নিউজ ৯ গ্লোবাল সামিটের জার্মানি সংস্করণের দ্বিতীয় দিনে বিবিধ ক্ষেত্রের নক্ষত্রদের উপস্থিতিতে ভারত-জার্মান দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নানাভাবে দিশা পাচ্ছে। এদিন গোল্ডেন বল সেশনের উদ্বোধন করেন টিভি ৯ নেটাওয়ার্কের এমডি-সিইও বরুণ দাস। স্টুটগার্টে উদ্বোধনী সম্ভাষণে শুক্রবার তিনি বলেন, “আজকের অধিবেশন আবারও প্রমাণ করেছে যে ভারত এবং জার্মানি একসঙ্গে গোটা বিশ্বের ভবিষ্যতের জন্য একটি নতুন দিগন্ত খুলে দিতে পারে।”
এদিন অনুষ্ঠানের শুরুতেই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়াকে স্বাগত জানানোর পাশাপাশি জার্মানির বাডেন-ভ্যুর্টেমবের্গের মন্ত্রী-প্রেসিডেন্ট উইনফ্রিড ক্রেটসম্যানকেও স্বাগত জানান তিনি। একইসঙ্গে ফেডারেল মন্ত্রী সেম ওজদেমিকের বক্তব্যেরও ভূয়সী প্রশংসা করেন বরুণ দাস। তিনি বলেন, জার্মানির খাদ্য ও কৃষিমন্ত্রী হিসেবে সেম ওজদেমির একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তুলে ধরেছেন। কীভাবে ভারত এবং জার্মানি একসঙ্গে কাজ করতে পারে, কীভাবে নতুন দিগন্ত খুলতে পারে, আরও শক্তিশালী ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যেতে পারে দুই দেশ তা তিনি তাঁর ভাষণে সুস্পষ্টভাবে বুঝিয়েছেন।
আবার এদিনই প্রখ্যাত আইনজ্ঞ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রাক্তন জ্বালানি মন্ত্রী গুন্থার ওটিঙ্গারেরও প্রশংসা করেন। ডিজিটাল ভবিষ্যৎ সম্পর্কে তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা এদিন ফের একবার মনে করান টিভি ৯ নেটওয়ার্কের এমডি ও সিইও। তিনি বলেন, “আজকের অধিবেশনে সকল বক্তারা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে খুবই দরকারি কথা বলেছেন।” এর জন্য কৃতজ্ঞতাও প্রকাশ করেন তিনি। বলেন, “আমি আশা করি, গোটা বিশ্ব যেভাবে কঠিন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে তা মোকাবিলা করতে আজকের আলোচনা বিশেষভাবে সাহায্য করবে।”
ফোর্ড মোটরসের প্রতিষ্ঠাতা হেনরি ফোর্ডের বক্তব্যের রেশ ধরেও কথা বলতে শোনা যায় টিভি ৯ নেটওয়ার্কের সিইও-এমডিকে। তিনি বলেন, “তাঁর কথা আমার খুবই ভাল লাগে। বিশ্বের উন্নয়নের পাশাপাশি মানবতার সুরক্ষার জন্যও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কথা বলেন তিনি। ফোর্ড বলেছিলেন একইসঙ্গে পথ চলা তো একটা শুরু। একসঙ্গে হেঁটেই ধীরে ধীরে উন্নতির দিকে এগিয়ে যাওয়া যায়। সেই রাস্তাতেই আসে সাফল্য।” বরুণ দাস এদিন হেনরি ফোর্ডের এই বক্তব্যটি প্রথমে জার্মান এবং পরে ইংরেজিতে অনুবাদ করে বর্ণনাও করেছেন।
উঠে এল মুম্বইয়ের প্রসঙ্গ
বরুণবাবু আরও বলেন, “আমরা ভাগ্যবান যে আজকের দিনে এই জায়গায় আমরা ঐক্যবদ্ধ হতে পেরেছি। বাডেন-ভ্যুর্টেমবের্গের শুধুমাত্র উদ্যোগ বা নিত্যনতুন উদ্ভাবনের জন্যই নয়, বাইরে থেকে আসা মানুষদের উষ্ণ অভ্যর্থনার জন্যও পরিচিত। বাডেন-ভ্যুর্টেমবের্গ বিশ্বের অর্থনীতিতে একটি উল্লেখযোগ্য জায়গাও তৈরি করে ফেলেছে। গত বছর পণ্য ও পরিষেবা খাতে ভাল পরিমাণ অর্থও উপার্জন করেছে।” এখানেই না থেমে তাঁর আরও সংযোজন, “১৯৬৮ সালে আমার যখন জন্মও হয়নি, তখন ভারত ছিল মাত্র ২০ বছরের যুবক দেশ। কিন্তু, তখন থেকেই জার্মানির বাডেন-ভ্যুর্টেমবের্গ ভারতের মহারাষ্ট্রের সঙ্গে একটি বিশেষ সম্পর্ক বজায় রেখেছে। মুম্বইয়ের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে তার আদলেই উঠে আসতে থাকে বাডেন-ভ্যুর্টেমবের্গ। ধীরে ধীরে নতুন রূপে নিজেকে মেলে ধরে এই শহর।” তিনি আরও বলেন, “এটি এমন একটি সম্পর্ক যার হাত ধরে নানা ক্ষেত্রের ভিত আরও শক্তিশালী হয়েছে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে পারস্পরিক সহযোগিতার কারণে কয়েক দশকের কাজে এমনটা সম্ভব হয়েছে।” উদাহরণ হিসাবে, মহারাষ্ট্র এবং বাডেন-ভ্যুর্টেমবের্গ সঙ্গে স্বাক্ষরিত চুক্তির কথা উল্লেখ করেন বরুণ দাস। তাঁর কথায়, “দক্ষ কর্মী নিয়োগের আশাতেই এই চুক্তি। তিনি আরও বলেন, “আমরা আশা করি, আজকের অনুষ্ঠান আমাদের যাবতীয় সম্পর্ককে আরও মজবুত করবে। সাফল্যমণ্ডিত হবে যাবতীয় উদ্যোগ।”