ওয়াশিংটন: অসহ্য মাথা ব্যাথা। সাধারণ ওষুধ বা পেইন কিলার খেয়েও মিলছিল না নিস্তার। একদিন বাইবেল পড়তে পড়তেই সংজ্ঞা হারিয়েছিলেন, সঙ্গে সঙ্গেই তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে ছোটেন পরিবারের সদস্যরা। যখন তাঁর ঘুম ভাঙল, তখন তাঁর কিছু মনে নেই। শুধু ওই দিনের নয়, বিগত ৩০ বছরে তাঁর জীবনে কী হয়েছে, কিছুই মনে নেই। তাঁর যে বিয়ে হয়েছে, দুই সন্তান রয়েছে-কিছুই মনে নেই। তাঁর ধারণা, এখনও সে কিশোরী। এমন অদ্ভুত ঘটনা শুনেছেন আগে কখনও? অবিশ্বাস্য মনে হলেও, এমনটাই অভিজ্ঞতা হয়েছে কিম ডেনিকোলা (Kim Denicola) নামক ৬০ বছর বয়সী এক বৃদ্ধার।
লুইসিয়ানার বাসিন্দা কিম বিগত চার বছর ধরে পরিবারের সঙ্গে জাকজমক করে পালন করছেন ক্রিসমাস। কারণ, তার আগের ৩০ বছরের কথা তাঁর এক বিন্দুও মনে নেই। তাই জীবন থেকে হারিয়ে যাওয়া এতগুলি বছরের আনন্দই শেষ বয়সে এসে লুটেপুটে নেওয়ার চেষ্টা করছেন তিনি। কিন্তু কী হয়েছিল কিমের, যে কারণে তাঁর জীবনের ৩০টা বসন্ত সাদা খাতার মতো হয়ে গেল?
নিউ ইয়র্ক পোস্টের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৮ সালে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন কিম ডেনিকোলা নামক ওই মহিলা। অসহ্য মাথা ব্যাথা শুরু হয় তাঁর। একদিন তিনি বাইবেল পড়ছিলেন, হঠাৎ সংজ্ঞা হারান। যখন তাঁর জ্ঞান ফেরে, দেখেন হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে। আশেপাশে যারা দাঁড়িয়ে রয়েছেন, কাউকেই চিনতে পারছেন না। নার্স তাঁকে জিজ্ঞাসা করেন, এটা কত সাল? জবাবে শান্ত গলায় কিম বলেন, ১৯৮০।
চমকে ওঠেন সকলে। ২০১৮ সালে দাঁড়িয়ে তিনি কীভাবে দাবি করছেন যে এটা ১৯৮০? তাঁর স্বামী ও সন্তানরা কথা বলার চেষ্টা করলে, আরও অবাক হয়ে যান ওই মহিলা। কারণ তাঁর শেষ স্মৃতি হল, স্কুলের শেষ দিনের। পরীক্ষা দিয়ে গাড়িতে উঠছিলেন তিনি। এরপর আর কিছু মনে নেই।
চিকিৎসকেরা জানান, ট্রানসিয়েন্ট গ্লোবাল অ্যামনেসিয়ায় আক্রান্ত ওই মহিলা। কিন্তু একাধিক পরীক্ষা ও স্ক্যান করেও জানা যায়নি যে কীভাবে ৩০ বছরের যাবতীয় স্মৃতি ভুলে গেলেন তিনি। বিগত ৪ বছরে যেহেতু তাঁর স্মৃতি ফিরে আসেনি, তাই পুরনো স্মৃতি ফিরে আসার সম্ভাবনা প্রায় নেই বলেই ধরে নিয়েছেন চিকিৎসকরা।