মালে: চরম ভারত বিদ্বেষ, এটাই মলদ্বীপের বর্তমান প্রেসিডেন্ট মহম্মদ মুইজ্জুর শাসনের মূল মন্ত্র। ‘ইন্ডিয়া আউট’ প্রচারকে সামনে রেখে, ভারত বিরোধী আবেগ তৈরি করে ক্ষমতায় এসেছেন চিনপন্থী মুইজ্জু। এর আগে তাঁর ভারত বিদ্বেষের খেসারত দিতে হয়েছিল দ্বীপরাষ্ট্রের পর্যটন খাতকে। যা সেইদেশের অর্থনীতির মূল চালিকা শক্তি। আর এখন মুইজ্জুর গোঁয়ার্তুমির খেসারত দিতে বসেছে মলদ্বীপের আগামী প্রজন্ম। শিক্ষকরাই তো তৈরি করেন পরবর্তী প্রজন্মকে। আর মলদ্বীপ এই মুহূর্কে ডুবতে বসেছে চরম শিক্ষা সংকটে। মুইজ্জু সরকার আসার পর থেকে দলে দলে মলদ্বীপ ছাড়ছেন সেখানকার ভারতীয় শিক্ষকরা। বিষয়টি সেই দেশের সংসদেও তুলেছে মলদ্বীপের বিরোধী দল। পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে মুইজ্জু সরকার।
চিনের কথায় নাচছেন মুইজ্জু। তিনি জানেন, বেজিংকে খুশি করতে না পারলে, তাঁর গদি বাঁচানো কঠিন। তাই, মলদ্বীপ জুড়ে কড়া ‘ইন্ডিয়া আউট’ প্রচার চলছে। দীর্ঘ কয়েকদশক ধরে সাহায্য করে আসা, ভারতীয়সেনাদের তাড়িয়েছেন। আর এবার মালদ্বীপের শিক্ষার্থীদের উপর মুইজ্জুর এই ঘৃণামূলক প্রচারের প্রভাব ক্রমে দৃশ্যমান হচ্ছে। বিপুল সংখ্যক ভারতীয় শিক্ষক সেই দেশে যান শিশুদের পড়াতে। বলা যেতে পারে ভারতীয় শিক্ষকরাই সেই দেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে চালান। কিন্তু, মুইজ্জু সরকার আসার পর থেকে, তাঁর ভারত বিরোধী প্রচারের কারণে, দলে দলে ভারতীয় শিক্ষকরা মালদ্বীপ ছেড়ে চলে গিয়েছেন। ফলে, গভীর শিক্ষা সংকট তৈরি হয়েছে মলদ্বীপে।
সংসদে ভারতীয় শিক্ষকদের মলদ্বীপ ছাড়ার প্রসঙ্গ তুলে মুইজ্জু সরকারের ব্যাখ্যা চেয়েছে সেই দেশের প্রধান বিরোধী দল, মলদ্বীপ ডেমোক্রেটিক পার্টি বা এমডিএম। il মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) দ্বীপরাষ্ট্রের সংসদে, এমডিএম সাংসদ মহম্মদ শহিদ প্রশ্ন করেন, “ইন্ডিয়া আউট প্রচারের কারণে বহু শিক্ষক দেশ ছেড়েছেন। এর ফলে দেশে শিক্ষকের ব্যাপক ঘাটতি দেখা দিয়েছে। শিশুদের লেখাপড়ার ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। এই গুরুতর সমস্যা মোকাবিলায় সরকার কী পদক্ষেপ নিচ্ছে?”
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলির প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই প্রশ্নের মুখে সংসদে কোণঠাসা হয়ে পড়ে মুইজ্জু সরকার। আমতা আমতা করে জবাব দেওয়ার চেষ্টা করেন শিক্ষামন্ত্রী। শিক্ষকের ঘাতটি আছে বলে মেনে নিলেও, তিনি শিক্ষা সংকটের দাবি মানেননি। এর পিছনে সরকারের কোনও ভূমিকা থাকার কথাও অস্বীকার করেছেন। মলদ্বীপের শিক্ষামন্ত্রী ড. ইসমাইল শফিফু বলেন, “ভারতীয় শিক্ষকরা অনেক সময়ই মলদ্বীপ ছেড়ে চলে যান। এতে কয়েক সপ্তাহের জন্য শিশুদের পড়াশোনায় সমস্যা হয়। এটা কোনও নতুন বিষয় নয়। এর আগেও আমাদের দেশে এমনটা ঘটেছে। গত ৩০ বছরের পরিসংখ্যান লক্ষ্য করলে দেখা যাবে, ভারত থেকে এই ছোট্ট দ্বীপে অনেক সময় শিক্ষকরা এসে এক মাস থেকে আবার চলে যান। দেশে কোনো ধরনের শিক্ষা সংকট তৈরি হয়নি।”