ইসলামাবাদ: আর মাত্র কিছুক্ষণের অপেক্ষা। তারপরই ভাগ্য নির্ধারণ হবে ইমরান খানের। তিনি আদৌই আর পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী থাকবেন কিনা, তা নির্ধারণ করতেই আস্থা ভোটের ব্যবস্থা করা হয়েছে পাকিস্তানের জাতীয় সংসদে। দুপুর ১২টা থেকে শুরু হবে ভোটগ্রহণ। তার আগেই বিস্ফোরক দাবি করলেন পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ মন্ত্রী শেখ আহমেদ। একটি সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি দাবি করেন যে, আস্থা ভোটের পরই গ্রেফতার হতে পারেন ইমরান খান। ইসলামাবাদে ইতিমধ্যেই ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। উল্লেখ্য, ২০১৮ সালে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন ইমরান খান। সম্প্রতিই বিরোধীরা দাবি করেছেন যে, দেশের অর্থনীতি, বিদেশনীতি – কিছুই সামলাতে পারছেন না ইমরান খান। তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতিরও অভিযোগ উঠেছে। অন্য়দিকে, ইমরান খানও দাবি করেছেন যে, তাঁকে ও তাঁর সরকারকে গদি থেকে সরানোর জন্য বিদেশ থেকে চক্রান্ত করা হচ্ছে।
দেশের সংবিধানকে লঙ্ঘন করেছে ইমরান খান ও তাঁর সরকার। অনাস্থা ভোটও দিতে দেওয়া হয়নি। সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেই পাকিস্তান পিপলস পার্টির নেতা বিলাওয়াল ভুট্টো জ়ারদারি বলেন, “যতক্ষণ অবধি ইমরান খানের সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাবে ভোট দিতে দেওয়া হবে না, ততক্ষণ বিরোধীরা পাকিস্তানের সংসদের বাইরে ধর্ণায় বসে থাকবে।”
ইমরান খানের দাবিই মেনে নিলেন পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি। পাকিস্তানের বিধাানসভা ভেঙে দেওয়া ও দ্রুত নির্বাচনের যে দাবি জানিয়েছিলেন তিনি, তাই মেনে অধিবেশন ভেঙে দেওয়া হল। অন্যদিকে, সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, আগামী ৯০ দিনের মধ্যেই নির্বাচন করতে হবে। ওই নির্বাচনেই স্থির করা হবে নতুন প্রধানমন্ত্রী কে হবেন।
অনাস্থা প্রস্তাব খারিজ করা নিয়ে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা গ্রহণ করতে পারে পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট। এদিন অনাস্থা প্রস্তাব খারিজের পরই সুপ্রিম কোর্টের বার প্রেসিডেন্ট আহসান ভুন বলেন, “ইমরান খান পাকিস্তানের সংবিধান লঙ্ঘন করেছে। আমি সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের অনুরোধ করছি গোটা বিষয়টি দেখতে এবং স্বতঃপ্রণোদিত মামলা গ্রহণ করতে।”
পাকিস্তান পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি বলেন, “সরকার সংবিধান লঙ্ঘন করেছেন। আমাদের অনাস্থা প্রস্তাবে ভোট দিতে দেয়নি। বিরোধী জোট এত সহজে সংসদ ছেড়ে যাবে না। আমাদের আইনজীবীরা সুপ্রিম কোর্টে যাচ্ছেন। যেকোনও প্রকারেই আমরা পাকিস্তানের সংবিধানকে রক্ষা করব। আজই সুপ্রিম কোর্টে শুনানির আর্জি জানাচ্ছি আমরা।”
Government has violated constitution. did not allow voting on no confidence motion. The united opposition is not leaving parliament. Our lawyers are on their way to Supreme Court. We call on ALL institutions to protect, uphold, defend & implement the constitution of Pakistan ?? pic.twitter.com/sThqng0SI5
— BilawalBhuttoZardari (@BBhuttoZardari) April 3, 2022
অধিবেশন স্থগিত হতেই দেশের রাষ্ট্রপতির কাছে যথা সম্ভব দ্রুত নির্বাচন করার দাবি জানিয়েছেন। বিরোধীদের উদ্দেশে বার্তা দিয়ে ইমরান বলেন, “ষড়যন্ত্র ব্যর্থ হয়েছে। এবার নির্বাচনের প্রস্তুতি নিন। জনতাই ঠিক করবেন, তাঁরা কার হাতে দেশের দায়িত্বভার ছাড়তে চান।”
অধিবেশন বাতিল হতেই জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিলেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। ভাষণের শুরুতেই তিনি দেশবাসীকে ধন্যবাদ জানান। অনাস্থা প্রস্তাব এনে তাঁর বিরুদ্ধে যে চক্রান্ত করার চেষ্টা করা হয়েছে, তা ব্যর্থ হয়ে গিয়েছে বলে জানান ইমরান। একইসঙ্গে তিনি বলেন, “আমি রাষ্ট্রপতিকে বিধানসভা ভেঙে দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছি। আমরা একটি গণতান্ত্রিক দেশ। দেশের জনগণকেই সিদ্ধান্ত নিতে দেওয়া হোক তাঁরা কাকে বেছে নিতে চান। এই বিদেশি ষড়যন্ত্রকে কিছুতেই সফল হতে দেব না আমরা।”
