লন্ডন: সোমবার (১২ সেপ্টেম্বর), ব্রিটেনের রাজা হিসেবে প্রথমবার মতো ব্রিটিশ সংসদে ভাষণ দিলেন রাজা তৃতীয় চার্লস। সাংবিধানিক শাসনের মূল্যবান নীতিগুলি বজায় রাখার ক্ষেত্রে তাঁর মা তথা প্রয়াত রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ যে নিঃস্বার্থ দায়িত্ব পালনের উদাহরণ স্থাপন করেছেন, সেই উদাহরণই অনুসরণ করা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ব্রিটেনের নয়া রাজা। রানির মৃত্যুর প্রেক্ষিতে, এদিন লন্ডনের ওয়েস্টিনস্টার হলে প্রায় ৯০০ জন ব্রিটিশ সাংসদ এবং লর্ডসরা শোকবার্তা জানান। রাজা তৃতীয় চার্লস বলেন, তিনি “ইতিহাসের ওজন” অনুভব করছেন। কারণ, সংসদ কমপ্লেক্সের ভিতর অবস্থিত ভবনগুলি তাঁর মায়ের রাজত্বকালের প্রতীকে ভরা।
রাজা তৃতীয় চার্লস বলেন, “খুব অল্প বয়সে, প্রয়াত মহামান্য রানি তাঁর দেশ এবং জনগণের সেবা করার এবং আমাদের সাংবিধানিক সরকারের মূল্যবান নীতিগুলি বজায় রাখার জন্য অঙ্গীকার করেছিলেন। তিনি এই ব্রত অতুলনীয় নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করেছেন। নিঃস্বার্থ কর্তব্যের যে উদাহরণ তিনি স্থাপন করেছেন। শেক্সপিয়র যেমন আগের রানি এলিজাবেথ সম্পর্কে বলেছিলেন, তিনিও ছিলেন সমস্ত শাসকদের জন্য আদর্শ স্বরূপ। ঈশ্বরের সহায়তা এবং আপনাদের পরামর্শে বিশ্বস্তভাবে সেই উদাহরণ অনুসরণ করার জন্য আমি দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ থাকব।”
এদিন রাষ্ট্রীয় শোকপ্রকাশের এই সাংবিধানিক অনুষ্ঠানে সাংসদদের শোকবার্তাটি পড়ে শোনান হাউস অব কমন্সের স্পিকার, স্যার লিন্ডসে হোয়েল। তিনি বলেন, “আমাদের শোক যতটা গভীর, আমরা জানি আপনার শোকের গভীরতা আরও অনেক বেশি… আমাদের প্রয়াত রানি, আপনার মায়ের সম্পর্কে প্রশংসাসূচক এমন কিছু আমরা বলতেই পারব না, যা আপনি আগে থেকেই জানেন না।” শোক বার্তাটি পাঠের পর সেই লিখিত বার্তাটি রাজা তৃতীয় চার্লসের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
রাষ্ট্রীয় শোকপ্রকাশ অনুষ্ঠানের শেষে, রাজা তৃতীয় চার্লস এডিনবার্গের উদ্দেশ্যে রওনা হন। সেখানে তিনি রানি ক্যামিলার সঙ্গে মিলিত হবেন। তাঁরা প্রয়াত রানির কফিনের পিছনে রাজকীয় শোভাযাত্রায় নেতৃত্ব দেবেন। রবিবারই, স্কটল্যান্ডের বালমোরাল প্যালেস থেকে হলিরুডহাউসের প্রাসাদে নিয়ে আসা হয়েছিল রানির কফিন। এদিন সেখান থেকে এদিন সেন্ট জাইলস ক্যাথিড্রাল পর্যন্ত যাত্রা করবে রানির দেহ। কফিনটি ২৪ ঘন্টা ওই ক্যাথিড্রালেই রাখা থাকবে। সেখানে জনসাধারণ প্রয়াত রানিকে শ্রদ্ধা জানাতে পারবেন। সোমবার সন্ধ্যায়, সেন্ট জাইলস ক্যাথিড্রালেই রাজপরিবারের সদস্যদের নজরদারিতে কফিনটি রাজকীয় পতাকায় মোড়া হবে এবং কফিনের উপর স্কটল্যান্ডের মুকুট স্থাপন করা হবে।