ওয়াশিংটন: টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ দেখতে গিয়ে হারিয়ে যাওয়া ডুবোজাহাজটির অনুসন্ধানে বড় মোড়। অনুসন্ধান এলাকায় পাওয়া গেল একটি জলযানের ধ্বংসাবশেষ। টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষের খুব কাছেই। তবে ওই ধ্বংসাবশেষ নিখোঁজ ডুবোজাহাজটির কিনা, তা এখনও জানা যায়নি। ওই এলাকায় বেশ কয়েকটি ‘রিমোটলি অপারেটেড ভেহিকল’ বা ‘আরওভি’ নামিয়ে ডুবোজাহাজটির সন্ধান করছে ইউএস কোস্ট গার্ড-সহ বেশ কয়েকটি সংস্থা। বৃহস্পতিবার (২২ জুন) কোস্ট গার্ডের পক্ষ থেকে টুইট করা হয়েছে, “টাইটানিকের কাছে অনুসন্ধান এলাকার মধ্যে একটি আরওভি একটি ধ্বংসাবশেষ ক্ষেত্র আবিষ্কার করেছে। ইউনিফাইড কমান্ডের বিশেষজ্ঞরা এই তথ্য বিশ্লেষণ করছেন।” এদিকে, পাঁচ যাত্রীর ডুব দেওয়ার সময় টাইটান নামে ওশানগেট এক্সপেডিশনের ওই ডুবোজাহাজটিতে ৯৬ ঘণ্টার অক্সিজেন ছিল। এদিনই সেই অক্সিজেন শেষ হয়ে যাওয়ার কথা। এরই মধ্যে এই ধ্বংসাবশেষ ক্ষেত্র আবিষ্কারের খবর এল।
জানা গিয়েছে, ‘হরাইজন আর্কটিক’ নামে কানাডার এক জাহাজের একটি আরওভি ওই ধ্বংসাবশেষের খোঁজ পেয়েছে। বৃহস্পতিবার ভোরেই আরওভিটি সমুদ্রের তলদেশে পৌঁছে ডুবোজাহাজটির সন্ধান শুরু করেছিল। আশা করা হচ্ছে, শিগগিরই এই বিষয়ে একটি সাংবাদিক সম্মেলন করবে কোস্টগার্ড। তখন এই ধ্বংসাবশেষের বিষয়ে আরও বিশদে জানানো হবে। উত্তাল অতলান্তিকে এই জটিল অনুসন্ধান এবং উদ্ধারকাজে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডার সঙ্গে যোগ দিয়েছে ফ্রান্স, ব্রিটেন এবং ফ্রান্সের মতো আরও বেশ কয়েকটি দেশ। মার্কিন উপকূলরক্ষী বাহিনী জানিয়েছে, এদিনই অনুসন্ধানে যোগ দিয়েছে ফরাসী জাহাজ লা আতলান্তের সঙ্গে যুক্ত আরও একটি আরওভি। অক্সিজেন ফুরিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনায়, উদ্ধারকারীদের সময়ের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় নামতে হয়েছে। যত দেরি হচ্ছে, ততই ওই ডুবোজাহাজের যাত্রীদের জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করার সম্ভাবনা কমছে। তবে, তারপরও হাল ছাড়ছেন না উদ্ধারকারীরা।
ইউএস কোস্ট গার্ডের রিয়ার অ্যাডমিনিস্টার জন মাগার বলেছেন, “মানুষের বাঁচার অদম্য ইচ্ছারও কথাও মাথায় রাখতে হবে। তাই আমরা আজ সকালে নতুন উদ্যমে উদ্ধার প্রচেষ্টা শুরু করেছি।” তিনি আরও জানিয়েছেন, উদ্ধার করার সঙ্গে সঙ্গে যাতে ওই যাত্রীদের চিকিৎসা শুরু করা যায়, সেই জন্য চিকিৎসা বিশেষজ্ঞদের একটি দলকেও ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে। দিন-রাত এক করে কাজ করে চলেছেন উদ্ধারকারীরা। গত রবিবার টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ স্থলে যাওয়ার জন্য ডুব দিয়েছিল ওশানগেটের টাইটান ডুবোজাহাজ। মাত্র দুই ঘণ্টা পরই মূল জাহাজটির সঙ্গে সাবমেরিনটির যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। ডুবোজাহাজে আছেন এক ব্রিটিশ ব্যবসায়ী-অভিযাত্রী, এক বিশিষ্ট পাকিস্তানি ব্যবসায়ী এবং তাঁর পুত্র, একজন ফরাসি টাইটানিক বিশেষজ্ঞ এবং ওশানগেট সংস্থার সিইও।