ইমরানের বিরুদ্ধে আনা অনাস্থা প্রস্তাব খারিজ করার পরই স্থগিত করে দেওয়া হল অধিবেশনও। আগামী ২৫ এপ্রিল অবধি অধিবেশন স্থগিত করে দেওয়া হয়েছে।
ইমরান খানের বিরুদ্ধে আনা অনাস্থা প্রস্তাব খারিজ করে দিলেন ডেপুটি স্পিকার। প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে আনা অনাস্থা প্রস্তাব সংবিধান বিরোধী, এই ব্যাখ্যা দিয়েই প্রস্তাব খারিজ করে দেন। আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে, এই দাবিই করেছেন সংসদের স্পিকার।
আস্থাভোটের আগেই সংসদের বাইরে জমায়েত করেছিল ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের সমর্থকরা। কিন্তু শহরজুড়ে ১৪৪ ধারা জারি থাকায় এবং সংসদের নিরাপত্তা রক্ষায় তাদের শক্তি প্রয়োগ করে সরিয়ে দিল পুলিশ।
সূত্রের খবর, আস্থা ভোট শুরুর আগেই ঘনিষ্ঠ নেতাদের সঙ্গে জরুরি বৈঠকে বসেন ইমরান খান। রুদ্ধদ্বারের পিছনে কী আলোচনা হয়েছে, তা এখনও জানা যায়নি।
আস্থা ভোটে অংশ নিতে সংসদে পৌঁছলেন শাসক ও বিরোধী নেতারা। জানা গিয়েছে, শাসক দলের তরফে এখনও অবধি মাত্র ২২ জন সদস্য হাজির হয়েছেন। অন্যদিকে, ১৭৬ জন বিরোধী নেতাও হাজির হয়েছেন পাক জাতীয় সংসদে।
তাঁর বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব এনেছেন বিরোধীরা। প্রধানমন্ত্রীর গদি বাঁচাতে প্রয়োজন ১৭২টি ভোটের। আস্থা ভোট নিয়ে চরম উত্তেজনা থাকলেও, সূত্রের খবর আজ সংসদে নাও যেতে পারেন ইমরান খান। মনে করা হচ্ছে, গ্রেফতারি এড়াতেই তিনি সংসদে যেতে চাইছেন না।
এদিন সকালেই পাকিস্তানের জাতীয় সংসদের স্পিকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনা হয়েছিল। সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই ১০০-রও বেশি সদস্য সেই অনাস্থা প্রস্তাবে স্বাক্ষর করেছেন।
আস্থা ভোট হওয়ার আগেই ইমরানের বিদায় এক প্রকার নিশ্চিত করে দিলেন নওয়াজ় শরিফের কন্যা মারিয়াম নওয়াজ় শরিফ। এদিন সকালেই তিনি টুইট করে বলেন, “পাকিস্তানকে অভিনন্দন দুর্নীতি, মুদ্রাস্ফীতি ও সবথেকে খারাপ সরকারের হাত থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য।”
قوم کو مہنگائی، نا اہلی، نالائقی اور تاریخ کی ہر لحاظ سے بدترین حکومت سے نجات مبارک ہو ! اب اچھے دن آئیں گے انشاءاللّہ ? pic.twitter.com/JsKDQZAUkt
— Maryam Nawaz Sharif (@MaryamNSharif) April 3, 2022
পাকিস্তানের আস্থা ভোটে সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য় প্রয়োজন ১৭২টি ভোটের। বিরোধীদের দাবি, তাদের কাছে ১৭৪ জনের সমর্থন রয়েছে।
আস্থা ভোটের আগেই বিস্ফোরক দাবি করলেন পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ মন্ত্রী শেখ আহমেদ। একটি সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি দাবি করেন যে, আস্থা ভোটের পরই গ্রেফতার হতে পারেন ইমরান খান। ইস্তফা দিতে পারেন ১৫০ জনেরও বেশি সদস্য।
শুধু ইমরান খানই নয়, এবার পাক সংসদের স্পিকার আসাদ কোয়াসেরের বিরুদ্ধেও অনাস্থা প্রস্তাব আনল বিরোধী দলগুলি।
আস্থাভোট ঘিরে উত্তেজনা ছড়াতে পারে গোটা দেশে, এই আশঙ্কাতেই সকাল থেকে কড়া নিরাপত্তায় ঘিরে ফেলা হয়েছে পাকিস্তানের জাতীয় সংসদ।
Islamabad | Security personnel deployed near Pakistan's National Assembly, as Prime Minister Imran Khan is set to face the no-confidence vote today
Section 144 is imposed in Islamabad pic.twitter.com/AvPuJTChft
— ANI (@ANI) April 3, 2022
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর ভাগ্য নির্ধারণের আগেই টানটান উত্তেজনা ইসলামাবাদে। শান্তি বজায় রাখতে সকাল থেকেই ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে ইসলামাবাদে।
৩৪২ সদস্যের সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনের জন্য ইমরান খানের প্রয়োজন ১৭২টি ভোট। তবে সূত্রের খবর, কেবল বিরোধীরাই নয়, তার দলের একাধিক সদস্যও অনাস্থা প্রস্তাবে ইমরানের বিরুদ্ধেই ভোট দিতে পারেন।
আজই পাকিস্তানের জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে পেশ করা অনাস্থা ভোটের প্রেক্ষিতে ভোটাভুটি হবে। দুপুর ১২টায় শুরু হবে অধিবেশন। সেখানে অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে আলোচনার পর ভোটগ্রহণ করা হবে।