লন্ডন: রাস্তাঘাটে বা বাসে-ট্রেনে ভিড় দেখলে অনেক সময়ই মনে হয় যে এত জনসংখ্যা কেন আমাদের দেশে? শুধু ভারত বলে নয়, বিশ্বজুড়েই জনসংখ্য়া বিপুল হারে বৃদ্ধি পেয়েছিল বিগত কয়েক দশকে। বর্তমানে বিশ্বে ৮০০ কোটিরও বেশি মানুষের বসবাস। যত প্রজন্ম এগোবে, ততই জনসংখ্যা বাড়বে, এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু উল্টো পথে হাঁটছে বিশ্ব। আগামী কয়েক দশকের মধ্যে জনসংখ্যায় ব্যাপক পরিবর্তন হতে চলেছে এবং তা মোটেও ইতিবাচক নয়। ল্যান্সেল জার্নালে সম্প্রতি প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্রে দাবি করা হয়েছে, বৈশ্বিক জন্মহারে ব্যাপক পরিবর্তন হতে চলেছে। দ্রুতহারে জন্মহার কমছে।
ল্যান্সেল জার্নালের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, ১৯৫০-র দশক থেকেই বিশ্বজুড়ে জন্মহার কমতে শুরু করেছে। সমস্ত দেশেই জন্মহার কমছে। এই শতাব্দীর শেষ অবধি এই ধারা বজায় থাকবে। এর ফলে জনসংখ্যার বৃদ্ধি অনেকটাই কমে যাবে। ১৯৫০-র দশকে যেখানে জন্মহার ৪.৮৪, তা ২০২১ সালে কমে দাঁড়িয়েছে ২.২৩-এ। ২১০০ সালের মধ্যে এই জন্মহার কমে ১.৫৯- এ পৌঁছবে।
ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটির ইন্সটিটিউট ফর হেলথ মেট্রিক্স অ্যান্ড ইভালুয়েশনের তরফে জনসংখ্যা হ্রাস পাওয়া নিয়ে এই গবেষণাপত্র প্রকাশ করা হয়েছে। সেই গবেষণাপত্রে জানানো হয়েছে, মহিলাদের শিক্ষা ও কাজের সুযোগ বৃদ্ধি থেকে শুরু করে গর্ভনিরোধক বড়ির মতো কারণ যেমন রয়েছে, তেমনই সন্তান ধারণের খরচ বৃদ্ধি এবং ছোট পরিবার পরিকল্পনাও জন্মহার হ্রাস পাওয়ার অন্যতম কারণ।
জনসংখ্যার স্থিতাবস্থা বজায় রাখার হার ছিল মহিলা প্রতি গড়ে ২.১ সন্তান। এটাকে রিপ্লেসমেন্ট লেভেল বলা হত। যখন এই হারের নীচে জন্মহার কমে যায়, তখনই জনসংখ্যা কমতে থাকে। ২০২১ সালের পর থেকে বিশ্বের ৪৬ শতাংশ দেশেরই জন্মহার কমতে শুরু করেছে। ২১০০ সালের মধ্যে এই হার ৯৭ শতাংশে পৌছবে।
নিম্নমুখী এই জন্মহার একাধিক ক্ষেত্রে ঝুঁকির সৃষ্টি করতে পারে। এর মধ্য়ে স্বাস্থ্য়ক্ষেত্র, সামাজিক কল্যাণ ও আর্থিক বৃদ্ধিতে ব্যাপক প্রভাব পড়বে। সরকারগুলিকে দেশের জন্মহার বাড়াতে কঠোর নীতিও আনতে হতে পারে।