়ে পড়েছে। মহিলারা চুল কেটে, হিজাব পুড়িয়ে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। এরইমধ্যে বিক্ষোভকারীদের হুঁশিয়ারি দিলেন ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি। আন্দোলনকারীদের উদ্দেশে তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “ইরানে মত প্রকাশের স্বাধীনতা থাকলেও, তার আড়ালে কোনও রকমের বিশৃঙ্খলা বরদাস্ত হবে না।”
প্রেসিডেন্ট রাইসি বলেন, “ইরানে মত প্রকাশের স্বাধীনতা আছে। কিন্তু বিশৃঙ্খল কর্মকাণ্ড গ্রহণযোগ্য নয়”। একইসঙ্গে তিনি জানান, মাহসা আমিনির মৃত্যুর পূর্ণাঙ্গ তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে অযথা বিক্ষোভের আগুন ছড়ানোর কোনও প্রয়োজন নেই।
ইরানের মহিলারা বাধ্যতামূলকভাবে হিজাব পরার নিয়ম প্রত্য়াহারের দাবি জানালেও, সূত্রের খবর এই নিয়ম একচুলও পরিবর্তন করতে রাজি নন প্রেসিডেন্ট। গতকালই জানা যায়, সঞ্চালিকা হিজাব পরতে অস্বীকার করায় সিএনএন চ্যানেলে সাক্ষাৎকার দেননি ইরানের প্রেসিডেন্ট।