মালে: ‘১০ মে-র পর কোনও ভারতীয় সেনা, এমনকি অসামরিক পোশাকেও থাকবে না’। ‘ড্রাগনে’র সঙ্গে প্রতিরক্ষা চুক্তির পরই মলদ্বীপের রাষ্ট্রপতি মহম্মদ মুইজ্জুর গলায় শোনা গেল গর্জন। মঙ্গলবার (৫ মার্চ), প্রতিরক্ষা চুক্তির নামে একপ্রকার, দেশকে বেজিংয়ের কাছে বেচেই দিলেন তিনি। চুক্তি অনুযায়ী, দ্বীপরাষ্ট্রকে ‘বিনামূল্যে’ সামরিক সহায়তা প্রদান করবে চিন। ড্রাগনের দেশ কখনও বিনামূল্যে কাউকে কিছু দিয়েছে? এর আগে শ্রীলঙ্কার হাম্বানটোটা বন্দর হোক, কিংবা পাকিস্তানের গদর বন্দর, ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভস’-এর নামে একের পর এক দেশের সম্পদ দখল করেছে তারা। কাজেই, এই বিনামূল্যের খেসারত যে মলদ্বীপকে বড় অঙ্কে দিতে হবে, তা বলাই বাহুল্য।
এর আগেই মলদ্বীপ থেকে ভারতকে সেনা সরানর জন্য ১০ মার্চের সময়সীমা দিয়েছিলেন মুইজ্জু। এদিন চিনের সঙ্গে চুক্তির পর বা আতোল ইধাফুসি নামে এক জায়গায় আয়োজিত জনসভায় মুইজ্জু বলেন, “এরা (ভারতীয় সেনারা) কিছুতেই যাচ্ছে না। ওরা আবার ফিরে আসছে। উর্দি ছেড়ে, অসামরিক পোশাকে আসছে। আমি বলছি, ১০ মে-র পর দেশে আর কোনও ভারতীয় সেনা থাকবে না। উর্দিতেও নয়, অসামরিক পোশাকেও নয়। ভারতীয় সামরিক বাহিনী কোনও পোশাকেই এই দেশে থাকবে না।” প্রসঙ্গত, এক সপ্তাহ আগেই ভারতীয় অসামরিক নাগরিকদের একটি দল মলদ্বীপে গিয়েছে। দ্বীপরাষ্ট্রটিকে ভারত তিনটি বিমান দিয়েছিল। সেই বিমানগুলি এর আগে ভারতীয় সেনাকর্মীরাই চালাতেন। তাঁদের অনুপস্থিতিতে বিমানগুলি পরিচালনার জন্যই এই অসানরিক দল পাঠানো হয়েছিল। মলদ্বীপের রাষ্ট্রপতির এদিনের বক্তব্য, তাঁদের উদ্দেশ্য করে কিনা, তা স্পষ্ট নয়।
বর্তমানে, মলদ্বীপ সফরে এসেছে এক চিনা সামরিক প্রতিনিধি দল। উদ্দেশ্য, দুই দেশএর মধ্য সামরিক সহযোগিতা জোরদার করা। এদিন, মলদ্বীপের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী মহম্মদ ঘাসান মাউমুনের সঙ্গে দেখা করেন চিনের আন্তর্জাতিক সামরিক সহযোগিতা অফিসের ডেপুটি ডিরেক্টর মেজর জেনারেল ঝাং বাওকুন। দুজনের বৈঠকের পর, এই প্রতিরক্ষা চুক্তি স্বাক্ষর হয়। প্রতিরক্ষা সহযোগিতা বলতে, মলদ্বীপের ঠিক কোন কোন বিষয়ে দখলদারি করবে চিন, তার বিশদ বিবরণ দেয়নি মলদ্বীপের প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। তবে, ইতিমধ্যেই মলদ্বীপকে ১২টি পরিবেশ-বান্ধব অ্যাম্বুলেন্স উপহার দিয়েছে চিন। তার আগে, একটি হাই-টেক চিনা গবেষণা জাহাজ নোঙর করেছিল মলদ্বীপের বন্দরে। কাজেই সবদিক থেকেই মলদ্বীপকে আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে ফেলছে, তা বোঝাই যাচ্ছে।