মালে: ‘ইন্ডিয়া আউট’ প্রচারকে সামনে রেখেই ২০২৩-এর নভেম্বরে মলদ্বীপের প্রেসিডেন্ট হয়েছিলেন মহম্মদ মুইজ্জু। তারপর থেকে একের পর এক ভারত বিরোধী পদক্ষেপ করতে দেখা গিয়েছে তাঁর সরকারকে। ঐতিহাসিকভাবে মিত্রদেশ ভারতকে দূরে ঠেলে,বলা যেতে পারে চিনের কোলে উঠে বসেছিলেন মুইজ্জু। তাঁর মুখে তখন গরম গরম ভারত-বিরোধী মন্তব্য শোনা যেত। তবে, কয়েকদিন যেতে না যেতেই সম্ভবত তিনি বুঝেছেন কত ধানে কত চাল। তাই, অতি সাম্প্রতিক সময়ে সুর বদলাতে দেখা গিয়েছে ভারত মহাসাগরে অবস্থিত এই দ্বীপরাষ্ট্রকে। আর এবার সরাসরি ‘ইন্ডিয়া আউট’ অ্যাজেন্ডা নিয়ে চলার কথা অস্বীকার করলেন মলদ্বীপের রাষ্ট্রপতি। মহম্মদ মুইজ্জুর দাবি, আসলে তাদের দেশে নাকি বিদেশি সেনা উপস্থিতি নিয়ে ‘গুরুতর সমস্যা’ ছিল। সেটাই তিনি দূর করার চেষ্টা করেছেন মাত্র। তারই ভুল ব্যাখ্যা হয়েছে তিনি ভারত-বিরোধী বলে।
রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ পরিষদের ৭৯তম বার্ষিক অধিবেশনে যোগ দিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গিয়েছেন মুইজ্জু। বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) সেকানকার প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিনস লিডারশিপ সিরিজ-এ অংশ নিয়েছিলেন তিনি। সেখানেই এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “আমরা কখনই কোনও একটি নির্দিষ্ট দেশের বিরুদ্ধে ছিলাম না। আমাদের অ্যাজেন্ডা ইন্ডিয়া আউট ছিল না। দেশের মাটিতে বিদেশি সামরিক উপস্থিতি নিয়ে একটি গুরুতর সমস্যার সম্মুখীন হয়েছিল মলদ্বীপ। মলদ্বীপের জনগণ, দেশে কোনও বিদেশি সৈন্য থাকুক, তা চায় না।”
প্রথম থেকেই অবশ্য চিনপন্থী বলেই পরিচিত মহম্মদ মুইজ্জু। গত নভেম্বরে মলদ্বীপের রাষ্ট্রপতি হিসাবে তিনি দায়িত্ব গ্রহণ করার পর থেকেই ভারত ও মলদ্বীপের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের দ্রুত অবনতি হয়। মলদ্বীপকে, তাদেরই সুবিধার জন্য একটি বিমান ও দুটি হেলিকপ্টার উপহার দিয়েছিল ভারত। সেই তিনটি এয়ারক্র্যাফ্টকে পরিচালনার জন্য সেই দেশে মেরেকেটে ৯০ জন ভারতীয় সামরিক কর্মী থাকতেন। রাষ্ট্রপতি হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে নয়া দিল্লিকে সেই সেনাকর্মীদের প্রত্যাহার করার কথা বলেছিলেন মুইজ্জু। সময় দিয়েছিলেন ১০ মে পর্যন্ত। শেষ পর্যন্ত ওই সময়ের আগেই সমস্ত সামরিক কর্মীদের সরিয়ে, তার বদলে অসামরিক কর্মীদের পাঠিয়েছিল ভারত।
তিনি যে ভারত বিরোধী নন, তা প্রমাণ করতে আমেরিকায় দাঁড়িয়ে মুইজ্জু আরও জানিয়েছেন, সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে অপমান করার জন্য তিনি তাঁর উপমন্ত্রীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছিলেন। তিনি বলেন, “কারও এমন কথা বলা উচিত নয়। আমি এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছি। আমি কাউকে এভাবে অপমান করা মেনে নেব না, সে নেতা হোক বা কোনও সাধারণ মানুষ। প্রত্যেক মানুষেরই মান-সম্মান আছে।”