ঢাকা: প্রতিনিয়ত বাংলাদেশে আক্রান্ত হচ্ছেন হিন্দুরা, এমনটাই অভিযোগ। ভারতীয় জাতীয় পতাকাকেও চরম অবমাননার দৃশ্য ধরা পড়েছে। এবার বাংলাদেশে ‘জয় বাংলা’কে জাতীয় স্লোগান বাতিল করার ঘোষণা করতে উদ্যোগী ইউনূস সরকার। বাংলাদেশের হাইকোর্টের রায় বাতিলের আবেদন করেছে রাষ্ট্রপক্ষ। আগামী রবিবার এই আবেদনের শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে।
বাংলাদেশের আবেগ-অনুভূতির সঙ্গে জড়িয়ে আছে জয় বাংলা স্লোগান। প্রতিটি আন্দোলন-সংগ্রামে প্রত্যেক বাঙালি সমস্বরে ‘জয় বাংলা’ স্লোগানে মূখরিত করত ওপার বাংলার আকাশ-বাতাস। ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে স্বাধীনতা সংগ্রামেও দিকে দিকে উঠেছিল জয় বাংলা স্লোগান। আওয়ামি লীগ সহ অধিকাংশ রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনই ‘জয় বাংলা’কে জাতীয় স্লোগান মনে করে। কিন্তু হাসিনা সরকার পতনের পর সেই স্লোগান বদল করতেই তৎপর ইউনূস সরকার।
এদিকে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের হত্যার দিন, ১৫ অগস্টকেও ‘জাতীয় শোক’ দিবসের ছুটি ঘোষণা স্থগিত করেছে বাংলাদেশের আপিল বিভাগ। প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
২০০৯ সালের ১৫ অগস্টকে জাতীয় শোক দিবস ঘোষণা করে হাইকোর্ট। এতদিন ১৫ অগস্ট শোক দিবস হিসাবেই পালিত হচ্ছিল বাংলাদেশে। গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশত্যাগের পর, ক্ষমতার পালাবদলে মহম্মদ ইউনূস সরকার চলতি বছর এই দিবস পালন করেনি। ১৩ আগস্ট এই বছরের ছুটিটি বাতিলের বিজ্ঞপ্তি জারি করে অন্তর্বর্তী সরকার। এবার শোক দিবস পুরোপুরি বাতিল করতে চাইল রাষ্ট্রপক্ষ।
এর আগে ১৯৯৬ সালে আওয়ামি লীগ ক্ষমতাকালে ১৫ অগস্টকে জাতীয় শোক দিবস হিসেবে পালন করা হত।
কিন্তু বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোট ক্ষমতায় এসে ২০০২ সালে জাতীয় শোক দিবস পালনের সিদ্ধান্ত বাতিল করে। ৬ বছর পর হাইকোর্টের আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে ২০০৮ সালে ১৫ অগস্ট জাতীয় শোক দিবস বহাল রাখে। ২০১৭ সালে সুপ্রিম কোর্টের এক আইনজীবী ‘জয় বাংলা’কে জাতীয় স্লোগান ঘোষণা করার রিট পিটিশন দাখিল করেন। পরে ২০২০ সালে ‘জয় বাংলা’কে জাতীয় স্লোগান হিসেবে ঘোষণা করে হাইকোর্ট। ২০২২ সালে জয় বাংলাকে রাষ্ট্রীয়ভাবে জাতীয় স্লোগান হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে পরিপত্র জারি করে শেখ হাসিনা সরকারের মন্ত্রিপরিষদ।