কলকাতা: আজ ১ জানুয়ারি। শুরু হল নতুন বছর। আপনাকে নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়েই এই নিবন্ধ শুরু করছি। আসলে, বিশ্বের অধিকাংশ দেশেই ১ জানুয়ারিকেই নতুন বছরের সূচনা হিসেবে ধরা হয়। বিশ্ব জুড়ে অজস্র ক্যালেন্ডার রয়েছে। আমাদের বাঙালিদের পয়লা বৈশাখের মতো, সেগুলির নতুন বছরের সূচনা হয়, অন্য সময়। কিন্তু, ১ জানুয়ারি দিনটা নতুন বছরের সূচনা হিসেবে প্রায় সকল দেশেই উদযাপন করা হয়। কিন্তু, কেন ১ জানুয়ারি দিনটাই নতুন বছরের শুরু হিসেবে পালন করা হয়? অন্য কোনও দিন নয় কেন? আসুন ২০২৪ সালের ১ জানুয়ারি জেনে নেওয়া যাক, এই দিনটির সঙ্গে জড়িয়ে থাকা ইতিহাস, দিনটির তাৎপর্য এবং ঐতিহ্য।
১ জানুয়ারিকে নতুন বছরের শুরু হিসাবে প্রথমবার বিবেচনা করা হয়েছিল ৪৫ খ্রিস্টপূর্বাব্দে। এর আগে, রোমান ক্যালেন্ডার শুরু হত মার্চ মাসে এবং তা ছিল ৩৫৫ দিনের। রোমান স্বৈরশাসক জুলিয়াস সিজার ক্ষমতায় আসার পর, তিনি এই ক্যালেন্ডারের সংস্কার করেছিলেন। তিনি ১ জানুয়ারিকে বছরের প্রথম দিন হিসাবে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। মূলত, এই মাসের নামের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা রোমান দেবতা, ‘জানুস’কে সম্মান জানাতে। ‘জানুস’ ছিলেন রোমানদের যে কোনও সূচনার দেবতা। তাঁর দুটি মুখ আছে। একটি মুখ অতীতের দিকে ফিরে তাকায়, অপর মুখটি দেখে ভবিষ্যতের দিকে।
তবে, ষোড়শ শতকের মাঝামাঝি পর্যন্ত, ইউরোপের বড় অংশই এই ক্যালেন্ডার গ্রহণ করেনি। খ্রিস্টধর্মের আবির্ভাবের সঙ্গে সঙ্গে, ১ জানুয়ারিকে নতুন বছরের সূচনা হিসাবে পালন করাকে পৌত্তলিক বিশ্বাস হিসাবে দেখা হত। তাদের মত ছিল, ২৫ ডিসেম্বর অর্থাৎ, যীশুর জন্মের দিনটিই বছরের সূচনা হিসাবে গ্রহণ করা উচিত। কিন্তু, পোপ গ্রেগরি, জুলিয়ান ক্যালেন্ডারের সংস্কার করেছিলেন এবং ১ জানুয়ারিকে নতুন বছরের প্রথম দিন হিসাবে বেছে নেওয়ার পর থেকেই এটা ধীরে ধীরে গোটা খ্রিষ্টান জগৎ জুড়ে গ্রহণযোগ্য হয়ে উঠেছিল।
তবে, নতুন বছর উদযাপনের প্রথা, মনে করা হয় শুরু হয়েছিল প্রাচীন ব্যাবিলনে। আজ থেকে প্রায় ৪০০০ বছর আগে, অর্থাৎ, ২০০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে। ব্যাবিলনীয়রা ‘আকিতু’ নামক ১১ দিনের এক উৎসব দিয়ে নতুন বছর শুরু করত। ১১ দিনের প্রতিদিন ভিন্ন ভিন্ন আচার অনুষ্ঠান পালন করা হত। তবে, তাদের নতুন বছর শুরু হত মার্চের শেষের দিকে। আর সেই থেকেই নতুন বছরকে ধুমধাম করে উৎসবের মধ্য দিয়ে স্বাগত জানানোর প্রথা চালু হয়েছিল।