Yemen Death Sentence: ‘নির্যাতনের’ জ্বালায় অভিযুক্তকে ‘খুন’, উল্টে ভারতীয় সেই ‘নির্যাতিতা’কেই মৃত্যুদণ্ড দিল ইয়েমেন
Yemen Death Sentence: ২০১৭ সালে এক ইয়েমেনের বাসিন্দা তালাল আব্দো মেহেদির হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সেই দেশে কর্মরত নিমিশা প্রিয়া নামে কেরলের এক নার্সকে গ্রেফতার করা হয়। এক বছরেই শেষ হয় বিচার প্রক্রিয়া। ট্রায়াল কোর্টে মৃত্যুদণ্ডের সাজা পান অভিযুক্ত। মেয়ের মৃত্যুদণ্ডের কথা কানে আসতেই মূর্ছা পড়ে পরিবার।
নয়াদিল্লি: ভারতীয় নার্সকে মৃত্যুদণ্ড দিল ইয়েমেনের রাষ্ট্রপতি আল-আলিমি। ২০১৭ সাল থেকে ইয়েমেনের হেফাজতে ছিলেন এই নার্স। এবার তাকেই একটি হত্যাকাণ্ডের ঘটনার ভিত্তিতে মৃত্যুদণ্ডের সাজায় অনুমোদন দিল সেদেশের রাষ্ট্রপতি।
ঘটনাটা ঠিক কী?
২০১৭ সালে এক ইয়েমেনের বাসিন্দা তালাল আব্দো মেহেদির হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সেই দেশে কর্মরত নিমিশা প্রিয়া নামে কেরলের এক নার্সকে গ্রেফতার করা হয়। এক বছরেই শেষ হয় বিচার প্রক্রিয়া। ট্রায়াল কোর্টে মৃত্যুদণ্ডের সাজা পান অভিযুক্ত। মেয়ের মৃত্যুদণ্ডের কথা কানে আসতেই মূর্ছা পড়ে পরিবার।
শুরু হয় আইনি লড়াই। কিন্তু তাতেও হেরে যান অভিযুক্তের পরিবার। ট্রায়াল কোর্টের রায়ের বিরোধিতা করে ইয়েমেনি সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের করা হলেও, ২০২৩ সালে তা খারিজ হয়ে যায়। এবার সেই মামলায় মুখ খুলল খোদ সেদেশের রাষ্ট্রপতি। নিমিশা প্রিয়ার মামলায় মৃত্যুদণ্ডের সাজাকে চূড়ান্ত করেন রাষ্ট্রপতি। প্রাণপণে লড়াই চালিয়েও কার্যত হেরে যায় অভিযুক্তের পরিবার।
এবার এই মামলায় মুখ খুলল সাউথ ব্লক। ভারতের বিদেশমন্ত্রক সূত্রে জানা গিয়েছে, ইয়েমেনে ভারতীয়র মৃত্যুদণ্ডের সাজার কথা আগাগোড়াই জানে কেন্দ্র। ইতিমধ্যে সেই ঘটনায় যাবতীয় সাহায্য করতেও আগ্রহী তারা।
কে এই নিমিশা প্রিয়া?
জন্ম কেরলে কিন্তু কর্মসূত্রে বরাবরই স্বামী-সন্তানের সঙ্গে থাকতেন ইয়েমেনে। সেখানে একটি বেসরকারি হাসপাতালে কাজ করে দিনগুজরান করতেন প্রিয়া। পরবর্তীতে ২০১৪ সালে তার স্বামী, সন্তান-সহ ভারতে চলে এলেও প্রিয়া রয়ে গিয়েছিলেন ইয়েমেনে। এরপর ২০১৫ সালে প্রিয়ার স্বামী ফের ওই দেশে পাড়ি দেওয়ার চেষ্টা করলেও চলতি গৃহযুদ্ধের জেরে ভিসা পান না তিনি। ফলত একাই দূর প্রদেশে দিন কাটাতে হয় প্রিয়াকে।
এই ফাঁকেই সে আবার নিজের একটি ক্লিনিক খুলতে টাকা জোগাড়ের চেষ্টা চালান। আর সেই সময়েই তার আলাপ হয় তালাল আব্দো মেহেদির সঙ্গে। যৌথ চুক্তিতে খোলা হয় ক্লিনিক। শুরু হয় ব্যবসা। প্রথম দিকে সব ঠিক থাকলেও বিপদ বাড়ে মেহেদির হাত ধরে, দাবি অভিযুক্তের। প্রথমে ব্যবসার টাকা লোপাট, তারপর প্রিয়াকে জোর করে নিজের স্ত্রী বলে দাবি করা। ক্রমাগত নাকি মানসিক নির্যাতন শুরু করেন মৃত মেহেদি। কেড়ে নেন প্রিয়ার পাসপোর্টও।
বিপদ বাড়লে পুলিশের কাছে গিয়ে দ্বারস্থ হন অভিযুক্ত। কিন্তু তার দাবি, পুলিশ সব শুনেও কোনও ভাবে তাকে সাহায্য করেনি, উল্টে মেহেদির বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ করায় তাকেই ছয় দিনের জন্য জেল খাটতে হয়। আর তারপর রাগের মাথায় খুন। অভিযুক্তের দাবি, নিজের পাসপোর্ট পুনরুদ্ধার করতে মেহেদিকে ঘুমের ওষুধের ইঞ্জেকশন দেন তিনি। তবে সেই ওষুধের মাত্রা প্রাণদায়ী হয়ে উঠবে তা বুঝতে পারা যায়নি।